বাড়িতে ঢুকে বছর আটত্রিশের এক ব্যক্তিকে গুলি করার অভিযোগ উঠল। বুধবার ভোরে পুঞ্চার পাড়ুই গ্রামের ঘটনা। জখম যুবকের নাম পিন্টু সিংহ। চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে কলকাতা রওনা দিয়েছেন পরিজনেরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মিশুকে বলে এলাকায় পরিচিত পিন্টুকে কে বা কারা গুলি করে থাকতে পারে তা ভেবে অবাক পড়শিরা।
বুধবার সকালে গিয়ে দেখা গেল, পিন্টুর বাড়িতে পড়শিদের ভিড়। দাদা বাবলু সিংহ জানান, মঙ্গলবার রাতে পিন্টু কাছেই দাঁদড় আশ্রমে পুজো দেখতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসেছিলেন তাঁর আগেই। বাবলু বলেন, ‘‘কালীপুজোয় মানত ছিল। আমি কয়েক কিলোমিটার দূরে টাটাডি গ্রাম থেকে বলি দেওয়া পাঁঠা নিয়ে যখন বাড়ি ফিরি, তখন প্রায় সাড়ে ৩টে বাজে।’’
তাঁর দাবি, বাড়ি ফিরে উঠোনে তুলসি মঞ্চের সামনে দুই ভাই মুখোমুখি বসেছিলেন। ছুরি দিয়ে ছাড়ানো হচ্ছিল পাঁঠার চামড়া। আলো জ্বলছিল। পিন্টু একটি গলির দিকে পিছন করে বসেছিলেন। হঠাৎ পটকা ফাটার মতো একটা আওয়াজ। আর্তনাদ করে পিন্টু মুখ থুবড়ে প়ড়ে যান। বাবলু বলেন, ‘‘ওর কোমরের নীচ থেকে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল।’’
চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পড়শিরা। বাবলুর দাবি, সবাই মিলে আলো নিয়ে বেরিয়েও কারও দেখা মেলেনি। আওয়াজ পাওয়া যায়নি কোনও গাড়িরও। প্রথমে পুঞ্চা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পরে সেখান থেকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পিন্টুকে। সেখান থেকে বুধবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাবলুর দাবি, চিকিৎসকেরা ক্ষত পরীক্ষা করে বাঁকুড়ায় অস্ত্রোপচার করার ঝুঁকি নেননি। তাঁদের পরামর্শ মতো পিন্টুকে নিয়ে কলকাতায় রওনা হন তাঁরা।
সাম্প্রতিক সময়ে পুঞ্চায় গুলি চালানোর ঘটনার কথা মনে করতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দা ষোড়শী বন্দোপাধ্যায়, বাপি মুখোপাধ্যায়ের মত অনেকেই। বুধবার বাজার এলাকায় এই ঘটনাই ছিল আলোচনার অন্যতম বিষয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল পুলিশ। ভোরেই পৌঁছে যান এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পিন্টু বিয়ে করেননি। আগে পুঞ্চা থানার সামনে দুই ভাই মিষ্টির দোকান চালাতেন। কয়েক বছর হল গ্রামে বাড়ির সামনেই মুদিখানা খুলেছেন। পরিজনদের দাবি, কারও সঙ্গে ঝগড়া ছিল না পিন্টুর। পুলিশের দাবি, তদন্তে কিছু সূত্র মিলেছে। এখনই সামনে আনা যাবে না। তবে গুলি ওয়ানশটার আগ্নেয়াস্ত্র থেকে চালানো হয়েছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের।