Advertisement
E-Paper

অশোক ঘোষ হত্যায় অভিযুক্তের আগাম জামিন

খুনের ঘটনার সাত মাস পরেও দুই অভিযুক্তের কারও নাকি নাগাল পায়নি পুলিশ। আগাগোড়াই তাদের ‘ফেরার’ বলে দাবি করা হয়েছে। অথচ সেই অভিযুক্তেরাই আদালতে এসে আগাম জামিন নিয়ে গিয়েছেন। খুনে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে।

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩১

খুনের ঘটনার সাত মাস পরেও দুই অভিযুক্তের কারও নাকি নাগাল পায়নি পুলিশ। আগাগোড়াই তাদের ‘ফেরার’ বলে দাবি করা হয়েছে। অথচ সেই অভিযুক্তেরাই আদালতে এসে আগাম জামিন নিয়ে গিয়েছেন। খুনে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে।

গত ১২ অগস্ট সন্ধ্যায় বীরভূমের খয়রাশোলে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন খয়রাশোলের প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি অশোক ঘোষ। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত, বর্তমান ব্লক তৃণমূল সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায় ও তাঁর ভাই রজত মুখোপাধ্যায়ের আগাম জামিন নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিহতের পরিবারের আইনজীবীর অভিযোগ, রাজ্য সরকারই ওই খুনের মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে সিউড়ি আদালতে। তার জেরেই এই জামিন। সে কথা অস্বীকার করেননি অশোক মুখোপাধ্যায়ও। বলেছেন, “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলাম। ৩২১ ধারায় রাজ্য সরকার মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়েছে বলেই জামিন পেলাম।”

যদিও সিউড়ি আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার রঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “অশোক মুখোপাধ্যায় ও তাঁর ভাই নিজেদের করা আবেদনের ভিত্তিতেই জামিন পেয়েছেন।” ফেরার দুই অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করেছিলেন কিনা, তার উত্তর অবশ্য তিনি দেননি।

অশোক মুখোপাধ্যায়-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিহতের স্ত্রী বিজয়া ঘোষ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সোমবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজয়াদেবী। তাঁর বক্তব্য, “একটি খুনের মামলা রাজ্য সরকার কেন হঠাৎ তুলে নিতে চাইছে? আমার স্বামীকে যারা খুন করল, তাদের পুলিশ গ্রেফতার করল না। তারা জামিনও পেয়ে গেল। ন্যায় বিচার চাইতেই আমি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।” তাঁদের আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, “রাজ্য সরকার ৩২১ ধারায় মামলাটি তুলে নিতে চেয়ে একটি আবেদনপত্র (মেমো নম্বর ৯২৮-সি/আরও/ডব্লিউ-০১/১৪) ‘লিগাল রিমামব্রান্স’ ও জেলাশাসক মারফত সিউড়ি আদালতে পাঠিয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ১২ মার্চ আদালত থেকে অভিযুক্তদের মধ্যে ওই দু’জন জামিন পেয়েছেন।”

খুনের ঘটনার পরে নিহত অশোক ঘোষকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে দলের কর্মীদেরই তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূুলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দলীয় কার্যালয়ে পার্থবাবুকে আটকেও রাখা হয়। বিক্ষোভকারীদের তাড়া খেয়ে পার্থবাবুকে ফেলেই গাড়িতে চেপে পালিয়ে যান অনুব্রত। প্রথমে নিহত অষোক ঘোষের ছেলে বিশ্বজিৎ দাবি করেছিলেন, “অশোক মুখোপাধ্যায় আর অনুব্রত মণ্ডলই চক্রান্ত করে বাবাকে খুন করিয়েছেন।” যদিও এফআইআরে তাঁরা অনুব্রতর নাম দেননি।

ওই খুনে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার এবং খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া তদন্ত এগোয়নি বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে বহুবার পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে নিহতের পরিবার। পুলিশ অবশ্য ৯০ দিনের মধ্যে অশোক মুখোপাধ্যায়-সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল। কিন্তু অশোক ঘোষ গোষ্ঠীর অভিযোগ, অশোক মুখোপাধ্যায় তৃণমূল নেতৃত্বের ছত্রছায়ায় থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি।

এ দিন সোমনাথবাবু বলেন, “মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ওই আবেদনের উপর ভিত্তি করে বাকি সাত অভিযুক্তও আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। সোমবার তথ্যগত ত্রুটির জন্য বিচারক তা মঞ্জুর করেননি। তবে তাঁরাও হয়তো যে কোনও দিন জামিন পাবেন।”

dayal sengupta ashok gupta ashoke ghosh murder case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy