বাবার পাশে অশোক। ছবি: শুভ্র মিত্র
কাজটা পুলিশের রুটিনের মধ্যেই পড়ে। ঠিক সেটাই করে বাহবা কুড়োলেন সোনামুখী শহরের এক যুবক।
দু-তিন ধরেই শহরের ইতিউতি দেখা যাচ্ছিল বাইশ-চব্বিশ বছরের এক ভবঘুরেকে। বাঁ পায়ে গভীর ঘা। ওই অবস্থাতেই এর-ওর বাড়ির বারান্দায় শুয়ে থাকছিলেন। চেয়ে, চিন্তে পেট চালাচ্ছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির বারান্দায় সেই যুবককে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অমলনগর এলাকার বাসিন্দা সুনন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলে জানতে পারেন ছেলেটির নাম অশোক রাম। বাবার নাম বিশ্বনাথ রাম। বাড়ি বিহারের কানোয়া গ্রামে। কিন্তু জেলা বা পোস্ট অফিসের নাম জানাতে পারেননি যুবক। যতটুকু জানতে পেরেছেন থানায় জানিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় এলাকাবাসীকে নিয়ে ওই ভবঘুরেকে সোনামুখী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে দেন সুনন্দনবাবু।
নাহ্, এখানেই থামেননি। বিহারের কানোয়া কোথায়, রীতিমতো নেট ঘেঁটে খুঁজে বের করেন সুনন্দনবাবু। জানতে পারেন, ওই গ্রামটি সীতারামপুর জেলার বেলা থানার অন্তর্গত। সেখানকার পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই যুবকের বাবা বিশ্বনাথবাবুকে গোটা বিষয় জানান তিনি। ইতিমধ্যে পুলিশও ওই থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিশ্বনাথবাবুকে আসতে বলে। নিখোঁজ ছেলের খবর পেয়ে রবিবারই সোনামুখীতে এসে ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে যান বিশ্বনাথবাবু।
ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরাতে পেরে নিশ্চিন্ত হতে পেরেছেন সুনন্দনবাবু। হাসি হাসি মুখে বললেন, ‘‘দিনমজুর পরিবারের অশোক আমদাবাদে কাজে গিয়ে বছর চারেক আগে কোনও ভাবে হারিয়ে গিয়েছিল। এত দিন পরে ওকে ঘরে ফেরানো গেল।’’ যাওয়ার খরচ হিসেবে পকেট থেকে দু’হাজার টাকাও দিয়েছেন এই শুভাকাঙ্খী। সাহায্য করেছে পুলিশও। পুলিশ সূত্রের খবর, অশোককে নতুন জামা-প্যান্ট কিনে দেওয়া হয়েছে। হাতে কিছু টাকাও দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বনাথবাবুর সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর ভাই ইন্দর রাম। সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঘরের ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়ান তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy