Advertisement
E-Paper

মণ্ডল নির্বাচন নিয়ে বিক্ষোভ

শ্যামাপদকে সরানোর দাবি বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জেলা সভাপতি নিজের স্বার্থে নিজের পছন্দের লোকজনেদের মণ্ডল সভাপতি পদে বসিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে এসেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:১৪
সিউড়িতে বিজেপির বিক্ষোভ। ছবি-তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিউড়িতে বিজেপির বিক্ষোভ। ছবি-তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

দীর্ঘদিন মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন না হওয়ায় ক্ষোভ দানা বাঁধছিল জেলা বিজেপি-র নেতা-কর্মীদের বড় অংশের মনে। আবার নির্বাচন হওয়ার পরে যে গোষ্ঠীকোন্দল এড়ানো যাবে না, সে কথাও আঁচ করেছিলেন জেলা নেতৃত্ব। মঙ্গলবার রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে সিউড়িতে বীরভূমের জন্য ৪৯ জন মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তার ঠিক তিন দিনের মাথায় নেতৃত্বের আশঙ্কাই সত্যি হল! শুক্রবার প্রকাশ্য রাস্তায় জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলকে ‘পদ থেকে সরানোর’ দাবি তুলে বিক্ষোভ মিছিল করলেন দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। পরে তাঁরা সিউড়ি ডাঙ্গালপাড়ায়, দলের জেলা কার্যালয়ে গিয়েও বিক্ষোভ দেখান। ঘণ্টাখানেক ধরে বিশৃঙ্খলা চলার পরে জেলা স্তরের নেতার কাছে স্মারকলিপি দেন বিক্ষোভকারীরা।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জেলা সভাপতি নিজের স্বার্থে নিজের পছন্দের লোকজনেদের মণ্ডল সভাপতি পদে বসিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে এসেছেন। কিন্তু, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে তৃমমূলের সঙ্গে লড়াই করে দল করেছেন, তাঁদেরকে পদে রাখা হয়নি। রাজ্যের নির্দেশ অনুসারে বুথ সভাপতিদের মতামত নিয়ে যে-ভাবে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন করার কথা ছিল, সেই ভাবে হয়নি বলেও অভিযোগ। বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা এ দিন প্রকাশ্যেই বলতে থাকেন, ‘‘শ্যামাপদবাবু তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাঁত করে দল চালাচ্ছেন।’’ এমনকি, বিক্ষোভ চলাকালীন বিজেপি-কে তৃণমূলের কাছে বিক্রি করে দেওয়ারও অভিযোগ তোলা হয় তাঁদের পক্ষ থেকে।

নলহাটির বিজেপি নেতা প্রতাপ দাস, মুরারই ২ ব্লকের দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘আমরা কোনও দলবিরোধী কাজ করতে যাইনি। কিন্তু শ্যামাপদ মণ্ডল ওই নির্বাচন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যে অনৈতিক, স্বৈরাচারী মনোভাব দেখিয়েছেন, তারই প্রতিবাদে এ দিন আমাদের বিক্ষোভ।’’ ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি নিয়ে আমাদের কোনও আগ্রহ নেই। ওই রকম বিশৃঙ্খল দলের ক্ষেত্রে এই রকম ঘটনাই প্রত্যাশিত।’’

বিজেপি সূত্রে খবর, জেলায় মোট ৪৯টি মণ্ডল রয়েছে। সদস্য শেষ হওয়া নির্বাচনে সেই মণ্ডলগুলির পুরনো সভাপতিদের মধ্যে মাত্র ন’জন পদ পেয়েছেন। বাকিদের পদ থেকে সরানো হয়েছে। এতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন ওই মণ্ডল সভাপতি এবং তাঁদের অনুগামীরা। মঙ্গলবার মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে নানা পোস্ট করতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। সেই ক্ষোভের আঁচ এসে পড়ল রাস্তায়।

এ দিন বেলা ১২ টা নাগাদ শ’দুয়েক বিজেপি কর্মী মিছিল করে ডাঙ্গালপাড়ার কার্যালয়ে আসেন, সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁরা মূলত দু’টি দাবি তোলেন। এক, নতুন মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনে অনিয়ম হওয়ায় তা বাতিল করতে হবে। দুই, জেলা সভাপতিকে পদত্যাগ করতে হবে। সেই সময় কার্যালয়ের ভিতরে ছিলেন যুবমোর্চার রাজ্য নেতা ধ্রুব সাহা, সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সম্পাদক শেখ সামাদ- হ অন্য নেতারা। তাঁরা প্রথমে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কয়েক জন কর্মী কার্যালয়ের সামনেই বসে পড়েন। ঘণ্টা খানেক ওই পর্ব চলার পরে তাঁরা জেলা নেতার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বিক্ষোভে ইতি টানেন। স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে, জেলা সভাপতিকে সংবাদমাধ্যমের সামনে ঘোষণা করতে হবে, নতুন মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন অবৈধ এবং বাতিল করা হল।

এ দিনই দুপুর তিনটে নাগাদ জেলা প্রশাসনের কাছে দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আসেন শ্যামাপদবাবু। সেখানে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে তিনি দাবি করেন, ‘‘দলের নিয়ম মেনেই আমাদের সভাপতি নির্বাচন হয়েছে। ওঁদের হয়তো বুঝতে কোথাও ভুল হয়েছে। এটা আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমরা বসে আলোচনার মধ্য দিয়ে সব ঠিক করে নেব।’’

Aggitation BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy