Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
তদন্তের আশ্বাস জেলা প্রশাসনের

পাট্টাদার হটিয়ে জমি অনুগামীকে, নালিশ

পাট্টাদারকে হটিয়ে নিজের অনুগামীকে জমির দখল পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। নানুরের মোহনপুর গ্রামের ঘটনা। প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে ওই গ্রামে ১৪৭৭ দাগে তিন শতক খাস জমি পাট্টা পান ভজহরি মেটে।

এই সেই জমি। নিজস্ব চিত্র

এই সেই জমি। নিজস্ব চিত্র

অর্ঘ্য ঘোষ
নানুর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

পাট্টাদারকে হটিয়ে নিজের অনুগামীকে জমির দখল পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। নানুরের মোহনপুর গ্রামের ঘটনা।

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে ওই গ্রামে ১৪৭৭ দাগে তিন শতক খাস জমি পাট্টা পান ভজহরি মেটে। পরবর্তীকালে তা সরকারি রেকর্ডভুক্তও হয়। জায়গাটি মাটি ভরাট করে বাড়ি তৈরির উপযোগী করে তোলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি তাঁকে হটিয়ে ওই জায়গার উপর ফের মাটি ফেলে এলাকায় তৃণমূলের পরিচিত মুখ সখা দাস তাঁর দুই অনুগামী শান্ত দাস এবং মাখন দাসকে দখল পাইয়ে দিয়েছেন। প্রশাসনের সকলস্তরে জানিয়েও কোনও কাজ না হওয়ায় জেলাশাসকের দারস্থ হয়েছেন ভজহরিবাবু। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলছেন, ‘‘ওই অভিযোগ এখনও হাতে পাইনি। পেলে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’

ভজহরিবাবুর দাবি, ‘‘বহু কষ্টে মাটি ভরাট করে বাড়ি তৈরির উপযোগী করে তুলেছিলাম। কিন্তু সেই জায়গা সখা দাস দাঁড়িয়ে থেকে মাটি ফেলে শান্ত এবং মাখন দাসকে দখল পাইয়ে দিয়েছে। আসলে সখা দাসের সঙ্গে গ্রামের এক কেবল অপারেটারের শত্রুতা রয়েছে। আমার ছেলে ওই কেবল অপারেটারের কাছে কাজ করে। ওকে সরে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা অস্বীকার করায় আক্রোশ মেটাতেই আমার সঙ্গে এমনটা করা হয়েছে।’’

শান্ত এবং মাখন দাস অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা ওই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নয়। অন্যদিকে কোনও পদে না থাকলেও নিজেকে এলাকার তৃণমূলের নেতা হিসাবে দাবি করে সখা দাস বলেন, ‘‘জায়গাটির দখল শ্যামাপ্রসাদ দাসকে দেওয়া হয়েছে। কারণ জায়গাটি যখন ভেস্ট হয় তখন সেটির রেকর্ডভুক্ত বর্গাদার ছিলেন শ্যামাপ্রসাদের বাবা শ্রীদাম দাস। সেই হিসাবে জায়গাটি পাট্টা পাওয়ার হকদার শ্যামাপ্রসাদ। কিন্তু তাঁকে হটিয়ে সিপিএম ভজহরিকে দখল পাইয়ে দেয়। পরবর্তীকালে সেই দখল দেখিয়েই সে পাট্টা পেয়ে যায়। তাই আমরা আসল হকদারকে দখল পাইয়ে দিয়েছি।’’

শ্যামাপ্রসাদের দাবি, ‘‘আমরা ভূমিহীন। বাবা ওই জমির বর্গাদার ছিলেন। কিন্তু সিপিএমের লোকেরা ভজহরিকে জমির দখল দেয়। পাট্টার আবেদন করেছিলাম, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’

নিয়মানুযায়ী, বর্গা থাকাকালীন কোনও জমি ভেস্ট হলে সেই জমির সর্বাধিক এক একর পর্যন্ত পাট্টা পাওয়ার কথা বর্গাদারের। তাহলে কেন শ্রীদাম দাসকে হটিয়ে ভজহরি মেটেকে জায়গার দখল দেওয়া হল- এ প্রশ্নে সিপিএমের স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন কৃষক সভার জেলা সম্পাদক আনন্দ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি না জেনে কিছু বলতে পারব না। পাট্টার সময়কাল বলছে এটা আমাদের সময়ে হয়নি। তবে যে সময়ই হোক না কেন, বৈধ পাট্টাদারকে উচ্ছেদ করাটা সব সময়ই নিন্দনীয়।’’

তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সখা দাস আমাদের কর্মী মাত্র। তার ওই কাজ দল সমর্থন করে না। ভুল করে পাট্টা হয়ে থাকলে তা সংশোধনের জন্য উপযুক্ত জায়গায় আবেদন জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Leader TMC Land Issue Nanur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE