Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Congress

সংখ্যালঘু-প্রশ্নে ভাবনায় কংগ্রেস, উদ্বেগ জোটেও

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে দলীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল আজ, মঙ্গলবার যাচ্ছে ফুরফুরা সাহেবে।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ০৬:২৮
Share: Save:

লোকসভা ভোটেই অশনি সঙ্কেত ছিল। তার পরে নানা রাজ্যের বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সমর্থন কমে যাওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে। বিহারের সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা ভোটে আবার তারই সঙ্গে মাথা তুলেছে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম)। উত্তরবঙ্গের অদূরে সীমাঞ্চল এলাকায় পাঁচ আসন জেতার পরে বাংলায় তৎপরতা বাড়ানোর ঘোষণাও করেছে তারা। সাম্প্রতিক এই ঘটনাবলিতে উদ্বেগ বাড়ছে এ রাজ্যের কংগ্রেসে। উদ্বেগের ছায়া জোট শিবিরেও। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে সক্রিয় হচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে দলীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল আজ, মঙ্গলবার যাচ্ছে ফুরফুরা সাহেবে। সেখানে পীর সাহেবদের সঙ্গে সাক্ষাতের কর্মসূচি রয়েছে তাঁদের। দীপাবলির সময়ের ছুটিতে কলকাতার বাইরে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তাঁকেও জরুরি তলব পাঠিয়ে ফিরিয়ে আনিয়ে ফুরফুরায় নিয়ে যাচ্ছেন অধীরবাবু। বাংলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে যাদের প্রভাব আছে বলে মনে করা হয়, তার মধ্যে ফুরফুরা অন্যতম। বিহারের ভোট এবং মিমের ‘হুঙ্কারের’ প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসের এই ফুরফুরা-দৌত্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই ধরছে রাজনৈতিক শিবির। পাঁচ বছর আগে গত বিধানসভা ভোটের আগেও ফুরফুরার দ্বারস্থ হয়েছিলেন কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব।

ফুরফুরা-সফরের পর দিন, বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায় সভা করতে যাওয়ার কথা প্রদেশ সভাপতির। পূর্বনির্ধারিত সূচিতে না থাকলেও সেখানে যেতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিরোধী দলনেতা মান্নানকে। বাদুড়িয়া সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত কেন্দ্র, তার উপরে সেখানকার বিধায়ক এবং প্রয়াত কংগ্রেস নেতা কাজী আব্দুল গফ্ফর-এর ছেলে কাজী আব্দুল রহিম (দিলু) সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার পরেই বাদুড়িয়ায় সভা করছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘এ রাজ্যের বাংলাভাষী সংখ্যালঘুদের ভোট মিম কতটা পাবে, সেটা পরের কথা। কিন্তু একটা প্রচার শুরু করে দেওয়া হয়েছে যে, সংখ্যালঘুদের জন্য কংগ্রেস, সিপিএম বা তৃণমূল কেউ কিছু করেনি। সংখ্যালঘুদের ভাবাবেগ উস্কে দিয়ে তাঁদের পৃথক কোনও মঞ্চের দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারলে কংগ্রেস ও বামের ক্ষতিই হবে। তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে।’’

ফুরফুরা থেকে ফিরে আজ বিধান ভবনে আলোচনায় বসার কথা প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের। আলিমুদ্দিনে বামফ্রন্টেরও বৈঠক রয়েছে। তার পরে সন্ধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন। যৌথ আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সেখানে আলোচনা হওয়ার কথা। তবে সংখ্যালঘু সমর্থনের বিষয়টি বাম শিবিরকেও ভাবাচ্ছে। এক বাম নেতার কথায়, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও বাম যে ৭৭টি আসন জিতেছিল, তার মধ্যে ৩৭টিই মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর-সহ সংখ্যালঘু এলাকায়। এমনিতেই গত লোকসভা ভোটে আমাদের সংখ্যালঘু সমর্থন অনেকটা তৃণমূলের দিকে গিয়েছিল। এর পরে মিম যদি ওই অঞ্চলে ভাগ বসায়, তা হলে বিপদ অনেক বাড়বে!’’ পরিস্থিতিকে তাই ‘হাল্কা ভাবে’ নেওয়ার পক্ষপাতী নন বাম নেতৃত্বের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Assembly election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE