প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে এ বার পুলিশকে নিশানা বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর। তালড্যাংড়ার বিবড়দায় দলের একটি কর্মসূচিতে গিয়ে তালড্যাংড়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে ‘দাম্ভিক’ বলে উল্লেখ করলেন অরূপ। সাংসদের এমন বক্তব্যে সমালোচনায় সরব বিজেপি-সিপিএম।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার তালড্যাংড়া ব্লকের বিবড়দায় আয়োজিত দলের বিধানসভা ভিত্তিক ভোটারলিস্ট সংশোধনী শিবিরে হাজির হয়েছিলেন অরূপ। সেখানেই তালড্যাংড়া থানার পুলিশের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। সাংসদের দাবি, ‘‘তালড্যাংড়া থানার পুলিশ আধিকারিক অত্যন্ত দাম্ভিক। এক জন সাংসদ এলাকায় আসছে। একটা পুলিশের গাড়ি সাংসদকে পথ দেখিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে দেবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে কাজে এদের লজ্জা হয়। এরা তৃণমূলের বা সরকারের বন্ধু নয়। এদের উপর নজর রাখবেন।’’ এর পরেই সাংসদ দলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এই পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বেশি বন্ধুত্ব করবেন না। কারণ এরা রোজগার করার জন্য তৃণমূলে আশ্রয় নেয়। এরা দেশ সেবা করার জন্য আসেনি। এদের উপর নির্ভর করলে চলবে না।’’
সাংসদের সংযোজন, ‘‘তালড্যাংড়া থানার পুলিশের কোনও দায়িত্বজ্ঞান নেই। একটা পুলিশ গাড়ি পাঠিয়ে, অনুষ্ঠানস্থলে পুলিশদের বসিয়ে রেখে দায় সারে। আমি যেখানে এসেছি, এই এলাকা জঙ্গলমহল। সেটা তাদের মনে রাখা উচিত। এক জন সাংসদ কোনও এলাকায় গেলে তাঁকে রাস্তাটুকু দেখানোর ন্যুনতম সৌজন্যতাটুকুও তাদের নেই। আমি বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
কটাক্ষ করেছে বিজেপি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, ‘‘সাংসদকে পুলিশ পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে, তেমন কোনও সাংবিধানিক বিধি নেই। সে ক্ষেত্রে সাংসদের বক্তব্য অসাংবিধানিক। আসলে সাংসদের কথাতেই পরিস্কার, এ রাজ্যের পুলিশ যথেচ্ছ তোলা তুলবে এবং তার যথাযথ ভাগ যথা জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে।’’ সিপিএম এর রাজ্য কমিটির সদস্য অভয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাংসদ জনগণের প্রতিনিধি। তাই তাঁর জনগণের উপর একটু ভরসা রাখা উচিত। সব সময় পুলিশের উপর এত ভরসা করতে হবে কেন? ওঁদেরই তো পুলিশ। তাই তাঁদের প্রতি কেমন মন্তব্য করা উচিত, তা সাংসদের চিন্তা করার প্রয়োজন ছিল।’’