Advertisement
E-Paper

‘কাঁথা নিয়ে বিবাদে খুন’

স্থানীয় সূত্রের খবর, মণিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের বারান্দায় গরমের সময়ে গ্রামের অনেকে রাতে ঘুমাতে যান। শুক্রবার লকডাউন থাকায় পুলিশের টহলের ভয়ে অনেকে রাতে স্কুলমুখো হননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:০৮
পরিবারকে সান্ত্বনা। নিজস্ব চিত্র

পরিবারকে সান্ত্বনা। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের বারান্দায় শুতে গিয়ে ‘কাঁথা নিয়ে বিবাদে’ খুন হয়ে গেলেন এক যুবক। বাঁকুড়ার রাইপুর থানার মণিপুর গ্রামে শুক্রবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম লক্ষ্মীকান্ত দেশোয়ালি (৩৫)। মণিপুরের জুনিয়র হাইস্কুলের বারান্দা থেকে শনিবার সকালে পুলিশ তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। কাঠ দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে খুনের অভিযোগে পুলিশ পরে পড়শি ঋষি দেশোয়ালিকে গ্রেফতার করে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে রক্ত মাখা দু’টি কাঠের টুকরোও।

এ দিন বেলায় ঘটনাস্থলে যান এসডিপি (খাতড়া) বিবেক বর্মা। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার রাতে স্কুলের বারান্দায় ঋষির সঙ্গে লক্ষ্মীকান্ত শুয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে ঋষি পুলিশের কাছে দাবি করে, ঘুমনোর সময়ে একটি কাঁথা নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। সেই সময় রাগের মাথায় পাশে থাকা কাঠ দিয়ে সে লক্ষ্মীকান্তের মাথায় আঘাত করে। তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে ঋষিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ বহু চেষ্টা করেও এ দিন অভিযুক্তের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঋষি পেশায় দিনমজুর।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মণিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের বারান্দায় গরমের সময়ে গ্রামের অনেকে রাতে ঘুমাতে যান। শুক্রবার লকডাউন থাকায় পুলিশের টহলের ভয়ে অনেকে রাতে স্কুলমুখো হননি। গিয়েছিলেন শুধু লক্ষ্মীকান্ত ও ঋষি। লক্ষ্মীকান্তের জেঠতুতো দাদা সুনীল দেশোয়ালি বলেন, ‘‘লক্ষ্মীকান্ত দিনমজুরি করে সংসার চালাত। কারও সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল না। তাই এ দিন সকালে স্কুলের বারান্দায় তার রক্তমাখা দেহ দেখে চমকে গিয়েছিলাম। কে তাকে খুন করেছে, ভেবে পাইনি।’’

নিহতের স্ত্রী লক্ষ্মী দেশোয়ালি বলেন, ‘‘স্বামী শুক্রবার বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। রাতে আর ফেরেননি। এ দিন সকালে খবর পাই, স্কুলের বারান্দায় তাঁর দেহ পড়ে রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, লক্ষ্মীকান্ত প্রায় রাতে নেশা করলেও কারও সঙ্গে ঝামেলা করতেন না। নেশা বেশি হলে বাড়ি ফিরতেন না। স্কুলের বারান্দায় রাত কাটিয়ে সকালে বাড়ি ফিরতেন। শুক্রবার রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় তাই নিশ্চিন্তে ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘স্বামীর উপার্জনেই আমাদের সংসার চলে। তিন নাবালক সন্তান ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে কী ভাবে সংসার চালাব, বুঝতে পারছি না!’’

গ্রামবাসীর একাংশের নালিশ, স্কুলে পাঁচিল নেই। তাই রাতের অন্ধকারে ওই স্কুল চত্বরে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজকর্মের আখড়া বসে বলে তাঁদের অভিযোগ। তাঁরা অবিলম্বে ওই স্কুলে পাঁচিল দেওয়ার দাবি তুলেছেন। মণিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকান্ত কুণ্ডু বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। পাঁচিল না থাকার জন্য বহিরাগতেরা যখনতখন স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়ে। পাঁচিলের জন্য স্কুল শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছে। কিন্তু তা অনুমোদন পায়নি।’’

Crime Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy