Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Ex minister

প্রাক্তন মন্ত্রীর আত্মসমর্পণ

মামলাটি সিআইডি দেখছে। সিআইডির একটি সূত্রের খবর, সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকা তিন জন ইতিপূর্বে আগাম জামিন নিয়েছেন। ১৯৫৪ সালে ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’ প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন ধরে তা বন্ধ।

 বিষ্ণুপুর আদালতে শ্যাম মুখোপাধ্যায়। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

বিষ্ণুপুর আদালতে শ্যাম মুখোপাধ্যায়। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
 বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪০
Share: Save:

কেন্দ্রীয় সরকারের খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রিজ় কমিশনের দায়ের করা চার বছর আগের মামলায় শনিবার বিষ্ণুপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায়। আদালত তাঁকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে।

সরকার পক্ষের আইনজীবী মনোদীপ্ত চৌধুরী বলেন, “২০১৬ সালে খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রিজ় কমিশন বিষ্ণুপুরের ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’-এর পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেন। শ্যামবাবু কোনও এক সময়ে ওই কমিটিতে ছিলেন। শ্যামবাবুর নাম এফআইআর-এ না থাকলেও তিনি আগাম জামিন চেয়ে বাঁকুড়া আদালতের জেলা বিচারকের কাছে আবেদন করেছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে নিম্ন আদালতে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে জন্য তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।’’ তিনি জানান, বিষ্ণুপুর আদালত শর্তসাপেক্ষে ১০ হাজার টাকার বন্ডে শ্যামবাবুকে জামিন দিয়েছে। শর্তগুলি হল: পাসপোর্ট থাকলে জমা রাখতে হবে আদালতে, আদালতের অনুমতি ছাড়া, রাজ্যের বাইরে যাওয়া যাবে না, তদন্তকারী দল ডাকলে, তিনি যেতে বাধ্য থাকবেন।

বিষ্ণুপুরের বর্তমান পুরপ্রশাসক শ্যামবাবু ২০১১ সালে কয়েকটি দফতরের মন্ত্রিত্ব সামলেছেন। জামিনের পরে তিনি দাবি করেন, ‘‘আমার সময়ে ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’-এ যা কিছু লেনদেন হয়েছে সবই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। কাজেই আর্থিক তছরুপের কোনও প্রশ্নই নেই। এফআইআরএ আমার নামও নেই।’’ তা হলে আত্মসমর্পণ কেন করলেন? শ্যামবাবুর দাবি, ‘‘রাজনীতি করি। তাই বিরোধীদের শিকার যাতে না হতে হয়, সে জন্য আগাম জামিনের আবেদন করেছিলাম। আদালতের নির্দেশ মতো আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলাম।’’

পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রিজ় কমিশনের কলকাতা অফিসের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর বিষ্ণুপুর থানায় অভিযোগে জানিয়েছিলেন, তাঁরা বিষ্ণুপুরের ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’-কে দীর্ঘদিন আগে বেশ কয়েক কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। কিন্তু তা ফেরানো হয়নি। উল্টে খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রিজ়কে না জানিয়েই ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’ তাদের তিনটি শোরুম বিক্রি করে দেয়। কমিশনকে ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’ কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যাঙ্কের লেনদেন সংক্রান্ত নথিও দেখতে দেয়নি বলে অভিযোগ। কমিশনের আরও অভিযোগ, ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’ তাদের কর্মীদের ইপিএফ বাবদ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকাও জমা করেনি। এফআইআর-এ অভিযুক্তদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে শ্যামবাবুর আইনজীবী কুণালকান্তি ঘোষের দাবি, ‘‘যে সময়ের ঘটনা, তখন আমার মক্কেল সিল্ক খাদি কমিটির মধ্যে ছিলেন না।’’

বিষ্ণুপুর থানা জানিয়েছে, মামলাটি সিআইডি দেখছে। সিআইডির একটি সূত্রের খবর, সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকা তিন জন ইতিপূর্বে আগাম জামিন নিয়েছেন। ১৯৫৪ সালে ‘সিল্ক খাদি সেবা মণ্ডল’ প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন ধরে তা বন্ধ। তারা তদন্ত করে শেষ ১০ বছরের রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ex minister Surrender
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE