Advertisement
E-Paper

ইতিহাসের স্বীকৃতি চায় মাসড়া

এক সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী হয়েও বঞ্চিত মাসড়া। গ্রামের পূর্বপাড়ায় অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরকে ঘিরে এমনই ক্ষোভের সুর গোটা এলাকায়। অভিযোগ, প্রশাসনিক উদাসীনতায় প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরেরও পুরনো শিবমন্দির আজও তার প্রয়োজনীয় স্বীকৃতি পায়নি।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৫
মাসড়া গ্রামের শতাব্দী প্রাচীন শিবমন্দির।—নিজস্ব চিত্র।

মাসড়া গ্রামের শতাব্দী প্রাচীন শিবমন্দির।—নিজস্ব চিত্র।

এক সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী হয়েও বঞ্চিত মাসড়া।

গ্রামের পূর্বপাড়ায় অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরকে ঘিরে এমনই ক্ষোভের সুর গোটা এলাকায়। অভিযোগ, প্রশাসনিক উদাসীনতায় প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরেরও পুরনো শিবমন্দির আজও তার প্রয়োজনীয় স্বীকৃতি পায়নি। ঘটনাচক্রে, শিবরাত্রি উপলক্ষে সোমবার সকাল থেকেই চারচালা ওই মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালা শুরু হয়েছে। মনোস্কামনা পূরণের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন। সেই সঙ্গেই তীব্র হয়েছে মন্দিরকে প্রাপ্য স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও।

গ্রামের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী জিতেনকুমার সাহা বলছেন, “এই শিবমন্দির আমাদের গর্ব আর অহঙ্কারের বিষয়। কারণ, প্রতিষ্ঠার বয়সকাল অনুযায়ী এটিই বীরভূম জেলার সবচেয়ে প্রাচীন মন্দির।” তিনি জানান, বিনয় ঘোষ রচিত পশ্চিমবঙ্গ সংস্কৃতি গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে ইলামবাজার থানার ঘুরিষার মন্দিরটিকেই (যার প্রতিষ্ঠা কাল বিনয়বাবু উল্লেখ করেছেন ১৫৫৫ শকাব্দ, অর্থাত্‌ ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দ) এই জেলার সবচেয়ে প্রাচীন মন্দির বলে লেখা হয়েছে। কিন্তু, তাঁর দাবি, মাসড়ার এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা কাল ১৫৫৩ শকাব্দ, অর্থাত্‌ ১৬৩১ খ্রিস্টাব্দ। টেরাকোটা এই মন্দিরের গায়ে খোদাই করা সেই প্রতিষ্ঠা কাল আজও অটুট রয়েছে। আর তাতেই আপত্তি মাসড়াবাসীর।

ওই হিসেব দেখিয়েই প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে মন্দিরটিকে তার প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছেন জিতেনবাবুরা। ইতিমধ্যে মাসড়া গ্রামের অজানা ইতিহাস নিয়ে লেখালেখি শুরু করেছেন আর এক বাসিন্দা মৈনুদ্দিন হোসেন। তিনি বলেন, “মাসড়া গ্রামের বহু ইতিহাসের সাক্ষী। গ্রামের এই ইতিহাস নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতামত দরকার। আমাদের গ্রামের অবহেলিত এই ইতিহাসকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।” একই দাবি গ্রামের বর্তমান প্রজন্ম অতীন সাহা, বিট্টু সাহাদেরও। তাঁদের ক্ষোভ, “বীরভূমের ইতিহাস যাঁরা রচনা করেছেন, তাঁরা মহম্মদবাজার, ডেউচা, ডামড়া, নারায়ণপুর পর্যন্ত ঘুরে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু, মাসড়া গ্রাম নিয়ে তাঁরা উত্‌সাহ দেখাননি।”

মূল কাঠামোকে অক্ষত রেখে ১৯৯৯ সালে গ্রামবাসীরাই উদ্যোগ নিয়ে প্রাচীন এই মন্দিরটি সংস্কার করেছেন। শিবরাত্রি উপলক্ষে এ বার মন্দিরের গায়ে নতুন রঙের পোঁচও পড়েছে। সোমবার সকাল থেকে মন্দির চত্বরে প্যান্ডেল তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। সেখানে তিন দিন ধরে বসবে পালা কীর্তন গানের আসর। উত্‌সব শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামের সবাই জাতপাতের ভেদাভেদ ভুলে মাটিতে বসে পাত পেড়ে খিচুড়িও খাবেন। সে সবরেই প্রস্তুতির মাঝে নিজেদের স্বীকৃতির দাবিতে আরও সরব হয়েছে মাসড়াবাসী।

masra sibmandir temple apurba chattopadhay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy