Advertisement
E-Paper

জৌলুস হারিয়েছে, তবু উৎসাহে ঘাটতি নেই রাজ-রাজেশ্বরী পুজোর

গ্রামের ষষ্ঠীতলা, কালীতলা, মনসাতলা সবই গড়ে উঠেছে রাজেশ্বরী মন্দির ঘিরেই। এক সময় এই রাজ-রাজেশ্বরী পুজো ঘিরেই দু’দিন ধরে চলত যাত্রানুষ্ঠান। এখন সৈই জৌসুল হয় নেই ঠিক কথা। তবে চার দিনের আনন্দে ঘাটতি নেই নলহাটি থানার ধরমপুর গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৪ ০০:৪২
নলহাটিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নলহাটিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

গ্রামের ষষ্ঠীতলা, কালীতলা, মনসাতলা সবই গড়ে উঠেছে রাজেশ্বরী মন্দির ঘিরেই। এক সময় এই রাজ-রাজেশ্বরী পুজো ঘিরেই দু’দিন ধরে চলত যাত্রানুষ্ঠান। এখন সেই জৌসুল হয় না ঠিক কথা। তবে চার দিনের আনন্দে ঘাটতি নেই নলহাটি থানার ধরমপুর গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে।

এক চালির এই মূর্তি গ্রামবাসীদের ঐশ্বর্য এবং আরোগ্যের ধারক এবং বাহক। তাই তিনি এখানে রাজ-রাজেশ্বরী। জৈষ্ঠ্য মাসের ষষ্ঠী তিথির পর সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী চারদিন ধরে এই পুজো হয়। এই পুজো ঘিরেই গ্রামের মাঝখানে রাজ-রাজেশ্বরী তলা যা ধরমপুর গ্রাম কেন আশপাশ সমস্ত গ্রামের মানুষের কাছে খুব সহজেই পরিচিত। আর সেই চেনা গণ্ডির মধ্যে গ্রামের সংস্কৃতি খেলাধূলা আরও বিভিন্ন গঠনমূলক কাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রাজ রাজেশ্বরী সমিতি। আর রাজ রাজেশ্বরী তলার পুরনো আমলের উঁচু জায়গাগুলোয় গড়ে উঠেছে রাজ রাজেশ্বরী সমিতির ভবন। হয়েছে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, সমবায় ব্যাঙ্ক। গ্রামের ঐতিহ্য বহনকারী রাজ-রাজেশ্বরী দেবীর সেই একচালা মাটির খড়ের চালার মন্দির এখন পাকা দালানের রূপ পেয়েছে। আর সেই মন্দিরের পাশে গ্রামের অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রও সেই রাজ-রাজেশ্বরী তলাতেই। গ্রামবাসী ব্রজনাথ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, কার্তিক মাসে গ্রামের পশ্চিম, পূর্ব ও উত্তর প্রান্তের মাঠে যখন কচি ধানের শিষে পাক ধরে তখন থেকে মাঠ পাহারা দেওয়ার জন্য প্রতি মাঠের আট জন করে দল তৈরি হয়। গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে সেই দল গঠিত হয়। সেই মাঠ পাহারা দিয়ে চুক্তি অনুযায়ী রাজ-রাজেশ্বরী মায়ের পুজোর জন্য ধান দিতে হয় মাঠ পাহারাদের। সেই ধান বিক্রির টাকায় মায়ের পুজোর খরচ জোগাড় হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে ধরমপুর গ্রামে রাজ-রাজেশ্বরী মায়ের পুজো শুভারম্ভ হল। পুরোহিত রণজি পণ্ডিতের কথায়, “এই ধরনের মূর্তির পুজো পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বংশবাটি গ্রামে হয়। তবে সেখানে মাঘমাসে পুজো হয়। আর কোথাও হয় কি না আমাদের জানা নেই।” গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মীনারায়ণ দত্ত বললেন, “দেবী এখানে ত্রিপুরেশ্বরী রূপে পূজিত হন। শক্তি পুজোর অধিষ্ঠাত্রী বলে এখানে পাঁঠা বলিদান হয়। সপ্তমীর সকালে গ্রামের প্রান্তে কালীসাগরে মঙ্গলঘট ভরে রাজ-রাজেশ্বরী মায়ের পুজো শুরু হয়।” তবে এই পুজোর বৈশিষ্ট্য পুজো শেষ হওয়ার পর বৃষ্টি না হলে মূর্তি বিসর্জন করা হয় না। এক পশলা বৃষ্টি বা ছিটেফোঁটা বৃষ্টির পরেই দেবীকে আবার কালীসাগরের জলে বিসর্জন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামবাসীরা জানালেন, আগে এই পুজো ঘিরে যাত্রা, নাটক হত। এখন আর হয় না। এ জন্য অনেকের মন খারাপ করলেও প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে ধরমপুরবাসী রাজ-রাজেশ্বরী পুজো চালিয়ে যেতে দৃঢ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই এই পুজো ঘিরে গ্রামবাসীর উচ্ছ্বাস ও আবেগ আজও অমলিন।

nalhati raj-rajeswari puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy