Advertisement
E-Paper

খোস গল্পে যুযুধান নেতা-নেত্রী

বিধানসভা নির্বাচনে এই সোনামুখী হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। তার পরেও এলাকায় রাশ পড়েনি দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এই প্রেক্ষিতে ধানসিমলায় অভিষেকের সভার দিকে নজর রেখেছিল রাজনৈতিক মহল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৮
শ্রোতা: সোনামুখীতে অভিষেকের জনসভায়। —নিজস্ব চিত্র।

শ্রোতা: সোনামুখীতে অভিষেকের জনসভায়। —নিজস্ব চিত্র।

সকাল থেকেই আকাশের মুখ ছিল ভার। কোথাও প্রবল, আবার কোথাও ঝিরঝিরি বৃষ্টি। তবে এই সব উপেক্ষা করেই মানুষের ঢল নামল সোনামুখীর ধানসিমলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়। আর এই ব্যাপক জনসমাগম দেখে যুব তৃণমূল সভাপতি বলেই ফেললেন, “এই জনসমাগম সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে।”

বিধানসভা নির্বাচনে এই সোনামুখী হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। তার পরেও এলাকায় রাশ পড়েনি দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এই প্রেক্ষিতে ধানসিমলায় অভিষেকের সভার দিকে নজর রেখেছিল রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের দাবি, অন্তত দেড় লক্ষ মানুষ এ দিন অভিষেকের সভায় এসেছিলেন। ভিড়ের ঠেলায় অনেকেই সভাস্থলে ঢুকতে না পেরে দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পুলিশের হিসেবেও সভাস্থল ও বাইরে মিলিয়ে এ দিন প্রায় এক লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। স্থানীয় সিপিএম নেতাদের অবশ্য দাবি, ভিড় মেরে কেটে ৩০ হাজার। জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা তালড্যাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্তীর কথায়, “অভিষেকের সভায় জনপ্লাবন ঘটানোর লক্ষ্য নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। দিন-রাত এক করে এই সভার প্রচার চালানো হয়েছে। সভা যে সফল, তার ‘সার্টিফিকেট’ অভিষেক নিজেই দিয়েছেন।”

এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ অভিষেক সভাস্থলে ঢোকেন। তবে তিনি মঞ্চে ওঠার আগে সভামঞ্চে তৃণমূলের বিভিন্ন যুযুধান নেতানেত্রীদের ঐক্যের চিত্র দেখা গিয়েছে। সোনামুখীর প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক দীপালি সাহা ও সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দ্বন্দ্বের জেরে বহুবার অশান্ত হয়েছে সোনামুখীর ব্লক। বিধানসভা ভোটে দীপালির হারের জন্য তাঁর অনুগামীরা সুরজিৎকেই দায়ী করেছিলেন। অন্যদিকে, প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে বিষ্ণুপুরে জেতেন কংগ্রেসের তুষার ভট্টাচার্য। তুষারবাবু এক বছর ধরে তৃণমূলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করলেও শ্যামবাবুর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব ঘোচেনি। অভিষেকের মঞ্চে অবশ্য ধরা পড়ে অন্য চিত্র। মঞ্চের প্রথম সারিতে পাশাপাশি বসতে দেখা গেল দীপালি, সুরজিৎ, শ্যামবাবু ও তুষারবাবুদের। শুধু বসে থাকাই নয়, একে অন্যের সঙ্গে খোশ মেজাজে কথাও বলে যাচ্ছিলেন।

স্বভাবতই এমন ব্যতিক্রমী জৃশ্য নজর কাড়ে দলের কর্মীদের। যুযুধান নেতা- নেত্রীদের এক ফ্রেমে পেয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ছবি তোলার হুটোপুটিও পড়ে যায়। তবে নেতাদের মধ্যে এই ঐক্য কতদিন টেকে, তা নিয়ে আড়ালে সংশয় প্রকাশ করেছেন বহু তৃণমূল কর্মীই। অনেকেরই কথায়, “অভিষেকের ঠেলাতেই এমন বিপরীত ছবি। তিনি জেলা ছাড়লেই আবার যে কে সেই হয়ে যাবে।”

এ দিনও দলীয় কর্মীদের এক হয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। এমনকী মানুষের কাছে আরও ভাল পরিষেবা পৌঁছে দিতে তৃণমূল ও যুব তৃণমূল কর্মীদের সমন্বয় রেখে চলতে বলেন তিনি। পাশাপাশি দলের পুরনো কর্মীদের মধ্যে বঞ্চনার ক্ষোভ মেটাতেও নেতা-কর্মীদের উদ্যোগী হতে বলেন অভিষেক। বুথে বুথে দলের প্রবীণ কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়ার নিদান দিয়ে গিয়েছেন তিনি। জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ কর্মীর কথায়, “আমরা ক্ষমতায় আসার পরেই নতুন করে এক দল লোক দলে ঢুকে আমাদের উপরই ছড়ি ঘোরানো শুরু করল। এই সব রুখতে দলের রাজ্য নেতৃত্ব এখন ভাবছে, দেখে ভাল লাগছে।”

TMC Unity Leaders Abhishek Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy