পুরুলিয়া জেলায় ক্রমশ শক্তিবৃদ্ধি করছে বিজেপি।
সিপিএম ও তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের বিক্ষিপ্ত ভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ঘটনা বিভিন্ন ব্লক এলাকায় চলছিলই। এ বার ওই তালিকায় ঢুকল রঘুনাথপুর, সাঁতুড়ি ও পাড়া এলাকা। এর ফলে আগামী বছর পুরভোটে রঘুনাথপুর শহরে বিজেপি একটা ফ্যাক্টর হতে চলছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
রঘুনাথপুর শহরের পঞ্চায়েত সমিতির কমিউনিটি হলে তৃণমূল এবং সিপিএম ছেড়ে প্রায় ৫০০ কর্মী-সমর্থক শনিবার বিজেপিতে যোগ দিলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে পাড়া ব্লকের ঝাপড়া-জবড়া পঞ্চায়েতের এক সিপিএম সদস্য মদন মুদি। বিজেপি দলে যোগদানের এই সভার নাম দিয়েছিল ‘নবীন বরণ’। উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র রাজ্যর দুই সহ-সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায়, সুভাষ সরকার এবং পুরুলিয়ার বিজেপি-র সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ জেলা নেতৃত্ব।
লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে পুরুলিয়া জেলার মধ্যে রঘুনাথপুর বিধানসভা কেন্দ্রেই সব থেকে ভাল ফল করেছে বিজেপি। ভালো ফল হয়েছে রঘুনাথপুর পুরসভাতেও। পাঁচটি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে রঘুনাথপুর শহরে বিজেপি-র এই বড়মাপের দলীয় কর্মসূচি ঘিরে লক্ষ্যণীয় সাড়া পড়েছিল এলাকায়। বস্তুত সিপিএমের থেকে তৃণমূলের বেশি সংখ্যক কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। দল ছেড়েছেন রঘুনাথপুর ১ ব্লকের তৃণমূল নেতা মিহির বাউরি, অঙ্কুর বাউরি। তবে তৃণমূলের দাবি, যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁদের আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। রঘুানথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি বলেন, “মিহির বাউরি, অঙ্কুর বাউরিদের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দলবিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।”
তবে মিহিরবাবুদের পাল্টা দাবি, তাঁরা জেলা কমিটির সদস্য। ফলে বিধায়ক তাদের বহিষ্কার করতে পারেন না। মিহিরবাবু বলেন, “বিধায়কের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তাঁরা জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর কাছে গিয়েছিলাম। তাঁর কথা মতো দলের কাজ করছিলাম আমরা। কিন্তু এই দলে গণতন্ত্র নেই বলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।”.
বস্তুত দাবি, পাল্টা দাবি যাই থাক না কেন, শনিবার তৃণমূলের যে অংশের কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিলেন তারা তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে এলাকা সূত্রে জানা যায়। ফলে সেই অংশকে দলে টেনে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত গেরুয়া শিবির।.জেলা সভাপতি বলেন “লোকসভা ভোটের পরে জেলা জুড়েই বিভন্ন ব্লকে তৃণমূল, সিপিএম ছেড়ে লোকজন আমাদের দলে আসছেন। তবে এত বিপুল পরিমাণে যোগদান এই প্রথম ঘটল। এর ফলে রঘুনাথপুরে আমাদের সাংগঠিনক শক্তি বাড়ল।”
এক বছরের মাথায় রঘুনাথপুর পুরসভা নির্বাচন। তার আগে শনিবার রঘুনাথপুরে গড়ে ওঠা ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’ নামের একটি সংগঠনের কর্মীদেরও নিজেদের দিকে টেনে আনে বিজেপি। ওই মঞ্চের সম্পাদক স্বপন বাউরি প্রায় ৫০ জন কর্মীকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এ দিনের সভায় রঘুনাথপুর শহরের বেশ কিছু যুবকও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ পরিচিত তৃণমূলের সমর্থক হিসেবে। অন্যেরা এতদিন সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। শহরে ব্যবসায়ী মহলের একাংশও বিজেপিতে এসেছেন।
এর ফলে রঘুনাথপুরের পুরভোটে সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছে বিজেপি। দলের সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার তাই দাবি করছেন, “আগামী বছরের পুরসভা নির্বাচনে রঘুনাথপুরে আমরা বোর্ড গঠন করছি। তার আভাস সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনেই পাওয়া গিয়েছিল। এ বার শহরে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটি গড়ে পুরসভার দুর্নীতি ও শহরের অনুন্নয়নের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy