Advertisement
০৩ মে ২০২৪
ফের আত্মঘাতী তারাপীঠে

খাবার হাতে লজে, পরে উদ্ধার দেহ

ওই যুবকের কাছ থেকে পাওয়া পরিচয় পত্র দেখে পুলিশ জেনেছে, মৃতের নাম কার্তিক ডোম (২৫)। বাড়ি কলকাতার মানিকতলায়।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তারাপীঠ  শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ হোটেলে এসে ঘর চেয়েছিলেন। হাতে ছিল খাবারের প্যাকেট। কারও কিছু সন্দেহ হয়নি। কিছু পরে তারাপীঠের ওই হোটেল থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল।

ওই যুবকের কাছ থেকে পাওয়া পরিচয় পত্র দেখে পুলিশ জেনেছে, মৃতের নাম কার্তিক ডোম (২৫)। বাড়ি কলকাতার মানিকতলায়। পুলিশ জানিয়েছে, লজের খাতায় ওই যুবকের সম্পর্কে কোনও তথ্য লিপিবদ্ধ ছিল না। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ওই লজের ম্যানেজারকে আটক করেছে পুলিশ।

তারাপীঠে পুজো দিতে এসে আত্মঘাতী হওয়া এই প্রথম নয়। কয়েক বছর আগে পুজো দিতে এসে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন একই পরিবারের ছ’জন। তারপর থেকে হোটেল-লজে পরিচয়পত্র দেখে ঘর দেওয়া আবশ্যিক করে প্রশাসন। নানা অসামাজিক কাজেও রাশ টানা হয়। তারপরেও দুর্ঘটনা, অস্বাভাবিক ম়ৃত্যু এড়ানো যায়নি। মাস দু’য়েক আগেই লজের বারান্দা থেকে পড়ে বিহারের বাসিন্দা এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশের অনুমান ছিল, অতিরিক্ত মদ খেয়ে বেসামাল হয়ে লজের দোতলা থেকে পড়ে যান ওই যুবক।

তারাপীঠ লজ মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবীপ্রসাদ মণ্ডল জানান, এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রে কেউ একা এলে তাঁকে ঘর দেওয়ার আগে দু’বার ভাবা হবে। প্রয়োজনে ওই ব্যক্তির থেকে বাড়ির ফোন নম্বর নিয়ে কথা বলা হবে। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে তাঁকে আর ঘর দেওয়া হবে না। এসডিপিও ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘পরিচয়পত্র দেখে নিয়ম মেনে হোটেল-লজ ভাড়া দেওয়া হচ্ছে কি না, তা দেখতে পুলিশের তরফে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে লজ মালিক থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষকেই সতর্ক হতে হবে।’’

মঙ্গলবার গভীর রাতে তারাপীঠের লজে এসেছিলেন কার্তিক। পুলিশের অনুমান, ওই যুবক এর আগেও ওই লজে একাধিকবার এসেছেন। অনেকের অনুমান, পূর্ব পরিচিত বলেই হয়তো ম্যানেজার গোড়াতেই পর্যটকের নাম লজের খাতায় লিপিবদ্ধ করেননি। লজের এক কর্মীর কথায়, ‘‘ছেলেটি রাতের খাবার সঙ্গে এনেছিল। আচারণও সন্দেহজনক ঠেকেনি। আমরা ভেবেছিলাম কিছু পরেই নাম লিখিয়ে নেব। কিন্তু, সে যে গলায় দ়়ড়ি দিতে পারে মাথাতেই আসেনি।’’

এ দিকে, লজে ঢোকার পরে বেশ কিছু সময় পেরিয়ে গেলেও কার্তিকের দেখা না পেয়ে সন্দেহ হয় ম্যানেজারের। পরে জানলার ফাঁক দিয়ে তিনি দেখতে পান ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন ওই যুবক। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে যুবকটির দেহ নামিয়ে রামপুরহাট হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেই ময়না-তদন্ত হয়। রাত পর্যন্ত পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Youth Suicide Dead Body
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE