E-Paper

কেন গ্রুপ-ত্যাগ সুদীপ্তের, চর্চা দলের অন্দরে

দলের অন্দরের খবর, দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত খয়রাশোলের সাংগঠনিক অবস্থা শোচনীয়। সেটা আরও প্রকট হয়েছে খয়রাশোলের ‘পর্যবক্ষক’ পদ থেকে সুদীপ্ত ঘোষকে সরানোর পরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৩ ০৮:৫৬
চর্চা চলছে তা নিয়েই। নিজস্ব চিত্র

চর্চা চলছে তা নিয়েই। নিজস্ব চিত্র

অনুব্রত-হীন বীরভূমে দল পরিচালনার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী তৈরি করে দিয়েছেন কোর কমিটি। সেই কমিটিতেও কি দ্বন্দ্বের ছায়া? সদ্য কোর কমিটিতে জায়গা পাওয়া জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত ঘোষ দলের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় পরেই বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, দলের কোর কমিটির নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। এ ছাড়াও জেলা কমিটির, জেলা যুব তৃণমূল, দুবরাজপুর বিধানসভা এবং খয়রাশোল তৃণমূল কংগ্রেস-সহ একাধিক গ্রুপ রয়েছে। যার মাধ্যমে তথ্য, মতামত, নির্দেশের আদান প্রদান হত। বুধবার পর্যন্ত প্রতিটি গ্রুপ থেকেই সুদীপ্ত নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন বলে খবর। এই নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু না-বললেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, কোর কমটির এক সদস্যের সঙ্গে বাদানুবাদের জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুদীপ্ত।

ফোন বন্ধ থাকায় সুদীপ্তের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, তাঁর এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্যে খয়রাশোলের পর্যবেক্ষক পদ খোয়ানো থাকতে পারে বলে খবর। সুদীপ্তের গ্রুপ-ত্যাগ প্রসঙ্গে জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আপনাদের মুখেই শুনছি। এমন কিছু হয়ে থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে।’’

দলের অন্দরের খবর, দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত খয়রাশোলের সাংগঠনিক অবস্থা শোচনীয়। সেটা আরও প্রকট হয়েছে খয়রাশোলের ‘পর্যবক্ষক’ পদ থেকে সুদীপ্ত ঘোষকে সরানোর পরে। গত ২৪ তারিখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বীরভূমের জেলা নেতাদের বৈঠক ছিল কালীঘাটে। সেখানে খয়রাশোল ব্লকের প্রসঙ্গ আসতেই ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী দলনেত্রীকে জানান, পর্যবেক্ষক হিসাবে সুদীপ্তের জন্য তাঁর স্বাধীন ভাবে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। এর পরেই সুদীপ্তকে পদ থেকে সরিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু, তাঁকে জেলা কোর কমিটিতে নিয়ে আসেন।

কিন্তু বিষয়টি সেখানেই মিটে যায়নি। ওই ঘটনার পরই খয়রাশোলের ১০টি অঞ্চলের মধ্যে সাতটি অঞ্চলের সভাপতি ব্লক সভাপতির মতের বিরুদ্ধে গিয়ে সুদীপ্তকে পর্যবেক্ষক রাখার আর্জি জানিয়ে সুব্রত বক্সীকে চিঠি দেন। সুদীপ্ত নিজে কোর কমিটিতে স্থান পাওয়ার পরেও ব্লক সভাপতির সঙ্গে তাঁর ‘সংঘাত’ জারি ছিল বলে দল সূত্রেই জানা যাচ্ছে। সুদীপ্ত দাবি করেছিলেন, তাঁর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে যদি তাঁকে খয়রাশোলে ডাকা হয়, তিনি যাবেন। যদিও বিকাশ স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই শেষ কথা। সেটা সকলকেই মানতে হবে। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলনেত্রীর নির্দেশের পরেও সুদীপ্তের এমন অবস্থান কোর কমিটির এক সদস্যের পছন্দ হয়নি। সেটা নিয়ে মতান্তর হয় দু’জনের। এর পরেই জেলা তৃণমূলের একাধিক গ্রুপের পাশাপাশিবুধবার খয়রাশোলের গ্রুপ থেকেও সুদীপ্ত বেরিয়ে যান।

জেলা তৃণমূলের এক নেতা মনে করাচ্ছেন, কোর কমিটিতে স্থান পাওয়ার আগে গত ১৮ মার্চ সুদীপ্ত ঘোষের করা একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে দলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। সেখানে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ ওই নেতা লিখেছিলেন, ‘জেলা কোর কমিটি বলে কিছু নেই। কোর কমিটি হচ্ছে, আমি তৃণমূল কংগ্রেস নাকি আমি ধান্দাবাজ।’ সূত্রের খবর, পরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ৯ জনের কোর কমিটিতে স্থান দিলেও উপযুক্ত মর্যাদা পাচ্ছেন না বলে চাপা ক্ষোভ ছিল সুদীপ্তের। গ্রুপ থেকে সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে সেটাও থাকতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suri TMC Internal clash

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy