Advertisement
E-Paper

চোর সন্দেহে ‘গণপিটুনি’, মৃত্যু যুবকের

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার উপরজাবর গ্রামে। আহত হয়েছেন তাঁর সঙ্গী।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৬
গৌরীশঙ্কর কুমার।

গৌরীশঙ্কর কুমার।

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার উপরজাবর গ্রামে। আহত হয়েছেন তাঁর সঙ্গী। বুধবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম গৌরীশঙ্কর কুমার (৩৫)। তাঁর বাড়ি কোটশিলা থানার বড়রোলা গ্রামে। আহত বছর বত্রিশের সাবির আনসারি ঝাড়খণ্ডের জরিডি থানার আরাজু গ্রামের বাসিন্দা। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন।

পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, চোর সন্দেহে দু’জনকে ঘিরে ধরে মারধর করেন কিছু লোক। এক জন মারা গিয়েছেন। অন্যজন আহত হলেও তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। পুলিশএকটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছেন। তাঁরা চুরি করতে গিয়েছিলেন কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

ঝাড়খণ্ড লাগোয়া উপরজাবর গ্রামের কাছেই জঙ্গল। ওই জঙ্গলে চরতে যাওয়া গবাদি পশু কিছুদিন ধরেই চুরি যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বাসিন্দারা সতর্ক ছিলেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কয়েকজন গ্রামবাসীর নজরে আসে, গ্রামের কাছে জঙ্গলে একটি গাছে দু’টি গবাদি পশু বাঁধা রয়েছে। ওঁত পেতেছিলেন কয়েকজন। কিছু পরে সেখানে ওই দুই যুবক সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি। চোর সন্দেহে ওই দু’জনকে ধরে বেধড়ক মারধর শুরু করেন কিছু লোক। পরে খবর যায় কোটশিলা থানায়।

রাতেই পুলিশ গ্রামে পৌঁছয়। দু’জনকে উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার ভোরে কোটশিলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক গৌরীশঙ্করকে মৃত বলে জানান। তাঁর দেহে আঘাতের চিহ্ন দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে। সাবিরের হাত ও মুখে ভারী চোট রয়েছে। হাসপাতালে তিনি দাবি করেন, ‘‘গৌরীশঙ্কর আমাকে একটা কাজের জন্য নিয়ে গিয়েছিল। কী কাজ বলেনি। হঠাৎ গ্রামের কিছু লোকজন আমাদের ঘিরে ধরে মারধর শুরু করেন।’’

নিহতের দেহ পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তাঁর দাদা মথুর কুমার বলেন, ‘‘ভাই আলাদা থাকত। আমার সঙ্গে অনেক দিন ধরেই সম্পর্ক নেই। পুলিশের কাছে খবর পেয়ে এসেছি। কী কারণে মারা গেল জানি না।’’ সাবিরের শ্বশুর মনিরুদ্দিন আনসারি বলেন, ‘‘গৌরীশঙ্করের সঙ্গে জামাইয়ের পরিচয় ছিল। তাঁরা উপরজাবরে কী করতে গিয়েছিল জানি না। লোকে বলছে ওরা না কি চুরি করতে গিয়েছিল। এমন অভিযোগ আগে শুনিনি।’’ তবে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় তাঁরা কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোনও রকম সন্দেহজনক কিছু দেখলে বাসিন্দারা পুলিশকে জানাক। কিন্তু, তাঁরা আইন হাতে তুলে নিয়ে মারধর করতে পারেন না। তাতে উল্টে তাঁরা নিজেদের বিপদ

ডেকে আনবেন।’’

Crime Violence Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy