সদর হাসপাতালে গুলিতে জখম কলেজ ছাত্রী কুসুম ওরফে টুনি খাতুন। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্কুটি চেপে বাড়ি ফিরছিলেন দুই বোন। অন্ধকার ফুঁড়ে এসে কেউ এক বোনের মাথায় সটান চালিয়ে দিল গুলি। দিনভর লড়াইয়ের পরে মৃত্যু হল তাঁর। বৃহস্পতিবার ভরসন্ধ্যায় বীরভূমের সদর শহর সিউড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গুলিতে জখম কলেজ ছাত্রী কুসুম ওরফে টুনি খাতুনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর অস্ত্রোপচারও করা হয়। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি।
নিহত ছাত্রী সিউড়ি শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরপাড়ার বাসিন্দা। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ রেশন কার্ড সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর বিদ্যাসাগর সাউয়ের বাড়ি থেকে শাবানা বিবি ও তাঁর বোন কুসুম বাড়ি ফিরছিলেন। স্কুটি চালাচ্ছিলেন শাবানা। ফেরার সময়ে একটি চালকলের পিছনের রাস্তায় গুলি চালানোর ঘটনাটি ঘটে। মাথায় গুলি লেগে স্কুটি থেকে ছিটকে পড়েন সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী, বছর উনিশের কুসুম। স্থানীয় বাসিন্দারাই ছুটে এসে কুসুমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ না হলেও পরিবারের অভিযোগের তির, শাবানার স্বামীর দিকে। শাবানার বাবা শেখ আলাউদ্দিন বলেন, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরেই বড় মেয়ের সঙ্গে জামাইয়ের বনিবনা হচ্ছিল না। অশান্তি চরমে উঠেছিল। এ দিন যখন দু’বোন বাড়ি ফিরছিল, তখনই গুলি চলল। আমার মেয়েদের তো কোনও শত্রু নেই। জামাই এই কাজের পিছনে রয়েছে বলে আমাদের ধারণা।’’ পরিবারের আরও সন্দেহ, গুলির লক্ষ্য ছিলেন শাবানাই। কোনও ভাবে তা কুসুমের মাথায় লাগে। একই দাবি শাবানারও। প্রাথমিক ভাবে পুলিশেরও সন্দেহ, পারিবারিক বিবাদের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। মৌখিক ভাবে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।
ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শাবানার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রামপুরহাটের বাসিন্দা এক যুবকের। অধিকাংশ সময় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন পেশায় টোটো চালক ওই যুবক। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। একটি ধর্ষণের মামলায় মাস আটেক জেল খেটে আসার পর স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ চরমে উঠে। শাবানা চলে আসেন বাপের বাড়িতে। সেই বিবাদের জেরেই গুলি চলল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy