Advertisement
E-Paper

রোজগার করেই তো খেতে চাই

ঘরে মা, বাবা, স্ত্রী, বাচ্চা নিয়ে সাত জন সদস্য। আচমকা রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়ে বড় বিপদে পড়েছি।

কার্তিক বাগদি (বড়জোড়ার শ্রমিক)

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০২:৫৩

আমার বাড়ি বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের হরিরামপুর গ্রামে। বিভিন্ন কারখানায় ঠিকাদারের অধীনে মাল ওঠানো-নামানোর কাজ করি। এক সপ্তাহ ধরে কাজ নেই। শুধু শুনছি, করোনার জন্য সব বন্ধ।

কয়েকদিন আগে থেকেই ট্রাক আসা কমছিল। হঠাৎ সে দিন সকালে গিয়ে শুনলাম, সব কারখানা বন্ধ। ‘লকডাউন’। চিন্তায় পড়লাম। বিভিন্ন কারখানার দরজায় দরজায় ছুটলাম। যদি কোথাও মাল তোলা-নামানোর কাজ হয়। কিন্তু কাজ জুটল না। খিদেও পেয়ে গিয়েছিল। পকেটের কুড়ি টাকা নিয়ে একটা কারখানার গেটের পাশে হোটেলে গেলাম। তাঁরাও জানালেন, খাবার নেই।

ঘরে মা, বাবা, স্ত্রী, বাচ্চা নিয়ে সাত জন সদস্য। আচমকা রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়ে বড় বিপদে পড়েছি। আমাদের ‘দিন আনি দিন খাই’ সংসার। ঘরে মজুত কিছুই থাকে না। কোনও রকমে টেনে-টুনে দু’দিন চলল। কিন্তু তার পরে, চালও নেই এখন। কিছু বাড়িতে গিয়েছিলাম, টুকটাক যদি কিছু কাজ জোটে। কিন্তু কেউই বাড়িতে ঢুকতে দিতে চাইলেন না। বললেন, বাড়ির কাজের লোকেদেরই ছুটি দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে ফিরে এলাম।

দু’দিন আগে এক জন এসে চাল আর আলুর প্যাকেট দিয়ে গেলেন। কোন দলের জানি না। যে দলেরই হোক, এখন আমাদের কাছে ভগবান। ছোট ছোট ছেলেগুলোকে একটু ভাত আর আলু সেদ্ধ তো খাওয়াতে পারব! পর দিন আর এক জনও এসে চাল, ডাল আর তেলের প্যাকেট দিয়ে গেলেন। চোখে জল এসে গিয়েছিল।

রোজ সকালে পথ চেয়ে থাকি, যদি কেউ খাবারের প্যাকেট নিয়ে আসেন। তবে এ ভাবে কত দিন চলবে, জানি না। রোজগার করেই খেতে চাই। দান নিতে বড় সম্মানে লাগে।

West Bengal Lockdown Labour
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy