দেহের একাংশ উদ্ধারের পরে তিন দিন পেরিয়েছে। এখনও মেলেনি বীরভূমের নিহত স্কুলছাত্রীর দেহের অবশিষ্টাংশ। পুলিশ সূত্রের দাবি, ছাত্রীর দুই পা ও দুই হাত উদ্ধার করা যায়নি। তাই যে খালে ছাত্রীর দেহ মিলেছে, সেখানে ডুবুরি নামাতে শুক্রবার পুলিশকে অনুরোধ জানান এলাকার তৃণমূল বিধায়ক। পাশাপাশি, বদলানো হয়েছে ঘটনার তদন্তকারী অফিসারকেও।
পুলিশ সূত্রের খবর, পরিবারের ও গ্রামবাসীর দাবি মেনে তদন্তকারী অফিসারকে সরানো হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট এসডিপিও-কে। গ্রামবাসীর অভিযোগ ছিল, পুলিশ গোড়া থেকে ঠিক মতো তদন্ত করেনি। তারা সক্রিয় হলে অভিযুক্তকে আরও আগে ধরা যেত। ছাত্রীর দেহও আগেই পাওয়া যেত। পুলিশের দাবি, ছাত্রীকে অপহরণ ও নিখোঁজের মামলা শুরু হলেও কারও নামে অভিযোগ ছিল না। তাই ওই শিক্ষককে বেশি দিন আটক করে রাখা যায়নি। বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে পাকাপোক্ত প্রমাণ হাতে পেয়েই তাকে ধরা হয়৷ আগের তদন্তকারী অফিসারের হাত থেকে তদন্তভার এসডিপিওকে দেওয়া হয়েছে৷ বিশেষ সরকারি আইনজীবীও নিয়োগ করা হচ্ছে। দ্রুত ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আনানো হবে।’’
জেলার সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ দিন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান অনন্যা চক্রবর্তী সাংবাদিক বৈঠক করেন। সঙ্গে ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাহুল মিশ্র। তিনি জানান, খুনের দিন এবং খুনের কারণ জানতে এখনও তদন্ত চলছে। ঘটনায় এক জনই জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। অনন্যা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যাতে দ্রুত ও কঠোরতম শাস্তি পায়, সে জন্য চার্জশিট খুব শীঘ্র জমা দিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।’’ পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘শীঘ্রই চার্জশিট জমা দেব এবং কয়েক মাসের মধ্যে যাতে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ সাজা হয়, তার চেষ্টা করব।’’
ঘটনার আঁচ পড়েছে নিহত ছাত্রীর স্কুলেও। বৃহস্পতিবার স্কুলটির প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই দিন সকাল থেকেই স্কুল বন্ধ।শুক্রবার স্কুলে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষাও স্থগিত রাখা হয়। প্রধান শিক্ষক সব ঘটনা স্কুল শিক্ষা দফতর, উচ্চ মাধ্যমিক সংসদ, জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) এবং প্রশাসনের সর্ব স্তরে জানিয়েছেন।
বিধায়ক এ দিন নিহত ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। যাতে দ্রুত অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক সাজা পায়, সে আইনি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পুলিশের কাছে অনুরোধ জানান। পাশাপাশি, গ্রামবাসী তদন্তকারী অফিসারকে পরিবর্তন করার যে দাবি তুলেছিলেন, সে কথাও পুলিশ সুপারকে জানান বিধায়ক। ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরী।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)