Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
appointment letter

দিনে চিরকুট দিয়ে রাতেই মিলল নিয়োগপত্র

বৈঠকের পরে, ওই রাতেই বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস টুম্পাদেবীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে নিয়োগ পত্র তুলে দেন।

হাতে-হাতে: টুম্পাদেবীর বাড়িতে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

হাতে-হাতে: টুম্পাদেবীর বাড়িতে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৫৭
Share: Save:

স্বামীর অকালমৃত্যুতে পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছিল। ঘরে রয়েছেন বৃদ্ধা শাশুড়ি আর দুই মেয়ে। এক জনের বয়স ছ’বছর। অন্য জনের পাঁচ মাস। অনটনের মধ্যে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছিলেন বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের টুম্পা মণ্ডল। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে চিরকুটে সে কথা লেখে সার্কিট হাউসে রেখে এসেছিলেন। কাজ হল তাতেই। কিছুক্ষণের মধ্যেই এল খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ফোন। রাতারাতি পেয়ে গেলেন চাকরির নিয়োগপত্রও।

বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি জানান, এক বধূ দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। বিষয়টি তাঁর স্পর্শকাতর মনে হয়েছে। ওই বধূকে চাকরিতে নিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে বলে বৈঠকে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকের পরে, ওই রাতেই বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস টুম্পাদেবীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে নিয়োগ পত্র তুলে দেন। জেলাশাসক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ওই মহিলাকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বড়জোড়া ব্লক দফতরে বিডিও ভাস্কর রায়ের কাছে চুক্তিভিত্তিক পদে যোগ দিয়েছেন টুম্পাদেবী।

বেলিয়াতোড়ের কলেজপাড়ার বাসিন্দা টুম্পাদেবী জানান, গত বছর হুগলির বেঙ্গাই কলেজে তাঁর স্বামী শারীরশিক্ষার শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন। দশ দিন পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

স্বামীর মৃত্যুর পরে কোনও পেনশন পান না টুম্পাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘জেলায় মুখ্যমন্ত্রী আসায় তাঁকে নিজের সমস্যা জানাতে শাশুড়িকে নিয়ে সার্কিট হাউস গিয়েছিলাম। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা না পেয়ে তাঁর উদ্দেশে একটি চিঠি নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়ে আসি।”

সেই চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পৌঁছনোর পরেই আসে ফোন। টুম্পাদেবী বলেন, “দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়ে চমকে যাই। উনি জানতে চান, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর কাজ করতে পারব কি না? আমি জানিয়েছিলাম, যে কোনও কাজ করতে প্রস্তুত আছি।”

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দ্রুত কার্যকর হওয়ায় আপাতত স্বস্তিতে ওই পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE