E-Paper

জিতেও অখুশি অরূপের দাবি, শূন্য গোয়াল ভাল

২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। তাই তার আগে দলের কোথায়, কী সমস্যা রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তৎপর হন তৃণমূল নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ০৮:৪৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

‘‘দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভাল, তাই এই দুষ্টুদের আমি আর দলে রাখতে চাই না’’— ভোটে দলের ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ সম্পর্কে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর এই মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের অন্দরে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিমলাপালে দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায়। অরূপ বলেন, ‘‘কিছু বিশ্বাসঘাতক আছে, যাঁরা তৃণমূলের খেয়ে বড় হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই লড়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আমি রাজ্যকে অভিযোগ জানিয়ে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’’ অরূপ জানান, যাঁরা তৃণমূলের পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ ভোগ করেছেন, পরে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দলে আর বেইমান, বিশ্বাসঘাতকদের রাখতে চাই না।’’

পরে অরূপ ফোনে বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে যাঁরা দলে থেকে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ পাওয়ার পরেই বিশ্বাসঘাতকদের নাম ঘোষণা করে বহিষ্কার করা হবে।’’

ঘটনা হল, বুধবার তৃণমূল ভবনে ব্লক সভাপতি ও কিছু এলাকার অঞ্চল নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসেন বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ। ভোটের পরে দলীয় স্তরের বুথ ফেরত সমীক্ষার ভিত্তিতে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে ভাল ‘লিড’-এর দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হয়নি। কেন এমন হল ব্লক ধরে তা মূল্যায়ন করা হয়। কিছু সমস্যা উঠে আসে। তা মেটাতেও অরূপ কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেন।

ভোট শেষে তৃণমূল দাবি করেছিল, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় ১ লক্ষ ১৮ হাজার ভোটে তারা জিতবে। কিন্তু অরূপ জেতেন ৩২,৭৭৮ ভোটে। শুধু তাই নয়, বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা অরূপ বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রেই বিজেপির কাছে ১৬,৩১২ ভোটে পিছিয়ে যান।

২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। তাই তার আগে দলের কোথায়, কী সমস্যা রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তৎপর হন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রের খবর, কিছু এলাকায় দলীয় অন্তর্ঘাত, কোথাও তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধানকে নিয়ে সমস্যা, কোথাও আবার দলীয় নির্দেশ না মেনে কাজ করার মতো নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। সূত্রের দাবি, অরূপ কয়েকজন অঞ্চল সভাপতিকে শো-কজ় করতে নির্দেশ দেন। ভোট প্রচারে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের কাজেরও পর্যালোচনা করা হয়। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন নেতার কাজকর্ম নিয়েও অরূপ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অরূপ বলেন, “যে সব এলাকায় আমাদের কাঙ্খিত ফল হয়নি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সেখানে সমস্যার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। কোথাও অন্তর্ঘাত হয়েছে কি না, হয়ে থাকলে প্রমাণ-সহ লিখিত ভাবে দলকে জানাতে বলা হয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেব। ব্লক সভাপতি ও ভোটের দায়িত্বে থাকা নেতাদেরও সতর্ক করা হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতিদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল অল্প ব্যবধানেই জিতেছে। এতেই স্পষ্ট মানুষ
ওদের চায়নি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy