Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তলোয়ারে খুন বাবা,আহত ছেলে

খুনের খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি, এসডিপিও (মানবাজার ) আফজল আবরার এবং সিআই (মানবাজার) সুবীর কর্মকার কেন্দা থানায় যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ০১:৪৬
Share: Save:

সাত সকালে তলোয়ারের কোপে খুন হয়ে গেলেন এক ব্যক্তি। বংশীধর পরামানিক (৪০) নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি কেন্দা থানার হরিহরপুর গ্রামে। গুরুতর আহত হল বছর পনেরোর ছেলে প্রসেনজিৎ।

রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ বংশীবাবু ও প্রসেনজিৎ গরুরগাড়িতে সার নিয়ে জমিতে যাচ্ছিলেন। প্রসেনজিৎ পুলিশকে জানিয়েছে, সে গাড়ি চালাচ্ছিল। তাঁর বাবা হেঁটে যাচ্ছিলেন। গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে তাদের জমি। প্রসেনজিতের অভিযোগ, ‘‘কিছুটা ফাঁকা জায়গা পার হতে হঠাৎ ঝোপের আড়াল থেকে আমাদের দুই প্রতিবেশী আনন্দ মর্দন্যা এবং বিনোদ মর্দন্যা বেরিয়ে আসে। তাদের হাতে তলোয়ার এবং শাবল ছিল। হঠাৎ ওরা বাবার উপরে চড়াও হয়ে তলোয়ারের কোপ বসাতে শুরু করে। বাবা চিৎকার করে হাত ঠেকানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু খালি হাতে ওদের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। ওরা বাবাকে মাটিতে ফেলে তরোয়াল এবং শাবল দিয়ে আঘাত করতে থাকে। ওই কাণ্ড দেখে গরুগুলো গাড়ি নিয়ে ভয়ে দৌড় লাগায়। আমি ছিটকে পড়ি।’’

এরপর সে ভয়ে দৌড় লাগায়। তখন হামলাকারীদের নজর প্রসেনজিতের উপরে পড়ে। তাঁরা বংশীবাবুকে ছেড়ে তাঁর ছেলের দিকে দৌড়ে যায়। তাকে ধরেও ফেলে। শাবল দিয়ে কয়েকবার আঘাত করায় প্রসেনজিৎ যন্ত্রণায় জ্ঞান হারায়। বাসিন্দারা পরে তাকে উদ্ধার করেন। জখম প্রসেনজিৎকে প্রথমে চাকোলতোড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও পরে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে টাটায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

খুনের খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি, এসডিপিও (মানবাজার ) আফজল আবরার এবং সিআই (মানবাজার) সুবীর কর্মকার কেন্দা থানায় যান।

এসডিপিও বলেন, ‘‘জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এবং সম্প্রতি বাড়ির সামনে নলকূপ বসানো নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আদালতে তা নিয়ে মামলা হয়েছিল। গ্রেফতার হয়ে জামিনে ছিলেন ওঁরা।’’ হামলাতে বংশীবাবু ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশ অভিযুক্তদের বাড়িতে পায়নি। তাদের সন্ধান খোঁজ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বংশীবাবু আগে সিপিএম করতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। কেন্দার বাসিন্দা সিপিএমের পুঞ্চা জোনাল কমিটির সম্পাদক অনিল মাহাতো বলেন, ‘‘বংশী আগে আমাদের দল করতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। পড়শিদের সঙ্গে ওর জমিজমা নিয়ে বিবাদ ছিল। কার বাড়ির সামনে নলকূপ বসানো হবে, সম্প্রতি এই নিয়ে পড়শিদের সঙ্গে বিবাদ আরও জোরাল হয়। বিবাদ মেটাতে কয়েকবার আমিও মধ্যস্থতা করেছিলাম। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কিন্তু বিবাদের পরিণাম যে এ রকম হবে বুঝতে পারিনি।’’

অভিযুক্ত বা তাদের পরিবারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sword Murder Father Son Injured
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE