E-Paper

কার ভাগ্যে ছিড়বে শিঁকে, চার নামে জল্পনা

জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, তৃণমূলে বরাবরই নানা সমীকরণ কাজ করে। বিশেষ করে সভাধিপতি পদে কে বসবেন, তা নিয়ে দলের রাজ্য তথা শীর্ষ নেতৃত্বের মতামত বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৪৭
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রাথমিক ভাবে শোনা যাচ্ছিল ন’জনের নাম। ক্রমে তা কমে দাঁড়িয়েছে চারে। এঁদের মধ্যে কে শেষমেষ জেলা পরিষদের সভাধিপতির কুর্সিতে বসবেন, তা নিয়ে রবিবার দিনভর চর্চা চলল তৃণমূলের অন্দরে।

আজ, সোমবার জেলাপরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি নির্বাচন। সংরক্ষণের গেরোয় সভাধিপতি পদটি এ বারে মহিলা (ওবিসি)-দের জন্য সংরক্ষিত। প্রথম দিকে সভাধিপতির দৌড়ে ছিলেন অনেকেই। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে, ঝাড়াই-বাছাই পর্বে ও জেলার তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে বেশ কয়েক জনের নাম বাদ পড়েছে। সূত্রের খবর, জোর চর্চা চলছে বরাবাজার থেকে জয়ী এক প্রার্থীকে নিয়ে। তিনি অতীতে জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। দল পরিচালনার সমীকরণেই সেই সদস্যের প্রতি সমর্থন রয়েছে দলের প্রথম সারির এক অত্যন্ত ‘প্রভাবশালী’ নেতার। আলোচনায় রয়েছে নিতুড়িয়া ব্লক থেকে জয়ী, তৃণমূলের শাখা সংগঠন, ‘বঙ্গজননী শাখা’র এক নেত্রী, পুরুলিয়া ১ ব্লক থেকে জয়ী গত দশ বছর জেলা পরিষদের সদস্য থাকা এক সদস্য ও ঝালদা ১ ব্লকের আর এক নেত্রীর নামও।

ঘটনা হল, জেলাপরিষদের সভাধিপতি জেলা প্রশাসনের অন্যতম শীর্ষ পদ। জেলার উন্নয়নে প্রশাসনের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখার গুরুদায়িত্ব তাঁর উপরেই বর্তায়। সে প্রেক্ষিতে তৃণমূলের জেলার প্রথম সারির নেতারা নিজস্ব ছকে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন, নিজের পছন্দসই সদস্যকে ওই পদে বসাতে। সূত্রের খবর, সেই নিরিখে উঠে আসছে পুরুলিয়া ১ ব্লকের দশ বছরের জেলা পরিষদের ওই সদস্যের নাম। প্রথমত, জেলাপরিষদের সদস্য হওয়ায় পরিষদের কাজকর্ম সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট ধারণা আছে। দ্বিতীয়ত, তাঁর পেছনে আছে জেলার প্রথম সারির এক নেতার ‘প্রত্যক্ষ’ সমর্থন। পাশাপাশি, জেলায় দলের নিজস্ব সমীকরণে ওই প্রার্থীকে সমর্থন জানাচ্ছেন জেলার আর এক গুরুত্বপূর্ণ প্রথম সারির নেতাও, খবর দলের সূত্রের।

তবে জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, তৃণমূলে বরাবরই নানা সমীকরণ কাজ করে। বিশেষ করে সভাধিপতি পদে কে বসবেন, তা নিয়ে দলের রাজ্য তথা শীর্ষ নেতৃত্বের মতামত বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। সেই নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন নিতুড়িয়া ব্লকের ‘বঙ্গজননী শাখা’র ওই নেত্রী। ঘটনাচক্রে তিনি দলের প্রথম সারির এক নেতার আত্মীয়াও।
দলের অন্দরে জল্পনা, ওই নেতাকে দলে কার্যত ‘পুর্নবাসন’ দেওয়ার
উদ্দেশ্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই তাঁর আত্মীয়াকে জেলাপরিষদের প্রার্থী করা হয়েছিল। এ দিকে, বরাবর কংগ্রেসের ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসাবে পরিচিত ঝালদা ১ ব্লকে এ বারে ভাল ফল করেছে দল। সেই যুক্তিতে দলের এক বিধায়ক চাইছেন, ঝালদায় দলের আরও শ্রীবৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এলাকা থেকে কাউকে সভাধিপতি করা হোক।

এর সঙ্গে, সহ-সভাধিপতি কে হবেন, তা নিয়ে চর্চাতেও খামতি নেই। এ ক্ষেত্রে উঠে আসছে, জেলার প্রথম সারির দুই নেতার নাম। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, সহ-সভাধিপতি পদে হবেন, তা অনেকাংশে নির্ভর করছে সভাধিপতি কে হচ্ছেন, তার উপরে। প্রথমত, কুড়মি সম্প্রদায় থেকে কেউ
সভাধিপতি হলে, সাধারণ সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিকে সহ-সভাধিপতি করা হতে পারে। আর তা না হলে ওই পদে বসতে পারেন কোনও মাহাতো নেতা। তবে এই সব ‘তত্ত্ব’কে মানতে নারাজ তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “গুজব বা জল্পনার কোনও জায়গা নেই। সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি কারা হবেন, তা পুরোপুরি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের উপরে নির্ভরশীল।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia Zila Parishad

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy