Advertisement
E-Paper

শিক্ষকদের জানিয়ে বিয়ে রুখল ছাত্রী

প্রশাসন এবং চাইল্ড লাইনের লাগাতার চেষ্টা সত্ত্বেও নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:০৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বছর খানেক আগে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ নিয়ে স্কুলে একটি কর্মশালা হয়েছিল। পড়ুয়ারা জেনেছিল, ১৮ বছরের কমবয়সি মেয়েদের বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বার সেই স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য নিয়েই নিজের বিয়ে বন্ধ করল দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। এই কাজে তাঁরা পাশে পেয়েছেন চাইল্ড লাইনকে। তবে, মেয়েটির এগিয়ে আসাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে প্রতিবেশী।

প্রশাসন এবং চাইল্ড লাইনের লাগাতার চেষ্টা সত্ত্বেও নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, আগের চেয়ে ,চেতনতা বাড়ায় এখন অনেক নাবালিকাই বন্ধু, শিক্ষক বা অন্য কারও সাহায্যে চাইল্ড লাইনের কাছে গোপনে বিয়ে দেওয়ার খবর পৌঁছে দিচ্ছে। অনেক সময় গ্রামের লোকের কাছ থেকেও নাবালিকা বিয়ের খবর আসছে।

বাহিরী ব্রজসুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী বোলপুর শহর থেকে ১৪-১৫ কিলোমিটার দূরের এক গ্রামে। ১৬ বছরের ওই নাবালিকার সঙ্গে পাশের গ্রামের এক যুবকের বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল। ৩ মার্চ বিয়ের দিন ধার্য হয়েছিল। সেই মতো বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। ওই নাবালিকার অমতেই বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু, মেয়েটি আরও পড়তে চায়। চায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে।

কী ভাবে বিয়ে আটকাবে ভেবে পাচ্ছিল না সে। তখনই তার মাথায় আসে স্কুলের শিক্ষকদের কথা। এর পরেই ওই নাবালিকা সমস্ত ঘটনা শিক্ষকদের জানায়। স্কুলের শিক্ষকেরা ১০৯৮-এ ফোন করে জেলা চাইল্ড লাইনকে খবর দেন। বুধবার চাইল্ড লাইনের দুই প্রতিনিধি শেখ ফজলুল হক, লালমোহন চক্রবর্তী, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি এবং বোলপুর থানার পুলিশকর্মীরা ওই মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। পরিবারের লোকজনদের বুঝিয়ে সেই বিয়ে বন্ধ করেন। মেয়ের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত কোথাও বিয়ে দেওয়া যাবে না, এই মর্মে বাবা-মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়।

বাহিরী ব্রজ সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পঞ্চানন ঘোষ বলেন, “মেয়েটি এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সে পড়তে চায়, অথচ বাড়ি থেকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। মেয়েটির এই ধরনের সাহসিকতায় আমরা মুগ্ধ। এ ভাবে যদি বাকি মেয়েরাও এগিয়ে আসে, তা হলে আগামী দিনে নাবালিকা বিয়ের অভিশাপ থেকে হয়তো সমাজ মুক্ত হবে।’’ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিয়ে বন্ধ হওয়ায় খুশি জশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। তার কথায়, ‘‘অপরিণত বয়সে বিয়ে করে জীবনটাকে দুর্বিষহ করতে চাই না। আমি উচ্চশিক্ষা লাভ করে জীবনে বড় হতে চাই।”

Child Marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy