Advertisement
E-Paper

স্কুল না খোলায় ‘ক্লাস’ শুরু গ্রামেই

সোমবার থেকে এলাকারই কিছু যুবক-যুবতীর উদ্যোগে নিখরচার ‘আমাদের স্কুল’ চালু হয়েছে।

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৩৬
চলছে পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র

চলছে পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র

গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে দুর্গামেলা প্রাঙ্গণে স্কুল পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়া শুরু হল বাঁকুড়ার রানিবাঁধের মল্লিকডাঙায়। সোমবার থেকে এলাকারই কিছু যুবক-যুবতীর উদ্যোগে নিখরচার ‘আমাদের স্কুল’ চালু হয়েছে। তাঁদের দাবি, হাটবাজার খুলে গিয়ে পুরোদমে চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি। এ দিকে, স্কুল বন্ধ থাকায় বঞ্চিত হচ্ছে প্রান্তিক এলাকার পড়ুয়ারা। তাই এমন উদ্যোগ। তবে মহকুমাশাসক (খাতড়া) রবি রঞ্জন বলেন, ‘‘জমায়েত করে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ক্লাস করানোর খবর জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি। সে রকম হলে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সমবেত প্রার্থনা সঙ্গীত গেয়ে এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ মল্লিকডাঙা গ্রামের দুর্গামেলা প্রাঙ্গণে শুরু হয় পড়াশোনা। এই উদ্যোগে শামিল রয়েছেন গ্রামের কুড়ি-বাইশ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক জন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক। বাকিরা যুবক-যুবতী। তিন-চার জন গৃহশিক্ষকতা করেন। অন্যেরা চাকরির চেষ্টা করছেন। এ দিন দুর্গামেলায় টাঙানো ব্যানারে লেখা ছিল ‘আমাদের স্কুলে আমরা পড়াই, আমাদের স্কুলে আমরা পড়ি’।

উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন, মল্লিকডাঙা, বারগ্রাম, বিরতি, বালিখুন-সহ পাঁচ-ছ’টি গ্রাম থেকে দেড়শোরও বেশি পড়ুয়া এসেছিল পড়তে। প্রত্যেককে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত সাফ করিয়ে মাস্ক দেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের অনেককেই মাস্ক ছাড়া দেখা গিয়েছে। উদ্যোক্তাদের যদিও দাবি, প্রয়োজনীয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়েছিল।
ওই যুবক-যুবতীদের মধ্যে মধুসূদন মাহাতো ও রোহিনী মাহাতো বলেন, ‘‘পড়াশোনার ব্যাপারে অভিভাবকদের একাংশ মোটেই সচেতন নন। টিউশন দেওয়ার ক্ষমতাও নেই তাঁদের। তাই স্কুল বন্ধ থাকায় ছেলেমেয়েরা সারা দিন খেলে কাটিয়ে দিচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, স্কুল খোলার আগে পর্যন্ত এ ভাবে পড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। রোজ বেলা ১০টা থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত ক্লাস হবে।

মল্লিকডাঙা গ্রামের তাপুরমণি মান্ডি ও জ্যোৎস্না রাজোয়াড় দিনমজুরি করে সংসার চালান। তাঁদের ছেলেরা এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। টাকার অভাবে গৃহশিক্ষকের কাছে পাঠাতে পারেননি। তাঁরা বলেন, ‘‘গ্রামের ছেলেমেয়েরা পড়ানোর ব্যবস্থা করায় খুব ভাল হয়েছে। কিছু হলেও তো শিখতে পারবে।’’ পড়তে আসা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী অনিন্দিতা মাহাতো ও দশম শ্রেণির রূপালি মাহাতো বলে, ‘‘টিউশন নেওয়ার ক্ষমতা নেই। স্কুল বন্ধ। বাড়িতে পড়া বুঝতে না পারলে কিছু করার থাকে না। এতে অনেক উপকার হল।’’

খাতড়া মহকুমার সহকারি স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অনিমেষ শতপথী বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। সরকারি নির্দেশে সরকারি-বেসরকারি সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তাই জমায়েত করে এ ভাবে কেউ বা কারা ক্লাস করাতে পারেন না। বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

Education bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy