Advertisement
E-Paper

স্ত্রী-কে পুড়িয়ে খুন, যাবজ্জীবন সাজা যুবকের

অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল প্রথম পক্ষের স্ত্রীর। এমনকী, মাকে খুন করার অভিযোগে জেলও খাটতে হয়েছিল তাকে। সেই জেলেই আলাপ হয়েছিল মেয়েটির সঙ্গে। বিয়ের পরে পণের দাবিতে সেই মেয়েটিকেই পুড়িয়ে খুন করার অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা হল ওই ব্যক্তির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৭
সিউড়ি আদালত চত্বরে সাজাপ্রাপ্ত প্রশান্ত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র

সিউড়ি আদালত চত্বরে সাজাপ্রাপ্ত প্রশান্ত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র

অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল প্রথম পক্ষের স্ত্রীর। এমনকী, মাকে খুন করার অভিযোগে জেলও খাটতে হয়েছিল তাকে। সেই জেলেই আলাপ হয়েছিল মেয়েটির সঙ্গে। বিয়ের পরে পণের দাবিতে সেই মেয়েটিকেই পুড়িয়ে খুন করার অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা হল ওই ব্যক্তির।

বৃহস্পতিবার সিউড়ির দ্রুত নিষ্পত্তি আদালতে এই সাজা শোনান অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক উমেশ সিংহ। সাজাপ্রাপ্তের নাম প্রশান্ত মণ্ডল। বাড়ি সাঁইথিয়ার থানার আমোদপুরে। সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশান্তর বিরুদ্ধে স্ত্রী টুকটুকি মণ্ডলকে খুন করা এবং পণের দাবিতে তাঁর উপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দোষীকে যাবজ্জীবনের পাশাপাশি এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছেন বিচারক।’’

সরকারি আইনজীবী জানান, ২০১২ সালের ১৭ জুলাই দুপুরে মারাত্মক ভাবে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসেন প্রশান্তর স্ত্রী টুকটুকি। স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁকে উদ্ধার করে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর দেন বধূর বাপের বাড়িতে। সন্ধ্যায় হাসপাতালেই স্বামী প্রশান্তর বিরুদ্ধে তাঁকে পুড়িয়ে মারার কথা বাপের বাড়ির লোকেদের কাছে জানান টুকটুকি। সে দিনই সাঁইথিয়া থানায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন টুকটুকির বাপের বাড়ির লোকেরা। পরের দিন মারা যান ওই অগ্নিদগ্ধ বধূ। রণজিৎবাবু বলেন, ‘‘ওই মামলায় মোট ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য, তথ্য প্রমাণ দেখে আগেই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। এ দিন সাজা ঘোষণা করলেন।’’

রণজিৎবাবু আরও জানান, পেশায় মোটর মেকানিক প্রশান্তর এটা প্রথম বিয়ে নয়। আগের স্ত্রীরও অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। নিজের মা-কেও খুন করার অভিযোগে বিচারাধীন বন্দি হিসাবে সিউড়ি সংশোধনাগারে ছিল প্রশান্ত। তখনই প্রশান্তর পরিচয় হয় বিবাহ বিচ্ছিন্না টুকটুকিদেবীর সঙ্গে। এক আত্মীয়কে খুনের আভিযোগে সংশোধনাগারে তিনিও বিচারধীন বন্দি ছিলেন। জামিনে ছাড়া পেয়েই প্রথমে রেজিস্ট্রি ও পরে বোলপুরের কঙ্কালীতলায় বিয়ে করেন দু’জনেই।

যদিও মেয়ের এ ভাবে বিয়ে মানতে পারেনি টুকটুকিদেবীর পরিবার। তবু মেয়ের চাপে বিয়ের পরে জামাইকে যৌতুক হিসাবে টাকাকড়ি গয়না দেওয়া হয় বলে দাবি। কিন্তু বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই প্রথমে টুকটুকিদেবীর আগের পক্ষের ছেলে বছর তেরোর সোমনাথ পালের উপর অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। নাতিকে তখনই সাঁইথিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন ওই বধূর বাপের বাড়ির লোকেরা। এর পরে পণের দাবিতে অত্যাচার শুরু হয় স্ত্রী-র উপর। পরিস্থিতি এমন ছিল যে বাপের বাড়িতে এসেও স্বামীর অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতেন না ওই বধূ।

এ দিন সাজা শুনতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন টুকটুকিদেবীর ভাই রাজীব ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘রায়ে আমরা খুশি। এমন শাস্তি হওয়াই উচিত ছিল।’’ সরকারি আইনজীবী জানান, জরিমানার এক লক্ষের মধ্যে ৮০ হাজার টাকা পাবে নিহত বধূর আগের পক্ষের সন্তান। বাকি ১০ হাজার করে পাবে রাজ্য সরকার ও জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্র।

Burned alive imprisonment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy