Advertisement
১৮ মে ২০২৪

দরজা ভেঙে মিলল দম্পতির দেহ

স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলেন সোমবার। আর মঙ্গলবার বন্ধ ঘর থেকে মিলল স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন পবিত্র বাউরি (২২) ও মঙ্গলা ওরফে পিঙ্কি বাউরি (১৯)। মঙ্গলবার সকালে রঘুনাথপুর থানার কদমডাঙ্গা গ্রামে, পবিত্রর মেসোর বাড়িতে ওই দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৪ ০১:৪০
Share: Save:

স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলেন সোমবার। আর মঙ্গলবার বন্ধ ঘর থেকে মিলল স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন পবিত্র বাউরি (২২) ও মঙ্গলা ওরফে পিঙ্কি বাউরি (১৯)। মঙ্গলবার সকালে রঘুনাথপুর থানার কদমডাঙ্গা গ্রামে, পবিত্রর মেসোর বাড়িতে ওই দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। গ্রামে গিয়ে বিডিও (রঘুনাথপুর ১) সুনীতিকুমার গুছাইত দেহ দু’টির সুরতহাল করেন। বিডিও বলেন, “ওই ঘরেই একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। তাতে ওই দম্পতি তাঁদের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দু’জনেরই বাড়ি বাঁকুড়ার শালতোড়া থানা এলাকায়। পেশায় দিনমজুর পবিত্র মুকুটবনি গ্রামের বাসিন্দা। আর মঙ্গলা ঝনকা গ্রামের। মাত্র তিন মাস আগে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু, বিয়ের দু’মাসের মধ্যেই ছাড়াছাড়ি হয়। মঙ্গলা ফিরে যান বাপের বাড়িতে। তবে, স্ত্রীর সঙ্গে আবার যোগাযোগ করেন পবিত্র। সেই মতো সোমবার সকালেই দু’জনে শালতোড়া থেকে কদমডাঙ্গায় পবিত্রর মেসো হারু বাউরির বাড়িতে আসেন। আর ওই রাতেই আত্মহত্যা করেন স্বামী-স্ত্রী। ঘরের কড়িকাঠে একটি শাড়িরই দুই প্রান্তে দু’টি ফাঁসে মুখোমুখি অবস্থায় ঝুলছিল দেহ দু’টি।

কেন এই আত্মহত্যা, সে বিষয়ে অন্ধকারে পবিত্র ও মঙ্গলার বাবা। এ দিন সকালে ঘটনার খবর পেয়ে কদমডাঙ্গায় এসেছিলেন পবিত্রর বাবা দিবাকর বাউরি ও মঙ্গলার বাবা লালচাঁদবাবু। চোখের সামনে ছেলেমেয়ের দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন দু’জনেই। লালমোহনবাবু বলেন, “বিয়ের দু’মাস পরেই শ্বশুরবাড়ি থেকে আমার কাছে ফিরে এসেছিল মেয়ে। বলেছিল, ওখানে থাকতে সমস্যা হচ্ছে। নতুন জায়গায় প্রথম দিকে মানিয়ে নিতে পারছে না, পরে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে ভেবেই ওকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যেতে জোর করিনি। কিন্তু, এমন কাণ্ড ঘটাবে, ভাবতে পারিনি!” দিবাকরবাবু জানান, মঙ্গলা বাপের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলার পরে তিনি আপত্তি করেননি এই ভেবে যে, কিছুদিন পরেই বৌমা ফিরে আসবে। তাঁর কথায়, “সোমবার ছেলে বলেছিল কদমডাঙ্গায় যাচ্ছে। কিন্তু, বৌমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা একবারও বলেনি।”

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় হারুবাবু তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে পাশের গ্রামে হরিনাম সংকীর্তন শুনতে গিয়ছিলেন। বাড়িতে ছিলেন পবিত্র-মঙ্গলা। ভোরে বাড়িতে ফিরে তাঁদের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান হারুবাবু। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, সোমবার দিনভর ওই দম্পতির আচরণে কোনও অস্বাভাবিকত্ব দেখেননি। তবে, সুইসাইড নোটে বেশ কিছু কথা লিখেছেন ওই দম্পতি। বিডিও বলেন, “সুইসাইড নোট পড়ে মনে হয়েছে, দাম্পত্য ঘিরে অশান্তির জেরে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়া-সহ আরও কিছু কারণে স্বামী-স্ত্রী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সম্ভবত সেই কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা।” রঘুনাথপুরের এসডপিও পিনাকী দত্ত বলেন, “এই ঘটনার পিছনে অন্য কিছু কারণ আছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” আজ, বুধবার দেহ দু’টি ময়না তদন্তের জন্য পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে পাঠাবে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pabitra bauri pinki bauri raghunathpur kadamdanga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE