Advertisement
E-Paper

তৃণমূল করলে তবেই কাজ, প্রধানের বিরুদ্ধে ডিএমকে অভিযোগ যুবকের

তৃণমূল না করায় একশো দিনের প্রকল্পে পঞ্চায়েত প্রধান কাজ দেননি বলে অভিযোগ তুললেন হুড়ার এক শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক। শ্রমিকদের পানীয় জল বয়ে দেওয়ার কাজ চেয়ে হুড়ার দলদলি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুসুমজোড়িয়া গ্রামের সামন্ত মাহাতো পঞ্চায়েতের কাছে কাজ চেয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০১:৪১

তৃণমূল না করায় একশো দিনের প্রকল্পে পঞ্চায়েত প্রধান কাজ দেননি বলে অভিযোগ তুললেন হুড়ার এক শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক।

শ্রমিকদের পানীয় জল বয়ে দেওয়ার কাজ চেয়ে হুড়ার দলদলি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুসুমজোড়িয়া গ্রামের সামন্ত মাহাতো পঞ্চায়েতের কাছে কাজ চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেই কাজ দেওয়া হয়নি। এরপরেই তিনি সম্প্রতি জেলাশাসকের কাছে ওই মর্মে প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। সামন্তের অভিযোগ, জেলাপ্রশাসন থেকে প্রধানকে কাজ দেওয়ার বিষয়টি দেখতে নির্দেশ দেওয়ার পরেও তিনি কাজ পাননি। এরপরে এখন তিনি পঞ্চায়েতের কাছে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ না দেওয়া গেলে ভাতা দেওয়ার যে নিয়ম, সেই বিধি অনুযায়ী ভাতার দাবি করেছেন। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের প্রভাস বাউরির দাবি, “আমি ওঁকে দল করতে কেন বলব? তিনি প্রতিবন্ধী বলে দাবি করলেও সব কাজই তো করেন। তিনি শ্রমিকদের পানীয় জল দেওয়া ছাড়া অন্য কাজ করতে পারবেন না। এ ভাবে ইচ্ছা মতো কাজ দেওয়া যায় না কি?”

কুসুমজোড়িয়া গ্রামে পুকুর সংস্কারের কাজের জন্য সুপারভাইজারের কাছে শ্রমিকদের নামের তালিকা আসে। সেই তালিকায় নিজের নাম না দেখতে পেয়ে ওই যুবক প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। নিতান্ত দরিদ্র পরিবারের বড় ছেলে সামন্ত সব্জি ফেরি করে সংসার চালান। তাঁর কথায়, “পায়ের সমস্যার জন্য হাঁটতে কষ্ট হয়। স্বাস্থ্য দফতর পরীক্ষা করে আমাকে ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধী বলে জানিয়েছে। তাই ভারী কাজ আমি করতে পারব না বলে প্রতিবন্ধী হিসেবে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে শ্রমিকদের পানীয় জল দেওয়ার কাজ চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রধান জানিয়ে দেন, তৃণমূল করলে তবেই কাজ দেবে। এটা অন্যায়। জেলাশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি।”

প্রসঙ্গত, সামন্তের সঙ্গে ২০০৮ সালেও তত্‌কালীন সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতের একই কারণে বিরোধ বেধেছিল। কাজ না দেওয়ায় তিনি রাজ্যপালের কাছে নালিশ ঠুকে শেষ পর্যন্ত জল বওয়ার কাজ পেয়েছিলেন। এ বার তাই প্রধানের কাছে ওই কাজ চেয়েছিলেন। এই গ্রামের বাসিন্দা সিপিএমের দলদলি লোকাল কমিটির সদস্য ভোলানাথ মাহাতো বলেন, “সামন্ত এলাকায় প্রতিবাদী যুবক হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ করে। সরাসরি জেলা প্রশাসনকে চিঠি লেখে। আমাদের ক্ষমতাসীন পঞ্চায়েতের কাছ থেকে রাজ্যপালকে চিঠি লিখে কাজ পেয়েছিল।’’

এ বার কী হয়েছে? জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “এরকম হওয়ার কথা নয়। ১০০ দিন প্রকল্পে যিনি কাজ চাইবেন তাঁকেই কাজ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে খোঁজ নেব।” প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলাশাসকের দফতর থেকে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসারকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়। সেখান থেকে হুড়া ব্লক অফিস হয়ে দলদল পঞ্চায়েতের কাছে সামন্তকে কাজ দেওয়ার নির্দেশ যায়। হুড়ার বিডিও সুব্রত পালিত বলেন, “বিষয়টি জানি। ওই প্রতিবন্ধী যুবককে কাজ দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে। তাঁকে কাজ দেওয়া হয়েছে কি না পঞ্চায়েতের কাছে জানতে চাইব।”

সামন্তর অভিযোগ, “পঞ্চায়েতে কাজ চাইতে গেলে প্রধান আমাকে সাফ জানিয়ে দেন, ‘তুমি যেখানেই অভিযোগ করনা কেন, তৃণমূল না করলে কাজ পাবে না।’ আমি যেহেতু কোনও দল করি না, তাই বোধহয় আমাকে বঞ্চিত করা হল। প্রশাসনকে জানিয়েছি।” প্রধানের জবাব, “আমরা তো বলছি কাজ দেব। ওঁর নিজের সংসদে কাজ না থাকলে পাশের সংসদে কাজ দেব। কিন্তু উনি তো পঞ্চায়েতে যোগাযোগই করছেন না। আবেদন তো করতে হবে।” যদিও সামন্তের দাবি, প্রধানই আবেদন নিচ্ছেন না। দল করতে বলায় তিনি পঞ্চায়েতে যাচ্ছেন না। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, “কোনও পঞ্চায়েত প্রধানই এমন কথা বলতে পারেন না। আমরা তো কাজ দিতে চাইছি। ওই যুবক যাতে কাজ পান তা দেখব।”

কয়েক দিন আগে বিজেপি জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ করেছিল, এই প্রকল্পে কাজ দেওয়া নিয়ে তৃণমূল দলবাজি করছে। দলের জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “আমাদের কাছে বিভিন্ন জায়গা থেকে এ ধরনের অভিযোগ আসছে। তাই আমরা বিষয়টি জেলাশাসককে দেখতে অনুরোধ জানিয়েছি।”

tmc panchayat head dm youth
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy