Advertisement
E-Paper

নোটের চোটে সঙ্কটে টোম্যাটো চাষিরা

শীতের মুখে ওদের হাসি ফোটায় লাল টুকটুকে টোম্যাটো। গত কয়েক বছর ধরে ভিন্‌রাজ্যে টোম্যাটো রফতানি করে ভালই মুনাফা করেছেন বিষ্ণুপুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকার চাষিরা। কিন্তু এ বার ভাল ফলন হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৩৯
ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা না আসায় বন্ধ রফতানি। রাজপুরে শুভ্র মিত্রের তোলা ছবি।

ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা না আসায় বন্ধ রফতানি। রাজপুরে শুভ্র মিত্রের তোলা ছবি।

শীতের মুখে ওদের হাসি ফোটায় লাল টুকটুকে টোম্যাটো। গত কয়েক বছর ধরে ভিন্‌রাজ্যে টোম্যাটো রফতানি করে ভালই মুনাফা করেছেন বিষ্ণুপুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকার চাষিরা। কিন্তু এ বার ভাল ফলন হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। কারণ ভিন্‌রাজ্য থেকে যে ব্যবসায়ীরা এখানকার টোম্যাটো কিনতে আসতেন, এ বার তাঁদের দেখা নেই। আর এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে নোট বাতিলের জেরেই। এমনটাই দাবি করছেন চাষিরা।

শীতকালীন সব্জি হিসেবে টোম্যাটোর বাজারদর মন্দ নয়। বিষ্ণুপুর ও তালড্যাংরা ব্লকের সীমানা ঘেঁষা ঢ্যাঙাশোল, গামারবনি, মড়ার, পিয়ারডোবা, কলাবাগান, ধানশোল, বরামারা, শালদহ, ভেলকো প্রভৃতি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই টোম্যাটো চাষ হয়ে আসছে। এই সব এলাকার টৌম্যাটো যায় তামিলনাড়ু, কর্নাটক, ওড়িশা, উওরপ্রদেশ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, পটনা প্রভৃতি রাজ্যে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা এখানকার মাঠে এসে আড়তের টোম্যাটো ট্রাকে ভরে নিজেদের রাজ্যে নিয়ে যান। তাঁদের টোম্যাটো বিক্রি করে মোট টাকাও আয় হয়।

কিন্তু এ বার নোটের চোটে সব গোলমাল হয়ে গিয়েছে। বড় অঙ্কের বেচাকেনা হয় বলে চালু বড় নোট হাতে বিশেষ না থাকায় এ বার আর ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীদের দেখা নেই। চাষিরা জানান, তাঁরা ওই সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, ব্যাঙ্ক থেকে বেশি টাকা তাঁরা পাচ্ছেন না। সে কারণেই টোম্যাটো কিনতে তাঁরা আসতে পারছেন না। ব্যাবসায়ীদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা না এলে তাঁরা আদৌ আসতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

সে কারণে এ বার ওই বিস্তীর্ণ এলাকার টোম্যাটো চাষিদের লক্ষ এখন স্থানীয় বাজার। তাতে দামও পড়ে গিয়েছে। চাষিদের মধ্যে সৈয়দ মুকাবল গাজী, কুতুবুদ্দিন খাঁ, আলতাফ দালাল বলেন, ‘‘গত বছর এই সময়ে আমরা ১৭ থেকে ১৮ টাকা প্রতি কেজি টোম্যাটোর দাম পেয়েছি।টোম্যাটো ফেলে রাখলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ বার তাই ৬ টাকা থেকে ৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, ওই সব গ্রামের বেশিরভাগ জমিতেই টোম্যাটো চাষ হয়েছে। সব মিলিয়ে টোম্যাটো চাষের জমির পরিমাণ কয়েকশো একর বলে চাষিদের দাবি। দৈনিক জমি থেকে বেশ কয়েকশো কুইন্ট্যাল টোম্যাটো তোলা হয়। ফলে কার্যত জলের দরে টোম্যাটো বিক্রি করতে হওয়ায় এ বার বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

বিষ্ণুপুর মহকুমা কৃষি অধিকর্তা হেমন্তকুমার নায়েকও জানান, নোট-বাতিলের জেরে ব্যবসায়ীরা আসছেন না বলে ভিন্‌রাজ্যে টোম্যাটোর রফতানি এ বার মার খাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘সব্জি সংরক্ষণের হিমঘর না থাকায় টোম্যাটো কম দামেই চাষিদের বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে ওই চাষিরা যাতে বিকল্প হিসেবে এই সময়ে সূর্যমুখীর চাষ করেন, সে জন্য তাঁদের উৎসাহ দেওয়া হবে।’’

demonetisation tomato
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy