আদালতে সুভাষ। নিজস্ব চিত্র
ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল বুধবার, পুরুলিয়া আদালতে। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (তৃতীয় আদালত) অনির্বাণ দাসের এজলাসে এ দিন সাক্ষ্য দেন অভিযোগকারী সুভাষ গরাই। এ দিন প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব চলে। পরে সুভাষ শুধু বলেন, ‘‘আমি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছি।’’
গত ১৩ মার্চ বিকেলে হাঁটতে বেড়িয়ে ঝালদা-বাঘমুণ্ডি রোডে গোকুলনগরের কাছে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। তপনের সঙ্গে যাঁরা সে দিন সান্ধ্যভ্রমণে বেরিয়েছিলেন, তাঁদের অন্যতম এবং এই ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী ঝালদার বাসিন্দা সুভাষ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। পরে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে জেলা পুলিশ। পরবর্তীকালে হাই কোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই।
১১ অগস্ট এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে সিবিআই-এর আইনজীবী আদালতে গরহাজির থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে যায়। সিবিআইয়ের তরফে এই মামলায় শুনানিতে কোন আইনজীবী অংশ নেবেন, তা ইতিমধ্যে তদন্তকারীদের তরফে আদালতকে জানানো হয়।
এই মামলায় ধৃত নিহতের দাদা নরেন কান্দু, তাঁর ছেলে দীপক কান্দু, কলেবর সিংহ, মহম্মদ আশিক খান ও সত্যবান পরামাণিককে এ দিন আদালতে হাজির করানো হয়। প্রথম চার জনকে গ্রেফতার করেছিল সিট। পরে সত্যবানকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
এ দিন পুরুলিয়া আদালতে হাজির ছিলেন ধৃত নরেনের স্ত্রী বাবি কান্দু। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আমার স্বামী-ছেলে নির্দোষ। ওঁদের বিরুদ্ধে কী প্রমাণ পেয়েছে, সিবিআই তা দেখাক। আমি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি বলে প্রতিশোধ নিতে কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতো এটা করিয়েছেন।’’ তাঁর ছেলে দীপ কান্দুর দাবি, বিনা প্রমাণে পুলিশ আটকে রেখেছে।
এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন তপনের আর এক ভাইপো মিঠুন কান্দু। তিনিই এই হত্যাকাণ্ডের পরে ঝালদা থানার এক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে তপনকে তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। অভিযোগের স্বপক্ষে একাধিক অডিয়ো ক্লিপ (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) প্রকাশ্যে আনেন তিনি। মিঠুন এ দিন বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের তদন্তের উপরে আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমরা সুবিচার পাব।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘আমার কথায় নয়, হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। তাঁদের গ্রেফতার করেছিল জেলা পুলিশের সিট। ধৃতদের একজন বলেছিলেন, এই ঘটনার সঙ্গে বড় মাথা যুক্ত রয়েছে। কে সেই বড় মাথা, ধৃতেরা প্রকাশ্যে আনুক। মানুষ তা জানতে চাইছেন।’’ আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই মামলায় মোট ৭১ জনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা। অভিযুক্তদের আইনজীবী নন্দলাল সিংহানিয়া জানান, মামলার পরবর্তী শুনানি ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy