Advertisement
E-Paper

গাছ কাটা হলে ছাড় নয় প্রধানকেও, হুঁশিয়ারি অনুব্রতের

তৃণমূলের অন্দরের খবর, মযূরেশ্বর, মরারই, নলহাটি এবং সিউড়ি ১ ব্লকে প্রচুর সংখ্যক গাছ কাটা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩০
গাছ কাটার বিরুদ্ধে দলের নেতাদের হুঁশিয়ারি অনুব্রত মণ্ডলের। —ফাইল চিত্র

গাছ কাটার বিরুদ্ধে দলের নেতাদের হুঁশিয়ারি অনুব্রত মণ্ডলের। —ফাইল চিত্র

বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য দলের কেউ টাকা চাইলে জেলে পোরার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন। এ বার পঞ্চায়েত এলাকায় গাছ কাটা বন্ধ করতে কড়া হুঁশিয়ারি দিতে হল জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে।

শুক্রবার সিউড়ির রবীন্দ্র সদনে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির বর্ধিতসভার পরে সাংবাদিকদের সামনেই অনুব্রত বলেন, ‘‘যে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গাছ কাটা হবে, সেখানে প্রধানের নামে এফআইআর করবেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। তিনি সেটা না করলে আমি সভাধিপতির বিরুদ্ধেই এফআইআর করব!’’ তৃণমূলের অন্দরের খবর, মযূরেশ্বর, মরারই, নলহাটি এবং সিউড়ি ১ ব্লকে প্রচুর সংখ্যক গাছ কাটা হয়েছে। এর সঙ্গে দলের লোকেদের যোগ রয়েছে এবং এলাকার মানুষের এই নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সেটা যাতে না বাড়ে সেই জন্যই অনুব্রত এমন হঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন দলের নেতাদের একাংশ।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে জেলায় সংগঠন গোছানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে শাসক দল। এর আগে প্রতিটি ব্লকে ব্লকে জনসভা হয়েছে। এ বার ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ব্লকে ব্লকে বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন। এ দিন সিউড়ির বর্ধিত সভা থেকে সেই প্রস্তুতিই শুরু হল। অনুব্রত মণ্ডলের সভাপতিত্বে এ দিন দুপুরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। ছিলেন জেলার দুই মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রনাথ সিংহ, সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী, সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, মলয় মুখোপাধ্যায়, জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা। কী ভাবে কর্মী সম্মেলনগুলি সফল করতে হবে, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। ১৩ তারিখ প্রথম কর্মী সম্মেলন হওয়ার কথা সিউড়ি ২ ব্লকে। ব্লকে ব্লকে জনসভার প্রথমটিও সিউড়ি ২ ব্লক থেকে শুরু হয়েছিল।

বৈঠক শেষে অনুব্রত জানান, সাংগঠনিক আলোচনা হয়েছে। ব্লকে ব্লকে বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে প্রতি বুথ থেকে ৮ জন করে কর্মী থাকবেন। তিন জন মহিলা ও পাঁচ জন পুরুষ কর্মী থাকবেন। তাঁদের মধ্যে এক জন থাকবেন বুথ সভাপতি। এর সঙ্গে অঞ্চল সভাপতি , অঞ্চল কমিটি এবং ব্লক কমিটি উপস্থিত থাকবে। তবে মাধ্যমিক শুরু হচ্ছে, তাই ঘেরা জায়গায় বক্স নিয়ে বিকেল তিনটের পরে সভা হবে বলে অনুব্রত জানান। কোনও এলাকায় কাছাকাছি হল থাকলে সেখানে সভা হবে।

তবে ভোটের কৌশল কী হবে, তা এ দিন খলসা করতে চাননি জেলা তৃণমূল সভাপতি। অনুব্রতের কথায়, ‘‘কৌশল ছাড়া যে ভোট হয় না, সেটা সবাই জানে। কিন্তু সেটা কী, তা এখনই বলা যাবে না।’’ দল সূত্রে অবশ্য জানা যাচ্ছে, নিবিড় জনসংযোগ বজায় রাখার বিষয়ে দলের নেতাদের সজাগ করেছেন জেলা সভাপতি। তার একটা নমুনা মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় দেখা যাবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষমান মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সহয়তায় থাকবেন তৃণমূল কর্মীরা। অনুব্রত বলেন, ‘‘প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের সাহায্যের জন্য ৩০ থেকে ৪০ জন তৃণমূল স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। তাঁদের ব্যাচ দেওয়া হবে। তাঁরাই অভিভাবকদের জল দেবেন। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে সাহায্য করবেন। এটাই তাঁদের ডিউটি।’’

সাংগঠনিক কিছু রদবদলও এ দিন ঘটিয়েছেন জেলা সভাপতি। সিউড়ির শহর তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার থাকা সত্ত্বেও মহম্মদ সফিক নামে এক নেতাকে শহর কার্যকরী সভাপতি করার ঘোষণা করেন অনুব্রত। তৃণমূল সূত্রের খবর, সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই মুহূর্তে সম্পর্ক মসৃণ নয় শহর সভাপতির। কিছুদিন আগে পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলরদের মধ্যে ফাটল ধরার পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। অভিজিৎবাবুর নেতৃত্বে কাউন্সিলরদের একাংশ পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছিলেন বলে দল সূত্রের খর। সেই সমস্যা সামাল দেন অনুব্রতই।

নতুন করে শহর সভাপতির পাশে এক জনকে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে অনুব্রত সিউড়ি শহরে অভিজিৎ মজুমদারের উপরে রাশ টানলেন বলেই মনে করছেন দলের নেতা-কর্মীরা।

Anubrata Mandal TMC Tree
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy