Advertisement
০৬ মে ২০২৪
সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে বিভ্রান্তি অব্যাহত জেলাজুড়ে
West Bengal Lockdown

দোকানে এসে ফিরলেন ক্রেতা

ব্যবসায়ীরা বলেন স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি দোকান খোলার ক্ষেত্রে তেমন কোনও নির্দেশিকা এখনও দেওয়া হয়নি। 

দোকান অল্প খুলে রেখে ব্যবসা বোলপুরে। ডান দিকে, কিছু দোকান খুলেছে রামপুরহাটে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী, সব্যসাচী ইসলাম

দোকান অল্প খুলে রেখে ব্যবসা বোলপুরে। ডান দিকে, কিছু দোকান খুলেছে রামপুরহাটে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী, সব্যসাচী ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৭:২৬
Share: Save:

নির্দেশিকা নিয়ে বিভ্রান্তি কাটছেই না। মঙ্গলবারও তাই খুলল না জেলার অধিকাংশ জায়গার দোকানপাট। ব্যবসায়ীরা জানান, কোন কোন দোকান খোলা থাকবে তা নিয়ে কোনও নির্দেশিকা তাঁরা পাননি। আবার তিন জন করোনা আক্রাম্ত মেলায় বীরভূম জেলা গ্রিন জ়োন থেকে অরেঞ্জ জ়োনে চলে যাওয়াতেও বিভ্রান্তি বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলার তিন শহরে ছবিটা কেমন ছিল, ঘুরে দেখল আনন্দবাজার

সিউড়ি

এ দিন সকাল থেকেই শহরের অধিকাংশ দোকান ছিল বন্ধ। এসপি মোড় এলাকায় গুটি কয়েক দোকান খোলা অবস্থায় দেখা গেলেও ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা ব্যবসা করার জন্য নয়, কেবল দোকান পরিষ্কার করার জন্য খুলেছেন। এ ছাড়া শহরের বাসস্ট্যান্ড, টিনবাজার, মসজিদ মোড়, বড়বাগান এলাকায় অত্যাবশকীয় পণ্যের দোকান ছাড়া কোনও দোকান খোলা ছিল না। শহরের নানা জায়গায় কিছু চায়ের দোকান খোলা দেখা যায়। তাঁদের মধ্যেও পুলিশি আতঙ্ক দেখা গিয়েছে। এক চা বিক্রেতা বলেন, ‘‘অনেকদিন কোনও রোজগার নেই। দোকান খোলা যাবে শুনে কিছু টাকা আয় করার আশায় দোকান খুলেছি। কিন্তু দয়া করে আমার ছবি তুলবেন না। পুলিশ জানতে পারলে দোকান বন্ধ করে দেবে।’’ ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার শহরে অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র ছাড়া অন্য বেশকিছু দোকান খুলে ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে জেলা পুলিশের কর্তারা দোকানগুলি বন্ধ করান। কিছু দোকানদারকে আটকও করা হয়। এমন চলতে থাকলে তাঁদের পক্ষে দোকান খোলা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের দাবি, পুলিশ যেমন লকডাউন কার্যকর করতে এবং মুখে মাস্ক পরে বেরোনোর জন্য প্রচার করছে, তেমনই কোন কোন দোকান কতক্ষণ খোলা থাকবে তা প্রচার করুক বা ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠকে করে জানিয়ে দিক।

বোলপুর

সকাল থেকেই বোলপুরের চিত্রা মোড় থেকে শুরু করে চৌরাস্তা মোড় , হাটতলা সব জায়গাতেই দোকান ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের দোকান খোলার জন্য ভিড় জমাতে দেখা যায়। কিন্তু অনেক ব্যবসায়ীই সাহস করে দোকান খুলতে চাননি। ব্যবসায়ীরা বলেন স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি দোকান খোলার ক্ষেত্রে তেমন কোনও নির্দেশিকা এখনও দেওয়া হয়নি। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘কোন কোন দোকান খোলার ক্ষেত্রে কী ধরনের ছাড় রয়েছে তাও আমাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়, তাই আমরা এ দিন দোকান খুলে কোনও ধরনের জটিলতায় জড়াতে চাইনি।’’ দোকান খোলা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষও। অন্য কিছু দোকান খুলতে পারে শুনে এ দিন বহু মানুষ অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী ছাড়াও অন্য জিনিস কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন কিন্তু বেশিরভাগ দোকান বন্ধ থাকায় তাদের খালি হাতেই বাড়ি ফিরে আসতে হয়। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি কী ধরনের দোকান খোলা যাবে সেই নিয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে আমাদেরকে বলা হয় এই নিয়ে জেলা প্রশাসনের বৈঠকের পর বিষয়টি আমাদের জানানো হবে। যদি বাকি দোকানগুলি খোলার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন অনুমতি দেয় তাহলে ব্যবসায়ীদের অনেক সুবিধা হবে।’’

রামপুরহাট

এ দিন সকালে দোকান খোলা নিয়ে দোটানায় ছিলেন রামপুরহাটের ব্যবসায়ীরাও। রামপুরহাট শহরের ব্যবসায়ী সমিতির (বস্ত্র, স্বর্ণ, মিষ্টি ও প্যান্ডেল ডেকোরেটার্স বাদে) সম্পাদক কার্তিক প্রসাদ জানান, জেলাশাসকের কোনও নির্দেশ না আসার জন্য ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। শহর ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ হার্ডওয়্যার দোকান, সানমাইকা, কাঠের আসবাবপত্রের দোকান, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম, ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান খোলেনি। ছোট গিফটের দোকান, জেরক্স, মুদিখানা, স্টেশনারি দোকান খোলা ছিল। মদের দোকানও খোলা ছিল। ক্রেতাদের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার লক্ষ্য করা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Birbhum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE