Advertisement
E-Paper

আড়াই বছরেও মজুরি না মেলার অভিযোগ

আড়াই বছর পার হয়ে গেলেও প্রাপ্য মজুরি মেলেনি, এই অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন ১০০ দিন কাজের শ্রমিকেরা। বুধবার রামপুরহাট ২ ব্লকের হাঁসন ১ পঞ্চায়েতের ঘটনা। মাড়গ্রাম থানার অনন্তপুর সংসদের ওই মজুরদের আরও দাবি, গত দেড় বছর ধরে সেখানে ১০০ দিন প্রকল্পে কোনও কাজও হয়নি। গোটা বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা এ দিন ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন এবং বর্তমান প্রধান, পঞ্চায়েতের সচিব, নির্বাহী আধিকারিকের কাছে উত্তর চান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৪ ০০:১৫
হাঁসন ১ পঞ্চায়েতের সামনে জমায়েত। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

হাঁসন ১ পঞ্চায়েতের সামনে জমায়েত। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

আড়াই বছর পার হয়ে গেলেও প্রাপ্য মজুরি মেলেনি, এই অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন ১০০ দিন কাজের শ্রমিকেরা। বুধবার রামপুরহাট ২ ব্লকের হাঁসন ১ পঞ্চায়েতের ঘটনা। মাড়গ্রাম থানার অনন্তপুর সংসদের ওই মজুরদের আরও দাবি, গত দেড় বছর ধরে সেখানে ১০০ দিন প্রকল্পে কোনও কাজও হয়নি। গোটা বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা এ দিন ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন এবং বর্তমান প্রধান, পঞ্চায়েতের সচিব, নির্বাহী আধিকারিকের কাছে উত্তর চান। কেউ-ই অবশ্য সদুত্তর দিতে পারেননি বলে তাঁদের অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত কোথাও লিখিত অভিযোগ না করলেও প্রাপ্য মজুরি না মিললে তাঁরা আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন।

যদিও শ্রমিকদের ওই অভিযোগের প্রসঙ্গে রামপুরহাট ২ ব্লকের ভারপ্রাপ্ত বিডিও অর্নিবাণ সাহু দাবি করেন, “যতটুকু জানি, ওঁদের দাবি মতো ১০০ দিন প্রকল্পে কাজ করা বাবদ কোনও মজুরি বাকি নেই। তবে, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারার জন্য কয়েকটি ক্ষেত্রে শ্রমিকদের দাবি মতো মজুরি দেওয়া যায়নি।” যদিও প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ মোদক জানিয়েছেন, শ্রমিকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। প্রসঙ্গত, প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিন প্রকল্পে টাকা খরচ করার ক্ষেত্রে হাঁসন পঞ্চায়েত এই জেলায় বহু পঞ্চায়েতকেই পিছনে ফেলেছিল। অথচ এমন একটি পঞ্চায়েতকে ঘিরেই শ্রমিকেরা প্রাপ্য মজুরি না মেলার অভিযোগ তুলছেন।

বিক্ষোভাকারীদের অভিযোগ, গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যকে শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য একাধিক বার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তিনি সেই উদ্যোগ নেননি। গ্রামবাসী চাঁদ মহম্মদ, হুমায়ুন কবীর, মহম্মদ খাদেম আলিরা বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানকেও বলেছি। তিনিও কিছু করেননি। বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধানও কার্যত হাত তুলে দিয়েছেন।” তাঁদের অভিযোগ, মজুরি নিয়ে সমস্যা না মেটায় গ্রামের বাসিন্দাদের নতুন করে ১০০ দিন প্রকল্পে আর কোনও কাজও দেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গোটা ঘটনার নেপথ্যে তাঁরা পঞ্চায়েতের সচিব এবং নির্বাহী আধিকারিককেই বেশি দায়ী করছেন।

এ দিকে, ওই শ্রমিকদের মজুরি না মেলার পিছনে প্রশাসন থেকে পঞ্চায়েত বিভিন্ন পক্ষের বিভিন্ন রকমের যুক্তি শোনা যাচ্ছে। কেউ-ই প্রকৃত কারণ খোলসা করতে পারেননি। গোটা বিষয়টি নিয়েই কোনও তথ্য নেই পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান তৃণমূলের জাহ্নবী লেটের। আবার অনন্তপুর গ্রাম থেকে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের কুদরত আলি বলছেন, “অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী আড়াই বছর আগে গ্রামের ৭-৮টি পুকুরে মাটি কাটার কাজ হয়েছিল। ওই কাজের হিসেব অনুযায়ী ১০ লক্ষেরও বেশি টাকা শ্রমিকদের প্রাপ্য। তার জন্য পঞ্চায়েতে কাজের যাবতীয় বিল-ভাউচার জমা দেওয়া হয়েছে। তবুও কেন শ্রমিকেরা ওঁদের প্রাপ্য টাকা পাচ্ছেন না, তা বুঝতে পারছি না।” যদিও ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান কংগ্রেসের বিনোদ লেট জানান, বছর দেড়েক আগে ১০০ দিন প্রকল্পে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ ভুল-ত্রুটির অভিযোগ এনে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এক শ্রমিক একটি মামলা করেন। সেই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়াতেই এই সমস্যা। তাঁর দাবি, “ওই মামলার কারণে শুধু অনন্তপুরই নয়, পঞ্চায়েতের অনেক সংসদেই বহু শ্রমিকের প্রাপ্য টাকা এখনও এসে পৌঁছয়নি।” অনির্বাণবাবু অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।

অন্য দিকে, পঞ্চায়েতের সচিব মুকুলেন্দু রায়ের দাবি, “অনন্তপুর গ্রামে ১০০ দিন প্রকল্পে কাজের কোনও বিল বা ভাউচারই আমার কাছে এসে পৌঁছয়নি।” একই দাবি পঞ্চায়েতের নির্বাহী আধিকারিক অরুণেশ ঘোষেরও। পরস্পরবিরোধী ওই দাবির মাঝেই বিক্ষোভকারী ষাটোর্ধ্ব রামচন্দ্র মাল, উজির আলি, মহম্মদ সেলিম, লালু মালদের আক্ষেপ, “গায়ের ঘাম ঝরিয়ে কেউ ২৮ দিন, কেউ ৩০ দিন, কেউবা তারও বেশি দিন কাজ করেছি। অথচ আড়াই বছরেও প্রাপ্য টাকা পেলাম না। এই জীবদ্দশায় ওই টাকা আর পাব কি না, কে জানে!”

100 days work margram salary
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy