রায়পুর গ্রামে রায় পরিবারে পুজোর প্রস্তুতি। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
ঐতিহ্য মেনে আজও শিব-দুর্গা এক সঙ্গে পুজো পান বোলপুরের রায়পুর গ্রামের রায় পরিবারে। প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো এই পুজো। পুজোকে ঘিরে আজও সমান উন্মাদনা রয়েছে রায়পুর গ্রামে।
পুরনো আমলের সমস্ত আচার বিধি মেনে পুজোর সমস্ত আয়োজন হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজো শুরুর পিছনের ইতিহাস। এক সময় রায়পুর গ্রামের বণিক সম্প্রদায়ের মানুষের বেশি বসবাস ছিল। সেই সময় তাঁরাই মূলত হর-পার্বতীর পুজো শুরু করেন। পুজো কিছু দিন চালানোর পরে বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই সময় রায় পরিবারে বংশধরেরা তাঁদের আশ্বস্ত করে পুজোর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার পর থেকে রায় পরিবারের সদস্যরাই এই পুজো চালিয়ে আসছেন।
রীতি মেনে এখানে চার দিনে শিব-দুর্গার সঙ্গে দক্ষরাজ এবং নারদের পুজো করা হয়ে থাকে। আগে যে ধরনের মূর্তি তৈরি করে পুজো, এখনও সেই ভাবে মূর্তি তৈরি করে পুজো হয়ে আসছে। তবে আগে পরিবারের সদস্যরা নিজের হাতে মূর্তি তৈরি করে সেই মূর্তিতে পুজো করতেন। লোকবলের অভাবে এখন মৃৎশিল্পীদের দিয়ে মূর্তি তৈরি করা হয়।
যেহেতু এই পুজো বণিক সম্প্রদায়ের ছিল, তাই আজও পুজো শুরুর আগে তাঁদের বংশধরেরা দেবীর উদ্দেশে শাড়ি সহ পুজোর নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবীকে নিবেদন করেন। বৈষ্ণব মতই পুজো করা হয় এখানে।
পুজোর রীতি মেনে আজও অষ্টমীর দিনে মাসকলাই বলির প্রথা রয়েছে এখানে। এই পুজো দেখতে বহু মানুষের সমাগম লক্ষ্য করা যায়। রায় পরিবারের অন্যতম সদস্য বিবেকানন্দ রায় বলেন, “আগে জাঁকজমক করে পুজো হত। এখন অর্থ ও লোকবলের কারণে কোনও রকমে পুজো চালিয়ে যাচ্ছি। আজও দূরদূরান্ত থেকে বহু লোকজন আসেন এই পুজো দেখতে।’’ শহরের জাঁকজমকপূর্ণ পুজোর আয়োজন থেকে বেরিয়ে অনেক দর্শনার্থী এই পুজো দেখতে প্রতিবছর আসেন রায়পুর গ্রামে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy