Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাইপুরে নেতাকে ছুরি

পুলিশ জানিয়েছে, জখম চন্দন দণ্ডপাট রাইপুরের ঢেকো অঞ্চল তৃণমূলের সম্পাদক। চন্দনের অভিযোগ, ‘‘দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক চড়ে এসে পিঠে ছুরি মেরে চম্পট দেয়।’’ ঘটনাটি নিয়ে ন’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন চন্দন।

আহত চন্দন দণ্ডপাট। নিজস্ব চিত্র

আহত চন্দন দণ্ডপাট। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাইপুর শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২০
Share: Save:

বাড়ির কাছে দুষ্কৃতীদের হাতে ছুরিকাহত হলেন এক তৃণমূল নেতা। সোমবার রাতে রাইপুরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, জখম চন্দন দণ্ডপাট রাইপুরের ঢেকো অঞ্চল তৃণমূলের সম্পাদক। চন্দনের অভিযোগ, ‘‘দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক চড়ে এসে পিঠে ছুরি মেরে চম্পট দেয়।’’ ঘটনাটি নিয়ে ন’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন চন্দন। পুলিশ জানিয়েছে, একটি সন্দেহজনক মোটরবাইক আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

জখম অবস্থায় চন্দনকে প্রথমে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে থানা হয়ে রাইপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। রাতভর সেখানে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করানোর পরে মঙ্গলবার দুপুরে ছুটি দেওয়া হয় তাঁকে। এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা বলেন, “সন্দেহজনক একটি মোটরবাইক আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”

কী ভাবে হামলা হয়? চন্দন জানাচ্ছেন, রাত প্রায় আটটা নাগাদ বক্সি এলাকায় দলীয় কার্যালয় থেকে এক সহকর্মীর মোটরবাইকে চড়ে তিনি নিজের গ্রাম গোলোড়ে ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে একশো মিটার দূরে দলীয় কর্মীর মোটরবাইক থেকে নেমে তিনি বাড়ির দিকে হাঁটা দেন। হাঁটতে হাঁটতেই ঢেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য তাপস মণ্ডলের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন তিনি। চন্দনের অভিযোগ, “প্রথমে দু’টি মোটরবাইক পিছন থেকে এসে আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তৃতীয় একটি মোটরবাইকও পিছন থেকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল। চলন্ত ওই মোটরবাইক থেকেই আমার পিঠে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয়। কানে আসে ওদের কথা— খুব মস্তান হয়েছিস।” তিনি জানান, শেষের মোটরবাইকে তিন জন ছিল। তাদেরই এক জনের হাতে ভোজালিটি দেখেছিলেন চন্দন।

ঘটনার সময় তাপসের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন চন্দন। তাপস বলেন, “কথা বলতে বলতে হঠাৎই আর্তনাদ করে ওঠে চন্দন। কোনওরকমে আমাকে জানায়, তাকে কেউ ছুরি মেরেছে। এরপরই লাইন কেটে আমি গোলোড় গ্রামের দলীয় কর্মীদের ফোন করে সব জানাই। তারাই গিয়ে চন্দনকে উদ্ধার করে।”

কারা হামলা চালাল? চন্দনের দাবি, ‘‘হামলাকারীরা আগে সিপিএম করলেও গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা বিজেপির হয়ে ভোট করেছে।’’ ঘটনা হল, রাইপুরের এই ঢেকো গ্রাম পঞ্চায়েতে এ বার বিপুল আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। এই পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের মধ্যে ১০টিই পেয়েছে বিজেপি, একটিতে জিতেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনও হয়ে গিয়েছে। রাইপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুলেখা মাহাতোর অভিযোগ, “বোর্ড গঠন হওয়ার পর থেকে ঢেকো এলাকার বিভিন্ন জায়গায় আমাদের দলীয় পতাকা খুলে দিয়ে নিজেদের পতাকা টাঙাচ্ছে বিজেপির কর্মীরা। অশান্তি করার জন্য নানা ভাবে প্ররোচিত করছে ওরা। শেষ পর্যন্ত চন্দনের উপর হামলা চালাল ওরা।”

যদিও বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এই ঘটনায় আমাদের দলের কোনও সক্রিয় সদস্যের নাম অভিযোগে আনা হয়েছে বলেও শুনিনি।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। সেই দ্বন্দ্বের জেরেই ওই হামলা হয়েছে।” যদিও চন্দন বলেন, “আমি হামলাকারীদের মুখ দেখেছি। ওরা সবাই আগে সিপিএমের হার্মাদ ছিল। এখন সক্রিয় বিজেপি কর্মী। ঢেকো অঞ্চলে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Stabbed TMC Raipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE