নির্মীয়মাণ উড়ালপুল। নিজস্ব চিত্র।
উড়ালপুল তৈরিতে গতি আনতে রেলের জমিতে থাকা অবৈধ দখলদার সরাতে সাহায্য করুক প্রশাসন, চাইছেন রেল কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের পাল্টা দাবি, দখল করার অভিযোগ উঠছে যে জমিতে, তা যে তাদের সম্পত্তি, এমন কোনও নথি দিতে পারছেন না রেল কর্তৃপক্ষ। এই টানাপড়েনে পুরুলিয়ার আদ্রায় উড়ালপুল তৈরির কাজ গতি হারিয়েছে বলে অভিযোগ।
অতীতে উড়ালপুলের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান করেছিল সিপিএম। সম্প্রতি দলের প্রাক্তন সাংসদ তথা লোকসভায় রেলের স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিযা আদ্রার ডিআরএমের কাছে সব জটিলতা কাটিয়ে উড়ালপুল তৈরিতে গতি আনারও দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘তিন বছর কাটলেও আদ্রায় উড়ালপুল তৈরির কাজ প্রাথমিক পর্যায়েই আটকে রয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষকে বলেছি, জটিলতা কাটিয়ে কাজে গতি আনতে।” পাশাপাশি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেই উচ্ছেদ করা হোক, দাবি তাঁর।
আদ্রায় উড়ালপুল তৈরির দাবি দীর্ঘ সময়ের। শহরের মাঝ বরাবর রেললাইন থাকায় ট্রেন চলাচলের কারণে দিনের অনেকটা সময় রেলগেট বন্ধ থাকে। এ পরিস্থিতিতে অ্যাম্বুল্যান্স থেকে আগুন নেভাতে যাওয়া দমকলের গাড়ি আটকে পড়েছে, এমন ছবি দেখা গিয়েছে বার বার।
স্থানীয়দের দাবি মেনে ২০১৮-য় রেলের তরফে উড়ালপুল তৈরির কথা ঘোষণা করা হয়। স্থির হয়, রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে উড়ালপুল তৈরি করা হবে। কাজ শুরু হলেও করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউনে তা থমকে যায়। পরে, কাজ শুরু হলেও চলছে ঢিমেতালেই, অভিযোগ শহরবাসীর একাংশের।
রেলের দাবি, উড়ালপুলের যতটুকু অংশ তাদের করার কথা, তা আগামী মার্চের মধ্যে শেষ হবে। তবে রাজ্য সরকার যে অংশের নির্মাণ করবে, সেখানে কাজ শুরুই হয়নি। কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ত দফতর (সড়ক) সূত্রের দাবি, উড়ালপুলের ১,০০৭ মিটারের মধ্যে ৮৫৪ মিটার রেলের এলাকা। সেখানকার বেশিরভাগ অংশে ছোট-বড় দোকান রয়েছে। সেগুলি রেল না সরালে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
সমস্যা মেনে রেলের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, ‘অবৈধ’ দখল উচ্ছেদ করতে গেলে সমস্যা হতে পারে। সে জন্য রাজ্য সরকার তথা প্রশাসনের সাহায্য প্রয়োজন। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য প্রশাসনের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।”
তবে জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘রেল যে জমি তাদের বলে দাবি করে প্রশাসনের সাহায্য চাইছে, তা যে তাদের সম্পত্তি, এমন কোনও নথি দিতে পারছে না।” তাঁর সংযোজন, ‘‘রেলকে অবৈধ দখল সরাতে
অবশ্যই সহায়তা করা হবে। কিন্তু তার আগে রেলকে দেখাতে হবে, ওই জমি তাদের সম্পত্তি।”
ডিআরএম (আদ্রা) মনীশ কুমারের অবশ্য দাবি, “যেখানে উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে, তার কিছু জমি রেলের আর কিছুটা জমি রাজ্য সরকারের। কিন্তু কোন অংশের জমির মালিকানা কার, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। জমি সংক্রান্ত নথি প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও স্পষ্ট ভাবে কিছু জানায়নি প্রশাসন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy