Advertisement
E-Paper

দুর্গা, কালীর পরে ছট, তেজি বাজার

দীপাবলির পরে এ বার ছট। টানা উত্‌সবের মরসুমে তেজি পুরুলিয়া জেলার বাজার। ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা পুরুলিয়া জেলায় স্বাভাবিক ভাবেই ছট উত্‌সব বুধবার আড়ম্বরের সাথেই পালিত হল। মূলত বিহারী সম্প্রদায়ের উত্‌সব হলেও ইদানীং ছট উত্‌সব সামিল হতে দেখা যাচ্ছে বাঙালিদেরও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৫
ছট উত্‌সবে মাতল পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া। পুরুলিয়ার সাহেবাঁধে প্রতিবছরের মতো এ বারও বহু মানুষ ছট উপলক্ষে জড়ো হয়ে সূর্য প্রণাম করলেন।

ছট উত্‌সবে মাতল পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া। পুরুলিয়ার সাহেবাঁধে প্রতিবছরের মতো এ বারও বহু মানুষ ছট উপলক্ষে জড়ো হয়ে সূর্য প্রণাম করলেন।

দীপাবলির পরে এ বার ছট। টানা উত্‌সবের মরসুমে তেজি পুরুলিয়া জেলার বাজার।

ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা পুরুলিয়া জেলায় স্বাভাবিক ভাবেই ছট উত্‌সব বুধবার আড়ম্বরের সাথেই পালিত হল। মূলত বিহারী সম্প্রদায়ের উত্‌সব হলেও ইদানীং ছট উত্‌সব সামিল হতে দেখা যাচ্ছে বাঙালিদেরও। আর সূর্যদেবতার এই পুজোয় দেবতার উদ্দেশ্যে ডালা সাজিয়ে অর্ঘ্য দেওয়ার জন্য বুধবার ফলের দর চড়ল বাজারে। পুরুলিয়া শহর থেকে আদ্রা, বিহারী অধ্যুষিত নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া সব জায়গাতেই ফলের বাজার তবু জমজমাট।

যে জলাশয়গুলিতে বুধবার বিকেলে ও বৃহস্পতিবার ভোরে সূর্যের উদ্দেশ্যে অর্ঘ দেন ভক্তরা সেই জলাশয়গুলিতে ঘাট পরিষ্কার করে আলোকসজ্জায় সাজিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আদ্রার আড়রা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তুফান রাই বলেন, “আদ্রার স্বর্গদুয়ার সরোবর, আমতালাও, রামসায়রের মতো জলাশয়গুলিতে প্রচুর সংখ্যায় ভক্তদের সমাগম হয়। তাই পঞ্চায়েতের তরফে আমরা আগেই ওই জলাশয়গুলির ঘাট সংস্কার করেছি। আলোকসজ্জার ব্যবস্থাও করেছি।”

উপবাস করে থাকার পরে ছটের পুজো দেন মূলত মহিলারাই। বুধবার সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সময়ে পুকুর বা নদীতে নেমে ডালা সাজিয়ে সূর্যের উদ্দেশ্যে অর্ঘ দেওয়ার প্রথা।.এই সময়ের অর্ঘকে বলা হয় প্রথম অর্ঘ্য। সেই ডালা নিয়ে বাড়িতে এসে শুদ্ধভাবে রাতভর রেখে পরেরদিন ভোরে সূর্য ওঠার সময়ে সেই ডালা নিয়ে অর্ঘ্য দেওয়া হয়। এই অর্ঘ্যকে বলা হয় দ্বিতীয় অর্ঘ্য। মূলত বিভিন্ন প্রকার ফল ও পুজোর সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয় এই ডালা। তাই ফলের চাহিদা তুঙ্গে থাকে।

আদ্রা বাজারে বুধবার সকালে কেজি প্রতি আপেলের দর ছিল ৮০ টাকা, বাতাবিলেবু ৬০ টাকা, মৌসাম্বি ৮০ টাকা, পানিফল ৫০ টাকা। ডাব প্রতিটি ৪০ টাকা, কলা কাঁদির দাম ছিল ২০০ টাকা,.একটি আখের দাম ছিল ২০ টাকা। পুজোর উপকরণ হিসাবে কাঁচা হলুদ দেওয়া হয়।.গাছ সমেত হলুদের দাম ছিল ১০০ টাকা। একমাসের মধ্যেই দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে দীপাবলি এবং ছট উত্‌সব হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই পুজোর বাজারে বেরিয়ে ফলের চড়া দামে হাত পুড়েছে ক্রেতাদের।

আদ্রার বধূ রাগিনী মোদি, সুনয়না সিংহ বা পারবেলিয়ার কৃষ্ণ গিরির কথায়, “একমাসের মধ্যেই টানা তিনটি পুজো। স্বাভাবিক ভাবেই পুজোতে খরচ ভালোই হয়েছে। তাই কমদামেই কেনার চেষ্টা করছি। কিন্তু দোকানদাররা তো দাম কমাতেই চাইছেন না।” আদ্রা স্টেশন থেকে শুরু করে শনি মন্দির পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে টানা ফলের দোকান বসেছে ছট উপলক্ষে। পারবেলিয়ার বাজারেও দেখা গিয়েছে উপচে পড়া ভিড়। একই ছবি পুরুলিয়া সদরের বাজারেও। পুরুলিয়ার বাসিন্দা বিন্দু সাউ, কিরণ খেড়িয়া বলেন, “জিসপত্রের দাম তো খুব বেড়ে গিয়েছে। তবে যাই হোক প্রতি বছরের মতোই এ বারেও সাহেববাঁধে পুজোর অর্ঘ্য দেব আমরা। ভালো লাগছে পুজো উপলক্ষে পুরসভা বাঁধের ঘাটগুলি পরিষ্কার করেছে বলে।”

এ বার ছটে পুরুলিয়ার বাজারে ভালোই বিক্রিবাটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরুলিয়া শহরের ফল বিক্রেতারা। তাঁদের মধ্যে শেখ আকবর, শেখ আকতার থেকে পুজোর সামগ্রী বিক্রির পাইকারি ব্যবসায়ী পুরুলিয়া শহরের ফাল্গুনী সেন জানান, গত কয়েক বছর ধরেই ছটের বাজার বেশ ভালো যাচ্ছে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পুরুলিয়াতে ছট উত্‌সব যে ধীরে ধীরে বাড়ছে তার প্রমাণ মিলছে কয়েক বছরের মধ্যেই পুরুলিয়া শহর ও পারবেলিয়াতে দু’টি সূর্যমন্দিরের প্রতিষ্ঠা হওয়ার ঘটনাতেই। ওই মন্দিরগুলিতেও প্রচুর জনসমাগম হয়েছিল।

বুধবার ছবিগুলি তুলেছেন প্রদীপ মাহাতো, শুভ্র মিত্র, সুজিত মাহাতো ও অভিজিত্‌ সিংহ।

chat puja purulia bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy