Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Purulia TMC leader murder

আদ্রায় তৃণমূল নেতা খুনে ধৃত কংগ্রেস প্রার্থী-সহ দুই, রাস্তা অবরোধ শাসক দলের সমর্থকদের

পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা এগিয়েছে। বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনের তালিকা তৈরি করে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকা থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজও।

তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবেকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ পুরুলিয়ার আদ্রা শহরে।

তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবেকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ পুরুলিয়ার আদ্রা শহরে। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ১০:৫৫
Share: Save:

পুরুলিয়ায় তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কালের জন্য রাস্তা অবরোধের ডাক দিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার ভোর থেকে আদ্রা শহরের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের দাবি, আততায়ীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ চলবে। তার মধ্যে বেলার দিকে খবর মিলল, খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা এগিয়েছে। বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনের তালিকা তৈরি করে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকা থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজও। জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের হওয়া দু’জনকে গ্রেফতার করেছে আদ্রা থানা। ধৃতদের নাম আরশাদ হোসেন এবং মহম্মদ জামাল।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, আরশাদ বেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলীয় পার্টি অফিসে গুলি করে খুন করা হয় আদ্রা শহর তৃণমূলের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে। আততায়ীদের গুলিতে জখম হয়েছেন ধনঞ্জয়ের দেহরক্ষী রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল শেখর দাসও। তৃণমূল নেতা এবং তাঁর দেহরক্ষীকে আততায়ীরা গুলি করে পালানোর পর স্থানীয়েরাই দু’জনকে রঘুনাথপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই ধনঞ্জয়কে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পরে শেখরকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

পঞ্চায়েত ভোটের আবহে এই ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার আদ্রার রাস্তা অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। সকাল থেকে দোকানপাটও বন্ধ শহরে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাবু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশের উপর আমাদের আস্থা আছে যে, তারা আততায়ীদের খুঁজে বার করবে। কিন্তু যত ক্ষণ না তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তত ক্ষণ এই অবরোধ চলতেই থাকবে।’’

গুলিকাণ্ডের পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি আদ্রায়। এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, যে পার্টি অফিসে ধনঞ্জয়কে খুন করা হয়েছে, তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসি ক্যামেরা থেকে বেশ কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পার্টি অফিসের ভিতরেও একটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। যদিও সেটি বিকল। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, খুনের ঘটনার পর রাতেই স্নিফার ডগ এনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলার পুলিশকর্তারা।

শুক্রবার সকালেও পার্টি অফিসের সামনের রাস্তায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় পার্টি অফিসের বারান্দায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে বসেছিলেন ধনঞ্জয়। সঙ্গে শেখরও ছিলেন। সেই সময় আচমকাই দু’জন বাইকে করে পার্টি অফিসে এসে গুলি ছুড়তে আরম্ভ করেন। অন্তত ছয় রাউন্ড গুলি চলেছে। এর পর ঘটনাস্থলে মোটরবাইক ফেলেই সেখান থেকে পালান আততায়ীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য আততায়ীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কয়েক জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। আততায়ীরা যে বাইকটি ফেলে গিয়েছেন, সেটির নম্বর প্লেট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, নম্বর প্লেট বদলেই খুনের পরিকল্পনা করা হয়। সেটি চুরির বাইক হতে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।

যে ভাবে ধনঞ্জয়কে খুন করা হয়েছে, তা কোনও পেশাদার শুটারের কাজ বলে মনে করছেন পুলিশের একটি অংশ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, সেই কারণে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও খোঁজখবর করা শুরু করেছেন তাঁরা। কিন্তু আততায়ীরা বাইকটি কেন ফেলে গেলেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC leader murder purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE