বন্যপ্রাণ আইনে নিষেধাজ্ঞা যতই থাক। এলাকায় গিয়ে বিষধর সাপ ধরে খেলা দেখায় সাপুড়েরা। সাপ নিয়ে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা, ভীতিকে পুঁজি করে কবজ-মাদুলি বিক্রি করাই পেশা তাঁদের। মঙ্গলবার সেই কাজ করতে বীরভূমে এসে ফাঁপড়ে পড়লেন মুর্শিদাবাদের তিন সাপুড়ে। লোক ঠকানোর অভিযোগ তুলে তিন জনকে ধরে বন দফতরের হাতে তুলে দেয় সিউড়ি ২ ব্লকের রস্তানপুর গ্রামের বাসিন্দারা।
বন দফতর জানিয়েছে, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম আর্মান সাপুড়ে, কিশোর সাপুড়ে এবং জাইরুল শেখ। প্রত্যেকের বাড়ি পড়শি মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে। উদ্ধার হয়েছে দুটি জীবন্ত কেউটে সাপও। এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, ‘‘ধৃতদের বিরুদ্ধে শিকার, জীববৈচিত্র্য নষ্ট করা এবং মিলিত অপরাধের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।’’
বন দফতর ও এলাকা সূত্রে খবর, সিউড়ি ২ ব্লকের ওই গ্রামে আগেও সাপুড়েরা সাপের খেলা দেখিয়ে গিয়েছে। মোটা টাকার বিনিময়ে তাবিজ-মাদুলি বিক্রিও করেছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই সব তাবিজ, মাদুলিতে যে কিছু হওয়ার নয়, তা আমরা বুঝেছি। তা ছাড়া সাপধরা আইনত দণ্ডনীয়। এ দিন নবগ্রামের চার সাপুড়ে গ্রামে পৌঁছতেই স্থানীয়েরা আটকে রেখে খবর দেয় বন দফতরকে। লোক ঠকানোর অভিযোগ তুলে মারধরও করা হয় সাপুড়েদের। এক জন পালিয়ে গেলও ধরা পড়ে যান তিন জন। সাপ ধরা অন্যায়। তাবিজ, কবজে কাজ হয় না তা মেনে নিলেও উপস্থিত জনতা ছাড়েনি ওই সাপুড়েদের। পেটের টানেই এই পেশায়, তা-ও জানান সাপুড়েরা। কিন্তু, মন গলেনি কারও। তুলে দেওয়া হয় বন দফতরের হাতে। বন দফতরের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ভারতীয় বন্যপ্রাণ দুর্নীতি দমন শাখার সদস্য, শিক্ষক দীনবন্ধু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া সাপগুলির বিষের থলে উপড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই উদ্ধার করা সাপগুলিকে জঙ্গলে ছাড়া হলেও সেগুলি বেশি দিন বাঁচবে না।’’