পুরুলিয়া শহরের দুলমিতে নেতাজি স্কুলের রাস্তায় বিসর্জনের উল্লাস। বুধবার রাতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
বারো—আঠারো—ছাব্বিশ। কালীপুজোর বিসর্জনে কে কতগুলি সাউন্ডবক্স বাজাতে পারে তার প্রতিযোগিতাই যেন চলল পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায়। আর সেই উৎপাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হল শহরবাসীর।
বুধ এবং বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া, আদ্রা এবং রঘুনাথপুরে এই ছবি দেখা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, আইনরক্ষকদের সামনেই চলেছে বেপরোয়া আইন ভাঙা। মোতায়েন পুলিশকর্মীরা শুধু বিসর্জনের সময় ভিড় সামলেছেন। সাউন্ডবক্সের দাপটের সামনে তাঁরা রা কাড়েননি।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রুপেশ কুমার বলেন, ‘‘কালীপুজোর আগে থানায় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে সাউন্ডবক্স বাজানো সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা রয়েছে, সেটা স্পষ্ট বলা হয়। যাঁরা আইন ভেঙেছেন আমরা তাঁদের চিহ্নিত করছি।’’ নির্দেশিকা অমান্য করা পুজো কমিটিগুলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘জোর খাটিয়ে এই সমস্যা রাতারাতি বন্ধ করা কার্যত অসম্ভব। পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে ঠিকই, কিন্তু পুজোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে সচতেনতা তৈরি হওয়াটা সবচেয়ে জরুরি।”
কালীপুজোয় শব্দবাজি উপদ্রব রুখে জেলাবাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছিল পুলিশ। দীপাবলির রাতে শব্দবাজি ফাটলেও উপদ্রব খুব একটাও বেশি ছিল না বলে দাবি করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের আশা ছিল, বিসর্জনেও সাউন্ডবক্সে লাগাম পরাতে সফল হবে পুলিশ। কিন্তু যথাকালে দেখা গিয়েছে উল্টো ছবি। বুধবার পুরুলিয়া এবং আদ্রার কয়েকটি পুজোর বিসর্জন হয়। ওই দিনই সাউন্ডবক্স বাজানোর বহর দেখে আঁচ করা গিয়েছিল বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক কী হতে চলেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রেলশহর আদ্রায় একের পর এক পুজোর বিসর্জন শুরু হয়। অভিযোগ, এলাকার বড় পুজোগুলির সাউন্ডবক্সের আওয়াজে আদ্রার বাজার প্রায় কেঁপে উঠেছিল। গোটা দশেক পুজোর বিসর্জনের ধুমে এলাকার রাস্তা দিয়ে চলাচল করা রীতিমতো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। শহরের প্রবীণ বাসিন্দাদের আক্ষেপ, অতীতে বিসর্জনের এই সংস্কৃতি ছিল না আদ্রায়। নব্বইয়ের দশক থেকে এর সূত্রপাত। তার পরে বছর বছর শব্দের মাত্রা বাড়ছে।
অন্যদিকে, পুরুলিয়া শহরের ছবিটাও প্রায় এক। বুধ ও বৃহস্পতি বার মিলিয়ে গোটা কুড়ি পুজোর বিসর্জন হয়েছে জেলাসদরে। এলাকার বড় কয়েকটি পুজোও সাউন্ডবক্স নিয়ে পথে নেমেছিল বলে অভিযোগ।
তবে অন্য ছবিও রয়েছে। সেই নজিরেই আশার আলো দেখছে পুলিশ। জেলা পুলিশের কর্তাদের একাংশের দাবি, কিছুটা হলেও পুজো কমিটিগুলির মধ্যে শব্দবিধি সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। পুরুলিয়া শহরের ‘ফাইট ফর পুরুলিয়া’ নামের একটি পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় কোনও সাউন্ডবক্স বা মাইক রাখেনি। সাউন্ডবক্স বাজানোর সিদ্ধান্ত থেকে শেষ মুহূর্তে সরে আসে কাশীপুরের একটি পুজো কমিটিও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিসর্জনের আগে কমিটির কিছু সদস্য সাউন্ডবক্স বাজানোর বিরোধিতা করেন। তাঁদের কথায় রাজি হয়ে বাকি সদস্যরাও এই সিদ্ধান্ত নেন। কাশীপুর ব্লক সদরের ওই পুজো কমিটির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘আগে বিসর্জনের সময়ে মাইকের আওয়াজে এক জন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই কথা মাথায় রেখে এ বারে আমরা সাউন্ডবক্স বাজাইনি। সমস্ত সদস্যই এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছেন।’’
কৃষি নিয়ে সভা। জমির চরিত্র, মাটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা-সহ চাষাবাদের নানা বিষয় নিয়ে সভা হল জেলা পরিষদে। বুদবুদ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র আয়োজিত ওই সভায় চাষিরা সরাসরি প্রশ্ন করেন। ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু, উপ কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান কৃষি কলেজের অ্যাসোসিয়েট ডিন সঞ্জয়কুমার দত্ত রায় প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy