মহারাজের সঙ্গে দেখা করা তাঁর স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্ন আগেই পূরণ করেছেন স্বয়ং মহারাজ। শুধু দেখা করাই নয়, একনিষ্ঠ সেই ভক্তের সঙ্গে তৈরি হয়েছে যোগাযোগও। এ বার বাঁকুড়া সফরে গিয়ে সেই ভক্তের অনুরোধে রুট বদলে সটান বিষ্ণুপুরে হাজির হলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রায় ২০ মিনিট কনভয় থামিয়ে অপেক্ষার পর ভক্তের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে কলকাতার পথ ধরলেন সৌরভ।

বাঁকুড়া সফরে গিয়ে ভক্তের অনুরোধে রুট বদলে সটান বিষ্ণুপুরে হাজির হন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
ছোট থেকেই সৌরভের অন্ধভক্ত বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের ভগৎ সিংহ মোড় এলাকার বাসিন্দা মানস চট্টোপাধ্যায়। স্বপ্ন ছিল দাদার সঙ্গে একটি বারের জন্যে হলেও দেখা করবেন। তার জন্য কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি মানসকে। কলকাতায় গিয়ে দিনের পর দিন পড়ে থেকেও হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। অবশেষে তাঁর কথা শুনে স্বয়ং সৌরভই দেখা করেছিলেন তাঁর সঙ্গে। এর পর থেকে দাদার সঙ্গে রীতিমত ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে মানসের। সূত্রের খবর, হাজার ব্যস্ততার মাঝেও মানসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখেন সৌরভ। রবিবার বিকেলে বাঁকুড়ার তামলিবাঁধ ময়দানে এমপি কাপ উদ্বোধনে হাজির হন সৌরভ। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দাদার সঙ্গে দেখা করেন মানস। অনুষ্ঠানের ফাঁকে দাদার কাছে মা-বাবার সঙ্গে দেখা করার আবদার করে বসেছিলেন মানস। ভক্তের আবদার ফেরাতে পারেননি মহারাজ। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শেষে মানসকে সঙ্গে নিয়ে রুট বদলে সৌরভ সটান হাজির হন বিষ্ণুপুরে। সংকীর্ণ রাস্তার কারণে মানসের বাড়ি না গেলেও তাঁর মা-বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য সৌরভের কনভয় প্রায় ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে ভগৎ সিংহ মোড়ে। এর পর মানস মা-বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে দাদার সঙ্গে দেখা করান। সৌরভ নিজের গাড়ি থেকে না নামলেও মানসের মা-বাবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। মানসের মা-বাবাও সৌরভকে বাড়ি যাওয়ার অনুরোধ করলে সৌরভ প্রতিশ্রুতিও দেন, পরে কখনও সময় পেলে তিনি নিশ্চয়ই আসবেন। পরে আরামবাগ হয়ে কলকাতার দিকে রওনা দেয় সৌরভের কনভয়।
মানস বলেন, ‘‘দাদা ভীষণ বড় মনের মানুষ বলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। আমি কোনও দিন কল্পনাতেও ভাবিনি এমন সুযোগ কখনও আসবে। তিনি আমাকে যে এতটা ভালবাসেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ দাদার কাছে।’’ মানসের বাবা নিতাই চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এত বড় মাপের একজন মানুষ কোনও দিন আমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্যে রুট বদল করে বিষ্ণুপুরে আসবেন, তা ভাবতেই পারছি না। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা তাঁকে মিষ্টিমুখ করার কথা বললাম। কিন্তু রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে তিনি বাড়িতে আসতে পারেননি।’’