Advertisement
E-Paper

ময়দানে দুই জা, ভোট জমজমাট

পালিরামের মোড় থেকে ডাক্তারপাড়ার দিকে চলে গিয়েছে যে রাস্তাটা, সে রাস্তার উপর নবীন ক্লাব। কয়েকবছর ধরেই এ ক্লাবের দুর্গাপুজো হিট। পুজো আসতে এখনও ঢের দেরি। কিন্তু, ভোটের মরসুমে পাড়া জমজমাট ক্লাবের কাছেই ধীবর পরিবারের সৌজন্যে! ভোটের ময়দানে এ বার মুখোমুখি ভোট-যুদ্ধে তৃণমূল ও বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন দুই জা, ছায়া ধীবর ও প্রজাপতি ধীবর!

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০২
ছায়া ধীবর। (ডান দিকে) প্রজাপতি ধীবর।—নিজস্ব চিত্র

ছায়া ধীবর। (ডান দিকে) প্রজাপতি ধীবর।—নিজস্ব চিত্র

পালিরামের মোড় থেকে ডাক্তারপাড়ার দিকে চলে গিয়েছে যে রাস্তাটা, সে রাস্তার উপর নবীন ক্লাব। কয়েকবছর ধরেই এ ক্লাবের দুর্গাপুজো হিট। পুজো আসতে এখনও ঢের দেরি। কিন্তু, ভোটের মরসুমে পাড়া জমজমাট ক্লাবের কাছেই ধীবর পরিবারের সৌজন্যে! ভোটের ময়দানে এ বার মুখোমুখি ভোট-যুদ্ধে তৃণমূল ও বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন দুই জা, ছায়া ধীবর ও প্রজাপতি ধীবর!

এই কয়েক দিনেই ধীবর বাড়ি হয়ে উঠেছে ভোট-চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। অন্তত তেমনই বলছেন এই বাড়ির আরেক বধূ দেবস্মিতা ধীবর। ‘‘পথ চলতি অনেক মানুষ এই বাড়িটার দিকে এখন আঙুল দেখিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন। কার্যত, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দুই জায়ের লড়াই ঘিরে এ বার রামপুরহাট পুরভোটের দিকে নজর সকলের।’’

দুই জায়ের লড়াই যে জমজমাট, বোঝা যাচ্ছে আশেপাশে দেওয়াল লিখনগুলির দিকে খেয়াল করলে। তৃণমূল ও বিজেপির পরস্পর বিরোধী দেওয়াল লিখনে সেজে উঠেছে আশপাশের দেওয়াল। কোথাও কোথাও টাঙানো হয়েছে ফ্লেক্সও। ইতিমধ্যেই ভোট চেয়ে প্রচারে নেমেছেন দুই জা। বাড়তি ভিড় দেখা যাচ্ছে, সেই প্রচার ঘিরে। পথে-প্রচারে অনেক সময় মুখোমুখি দেখাও হয়ে যাচ্ছে দুই জায়ের।

ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর ছায়াদেবীর দাবি, ‘‘ওয়ার্ডে প্রার্থী তালিকায় প্রথম নাম ঘোষণা, দেওয়াল লিখন প্রচার শুরু হয়। হঠাৎ করে আমাদের বাড়ি থেকে কংগ্রেস এবং বিজেপি চাল খাটিয়ে ধীবর বাড়ির ভোট ভাঙার জন্য আমার জাকে প্রার্থী করেছে। ওরা ভেবেছিল, সচেতন ভাবে ভোট কাটাকাটি করে নেবে। কিন্তু আমার সঙ্গে দলীয় সংগঠন আছে’’। বিজেপি প্রার্থী প্রজাপতি ধীবর অবশ্য বলছেন, ‘‘ছোট থেকে বিজেপি করি। সেই পারিবারিক ঘরানাতেই বড় হয়েছি। বিয়ের পর এ বাড়িতে এসে একবার মাত্র বাড়ির বৌমাকে তৃণমূলের হয়ে ভোট দিয়েছিলাম। এখন ওয়ার্ডবাসী আমাকে প্রার্থী করেছে। সুতরাং লড়াই এর ময়দানে জয়ী হতে চাই। সেখানে কে জা, কে ননদ দেখলে চলবে না!’’

ধীবর পরিবারে পাঁচ ভাই এর মধ্যে তিন ভাই এক সঙ্গে থাকেন। চৌহদ্দি এক হলেও সকলের মধ্যে তেমন কথা-বলাবলি ছিল না। আগে দু’একবার কথা কাটাকাটিও হয়েছে। তবে, প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই দুই জায়ের মধ্যে কথা একেব্বারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নিজেদের মধ্যে ‘স্পিক টু নট’ হয়ে প্রচারে বেড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা। দেখা হলেও, দুই জায়ের পরস্পরের মধ্যে কথা হচ্ছে কি?

শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থী ছায়া ধীবরের উত্তর, ‘‘না, না সে রকম কিছু নয়। কেউ যদি না কথা বলে তাহলে কি বলব! নিজের নিজের দলীয় মতাদর্শ নিয়ে প্রার্থী হয়েছি।’’ বিজেপি প্রার্থী প্রজাপতি ধীবর অবশ্য জানালেন, “প্রার্থী হওয়ার আগে থেকেই আমাদের মধ্যে কথা বলাবলি খুব কম ছিল। পরিবারে স্বামীর সম্মান রক্ষার্থে আমি প্রার্থী হয়েছি।’’

অন্য বধূ দেবস্মিতা ধীবর প্রথম রামপুরহাটে ২০০০ সালের পুরসভা নির্বাচনে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর হন। ২০০৫ এবং ২০১০ সালে এই ওয়ার্ডে কংগ্রেসের সৈয়দ সিরাজ জিম্মি কাউন্সিলর ছিলেন। এবারে তফসিল মহিলা সংরক্ষিত আসন। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই ওয়ার্ডে কংগ্রেস এবং তৃণমূল চেয়ে এগিয়ে ছিল। তৃণমূল তৃতীয় স্থানে ছিল। তৃণমূলের ১১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি উজ্জ্বল ধীবর বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল কাটিয়ে উঠে পুরনো ওয়ার্ড নিজেদের দখলে পুনরুদ্ধার করাটাই এখন কর্মীদের উদ্দেশ্য। এবং বিগত দু’বারের কংগ্রেস কাউন্সিলর উন্নয়ন বিমুখ কার্যকলাপ এবং বিজেপি-র প্রার্থী নিয়ে দলীয় কোঁদল আমাদের সুবিধাই করে দিয়েছে। ওয়ার্ডে আমরাই জয়ী হব।’’

হার-জিত কীভাবে মেনে নেবেন?

বিজেপি প্রার্থী প্রজাপতিদেবী বলেন, ‘‘জেতা হারা সবটাই জনতার উপর। জনতা যে রায় দেবে সেটাই মেনে নিতে হবে।’’ ছায়াদেবীর জবাব, ‘‘আমি তো জেতার জন্য লড়াই এ নেমেছি। যা হবে সেটা রাজনৈতিক ময়দানে হবে। বাড়িতে আমাদের মধ্যে সু-সম্পর্ক যেমন আছে তেমনটাই থাকবে।’’

Housewife Rampurhat Municipal election Trinamool BJP Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy