বেড়ো গ্রামে এই পাহাড় আর জলাশয়ের টানে আসতে পারে পর্যটক। —পৌলমী চক্রবর্তী।
• বেড়ো গ্রামে পাহাড়, জলাশয় সবই রয়েছে। শতাব্দী প্রাচীন খালাই চণ্ডীর মেলা বসে। এই সমস্ত কাজে লাগিয়ে এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ার কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি?
বিশ্বজিৎ সেন, বেড়ো
সভাপতি: পর্যটন কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে নিয়ে পাহাড় লাগোয়া এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রায় দুই একর সরকারি জমি পাওয়া গিয়েছে। বিশদ রিপোর্ট তৈরি চলছে। কিন্তু এই কাজের জন্য পর্যাপ্ত টাকা পঞ্চায়েত সমিতির নেই। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে তার বন্দোবস্ত করার চেষ্টা চলছে। ওখানে একটা পার্কও তৈরি করতে চাই আমরা।
• নতুনডি থেকে দুরমুট গ্রাম হয়ে রায়বাঁধ যাওয়ার রাস্তাটি দীর্ঘদিন বেহাল। ডিভিসির তাপবিদ্যুত কেন্দ্র তৈরির প্রথম দিকে এই রাস্তা দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল করায় এই দশা হয়েছে। নতুনডি, জোরাডি, বাথান, নবগ্রাম, নিলডি, প্রতাপপুর-সহ আট-দশটি গ্রামের বাসিন্দারা মহকুমাসদর রঘুনাথপুরে যাওয়ার জন্য এই রাস্তা ব্যবহার করেন। অনেকবার পঞ্চায়েত সমিতিকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি কেন?
শ্রীলোক মাজি, নতুনডি
সভাপতি: সমস্যার কথা আমরা জানি। কিন্তু আর্থিক সমস্যার জন্য ওই রাস্তা পঞ্চায়েত সমিতি এখন রক্ষণাবেক্ষণ করে না। আমরা জেলা পরিষদকে বলেছি। জেলা পরিষদ সম্প্রতি রাস্তাটি সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। যৌথ পরিদর্শনের পরে কাজ শুরু হবে।
• গ্রামের একমাত্র অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ছোট্ট একটা ঘরে চলে। কিচেন শেড নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাচ্চাদের খাবার রান্না হয়। বর্ষাকালে কেন্দ্রের ভিতরে একসঙ্গে রান্না আর লেখাপড়া চলে। কিছু করা যায় না?
দেবব্রত শুকুল, মেটাল শহর
সভাপতি: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির টাকা থাকলেও গ্রামের মধ্যে সরকারি জমি না পাওয়ায় কিছু করা যাচ্ছে না। আমরা গ্রামবাসীদের কাছে জমির জন্য আবেদন করেছি।
• এলাকায় সরকারি নলকূপ বা কুয়ো নেই। জল প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও দীর্ঘ দিন পেরিয়েও সেখান থেকে সরবরাহে আর শুরু হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতি এ ব্যাপারে কী করছে?
গৌতম মুখোপাধ্যায়, অরবিন্দপল্লি
সভাপতি: আড়রা পঞ্চায়েত এলাকায় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর ওই প্রকল্প করছে। কাশীপুরের দ্বারকেশ্বর নদ থেকে জল তুলে সরবরাহ করা হবে। ট্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। পাইপ লাইন পাতার কাজও শুরু হয়ে এখন শেষ পর্যায়ে। মনপুরা জঙ্গলের কাছে পাইপ লাইন পাতার কাজে কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার জানিয়েছিল। আমরা ব্যাপারটা নিয়ে দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। আশা করছি তাড়াতাড়ি জল দেওয়া যাবে।
• এলাকায় ভ্যাট, ডাস্টবিন কিচ্ছু নেই। যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। অনেকে নিকাশি নালায় আবর্জনা ফেলায় নালার মুখ বন্ধ হয়ে সমস্যা হয়। পঞ্চায়েত সমিতি কোনও পদক্ষেপ করছে কি?
দেবাশিস সরকার, অরবিন্দপল্লি
সভাপতি: সমস্যা সেই জমি। নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ডাস্টবিন বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সেখান থেকে আবর্জনা তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। কোন তহবিল থেকে বরাদ্দ নেওয়া যেতে পারে সেই ব্যাপারে পঞ্চায়েত সমিতির সভায় আলোচনা হবে।
• ইন্দো জার্মান জল প্রকল্পের সংযোগ থাকলেও গ্রামের নিচের দিকে কয়েকটি পরিবার শুধু সেই জল পায়। নলকূপের জল পানের অযোগ্য। স্টেশনের পাশ থেকে জল বয়ে আনতে হয়। কিছু করা যায় কি?
জীব নন্দী, শাঁকা
সভাপতি: সমস্যার কথা জানতে পেরে আমরা ঠিক করেছি এ বার থেকে আগে নলকূপ বসানোর আগে জল পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু যে নলকূপগুলি বসে গিয়েছে তার কিছু করার উপায় নেই। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে শাঁকায় ইন্দো জার্মান প্রকল্পের জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য বলেছি।
• খাজুরা গ্রাম থেকে কুশার বন হয়ে মধুতটি স্কুলে প্রতিদিন অনেক পড়ুয়া যায়। সেই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। সারাইয়ের কোনও উদ্যোগ হয়েছে কি?
গোবর্ধন মাজি, খাজুরা
সভাপতি: ওই রাস্তার সমস্যাটা একটু জটিল। রাস্তাটি চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় পড়ে। কিন্তু ব্যবহার করেন খাজুরা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। চোরহাপাড়ি ওই রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি। খাজুরার পক্ষে কিছু করা সম্ভবও নয়। দু’টি পঞ্চায়েতে সঙ্গে কথা বলে দেখব কী করা যায়।
• খাজুরাতে একটি পাঠাগার এবং ব্যাঙ্ক তৈরি করা যেতে পারে কি?
দীপককুমার আচার্য, খাজুরা
সভাপতি: পাশের গ্রাম মধুতটিতে বড় পাঠাগার রয়েছে। খাজুরায় ছোট মাপের কোনও পাঠাগার তৈরি করা যায় কি না তা নিয়ে গ্রন্থাগার দফতরের সঙ্গে কথা বলে দেখব। ব্যাঙ্ক তৈরির প্রস্তাব বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের কাছে পাঠাব।
• বাবুগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে তিনটি পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা নির্ভরশীল। সেখানের দশ শয্যার ইন্ডোর বিভাগ বন্ধ। সপ্তাহে মাত্র দু’দিন একজন চিকিৎসক আসেন। ফের পুরোদমে সেটি চালু করা যেতে পারে কি?
জনার্দন সিংহদেও, বাবুগ্রাম
সভাপতি: ইনডোর চালু করার প্রস্তাব আমরা আগেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের কাছে দিয়েছি। জেলায় চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। এই কাজের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না বলে সমস্যা হচ্ছে বলে দফতর জানিয়েছে। আবার প্রস্তাব পাঠাবো।
• অনেক জেলায় পঞ্চায়েত সমিতি কৃষি বা উদ্যানপালন দফতরের সঙ্গে যৌথভাবে বিকল্প চাষের পথে যাচ্ছে। উন্নত প্রজাতির আম, লেবু, পেয়ারা বা ডালিম চাষের ক্ষেত্রে রঘুনাথপুর সম্ভবনাময়। এ ক্ষেত্রে বড় কোনও উদ্যোগ হলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে। কোনও ভাবনা-চিন্তা রয়েছে কি?
রঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায়, শিমূলকুঁদি
সভাপতি: আমরা পাঁচ জায়গায় আমের বাগান করেছি। আপনার প্রস্তাব অবশ্যই বিবেচনা করা হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও অনেকটা বড় জমি দরকার। জমির মাটিও ভাল হওয়া চাই। সেটা পাওয়া গেলে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প করা যেতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy