Advertisement
E-Paper

চেকড্যাম সংস্কার নিয়ে তৃণমূলে দ্বন্দ্ব

চেকড্যাম নির্মাণে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন খোদ শাসকদলেরই জেলা পরিষদ সদস্য। গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা। ওই কাজের পুনরায় মাপজোক করার দাবি তুলে গঙ্গাজলঘাটির বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্যা মঙ্গলা মাজি। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়েছে জেলা প্রশাসনও। আজ সোমবার, সেই চেকড্যামের কাজ খতিয়ে দেখতে এবং ড্যামের কাজের পরিমাপ করতে প্রশাসনিক দল যাবে বলে জানিয়েছেন বিডিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০১:০৯

চেকড্যাম নির্মাণে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন খোদ শাসকদলেরই জেলা পরিষদ সদস্য।

গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা। ওই কাজের পুনরায় মাপজোক করার দাবি তুলে গঙ্গাজলঘাটির বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্যা মঙ্গলা মাজি। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়েছে জেলা প্রশাসনও। আজ সোমবার, সেই চেকড্যামের কাজ খতিয়ে দেখতে এবং ড্যামের কাজের পরিমাপ করতে প্রশাসনিক দল যাবে বলে জানিয়েছেন বিডিও। তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যার এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে গঙ্গাজলঘাটি এলাকায় ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসে পড়ল। জেলাপরিষদ সদস্যার বিরোধীতায় মুখ খুলছেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের একাংশ। গঙ্গাজলঘাটির বিডিও মলয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জেলা পরিষদের সদস্যা চেকড্যামের পুনরায় পরিমাপ করার দাবি জানিয়েছেন। সেই দাবির ভিত্তিতেই প্রশাসনের লোকজন ওই ড্যাম ফের পরিমাপ করবে।”

স্থানীয় সূত্রে খবর, গঙ্গাজলঘাটির দেউলি গ্রামের ঝরিয়া চেকড্যামের কাজকে কেন্দ্র করেই এই বিতর্ক। উদ্যানপালন দফতরের বরাদ্দ করা প্রায় ১৫ লক্ষ টাকায় ঝরিয়া জোড়ের উপরে একটি চেকড্যাম গড়ার কাজ শুরু হয়। ওই কাজ করে গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতি। গত মার্চে শুরু হওয়া সেই কাজ কয়েক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ টাকায় যে কাজ হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ টাকায় চেকড্যাম খনন করা হয়নি। উল্টে এলাকার কিছু আগাছা সাফাই করা হয়েছে এবং চেকড্যামের পাড়ে কিছু মাটি ফেলে পাড় মেরামতির কাজ করা হয়েছে মাত্র। তাঁরা এ বিষয়ে স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যা মঙ্গলা মাজির কাছে অভিযোগ জানান। মঙ্গলাদেবী সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিডিও-র কাছে একটি চিঠি দিয়ে কাজটির পুনরায় পরিমাপ করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, “এলাকাবাসী আমাকে জানিয়েছেন ওই কাজের পরিমাপে কারচুপি করে প্রকল্পের টাকা তোলা হয়েছে। আদপে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই জনপ্রতিনিধি হিসাবে জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতেই আমি এই কাজের পুনরায় পরিমাপ করার দাবি জানিয়েছি।”

এ দিকে এই ঘটনায় মঙ্গলাদেবীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যদের একাংশ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই পঞ্চায়েত সমিতির কাজে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের নিয়ে সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ তুলে জেলা তৃণমূল নেতা অরূপ খাঁ এবং দলের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গঙ্গাজলঘাটির শতাধিক তৃণমূল কর্মী। নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ব্লক সভাপতির অপসারণের দাবিও তুলেছিলেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধেরা মঙ্গলাদেবীর ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই ঘটনার পরেই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করায় অভিযোগকারীদের ‘সমঝে’ দেওয়া হয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে।

কিন্তু গঙ্গাজলঘাটিতে তৃণমূলের অন্দরের জলঘোলা থামেনি। চেক ড্যাম নিয়ে তোলা মঙ্গলাদেবীর অভিযোগকে কেন্দ্র করে ফের তেতে উঠেছে এই পঞ্চায়েত সমিতি। রাজনৈতিক ভাবেও জল ঘোলা হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জীতেন গরাইয়ের বক্তব্য, “মঙ্গলাদেবী প্রকল্পটি নিজের গ্রাম ডাংজুড়িয়ায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়ায় এই ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। আমি বিষয়টি দলকে জানিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলব।” তাঁর দাবি, এই পঞ্চায়েত সমিতিতে স্বচ্ছ ভাবে কাজ করা হচ্ছে। ওই কাজে কোনও দুর্নীতি হয়নি। জীতেনবাবুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মঙ্গলাদেবী বলেন, “আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। তাঁরাই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। তাই যে কাজে মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করেন তা খতিয়ে দেখা দরকার বলেই মনে করি।” অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্যই চেকড্যামের পুনরায় পরিমাপ করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

tmc inter clash inter clash of tmc renovation of check dam check dam gangajalghati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy