কাশ্মীর-কাণ্ডের পরে তৎপরতা আরপিএফের

প্ল্যাটফর্মে বেড়েছে আরপিএফের উপস্থিতি। সন্দেহজনক মনে হলে চলছে ব্যাগ খুলে তল্লাশি। স্টেশনে থামলে ট্রেনের ভিতরে গিয়েও যাত্রীদের উপরে নজর বুলিয়ে নিচ্ছেন রেলপুলিশ বাহিনী। দূরপাল্লার ট্রেন আসার আগে প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেন থামলে ভিতরে কুকুর দিয়েও চলছে তল্লাশি। কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপরে জঙ্গি হামলার পরে কড়াকড়ি নজরে পড়ছে বাঁকুড়া স্টেশনে।

আরপিএফ সূত্রে জানা যায়, কাশ্মীরের ঘটনার পরে রেলেও কড়া সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্র। জরুরি ভিত্তিতে কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। স্টেশনে পরিদর্শনের সঙ্গে ট্রেনের ভিতরও যাত্রীদের উপরে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। সন্দেহজনক যাত্রীদের ব্যাগ পরীক্ষা, স্টেশনে কোথাও কোনও সন্দেহজনক বস্তু পড়ে আছে কি না, কড়া নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। দূরপাল্লার ট্রেনে তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে চলাচলকারী এক্সপ্রেসেও নজরদারি চলছে। ইতিমধ্যে ওই জঙ্গিদের ছবি-সহ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। স্টেশনের যাত্রীদের উপরে দূর থেকে নজরদারি ক্যামেরার মাধ্যমে দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে বাঁকুড়া স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, বাঁকুড়া আরপিএফের প্রশিক্ষিত কুকুর ‘চ্যাম্প’-কে নিয়ে স্টেশন পরিদর্শন করছেন আরপিএফ কর্মীরা। নিউ দিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস বাঁকুড়া স্টেশনে আসার বেশ কিছু আগে থেকেই কড়া নিরাপত্তা ছিল স্টেশনে। ট্রেন থামতে বিভিন্ন কামরায় কুকুরটি নিয়ে গিয়ে পরিদর্শন চলে। ট্রেনে থাকা পাপ্পু জালান ট্রেনের দরজা দিয়ে নামতে গিয়ে কুকুরের সামনে পড়ে খানিক ঘাবড়ে যান। আরপিএফ কর্মীরা তাঁকে আশ্বস্ত করেন। পাপ্পু বলেন, “ট্রেনের ভিতরে হঠাৎ কুকুর দেখে কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তবে নিরাপত্তার জন্য এটা ভীষণ জরুরি।”

আরপিএফ কর্মীদের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় স্টেশনে অবাঞ্চিত ভিড়ও কমছে বলে দাবি। যাত্রীরাও নিয়ম মেনে চলছেন। বাঁকুড়া-আসানসোল রুটের নিত্যযাত্রী উদয় চন্দ্র বলেন, “ভিড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে ঠেলাঠেলি হয়। ক’দিন আরপিএফের উপস্থিতি বেড়েছে বলে সেই সমস্যা কমেছে। কোনও কামরার দরজায় বেশি ভিড় দেখলে আরপিএফ কর্মীরা ছুটে এসে সাহায্য করছেন।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে ইউজার্স অর্গানাইজেশনের যুগ্ম সম্পাদক দেবু চক্রবর্তী বলেন, “কাশ্মীরের ঘটনার পরে থেকেই এই বদল দেখছি। স্টেশন ও ট্রেনের মধ্যে সমান ভাবে চলছে পরিদর্শন। এতে আমরাও নিরাপদ বোধ করছি।”

আরপিএফ সূত্রে খবর, মঙ্গলবারও কেন্দ্র থেকে ফের সতর্কতামূলক একটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সেখানে স্টেশনগুলিতে দিনভর ভারী সংখ্যায় আরপিএফ কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা, অচল থাকা ব্যাগপত্র পরীক্ষার যন্ত্র দ্রুত মেরামত করে চালু করা, গোপন নজরদারি ক্যামেরায় যাত্রীদের গতিবিধি পরীক্ষা করার মতো বেশ কিছু বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।