সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ সুপার। —নিজস্ব চিত্র।
ধাওয়া করে পাঁচ আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করল রঘুনাথপুর থানার পুলিশ। অভিযানে গিয়ে জখম হলেন এক কনস্টেবল। বিমান পান্ডে নামের ওই পুলিশকর্মীর হাত ভেঙেছে। তিনি বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।
রবিবার গভীর রাত থেকে অভিযান শুরু করে সোমবার সকালের দিকে ওই পাঁচ দুষ্কৃতীকে বমাল ধরতে সমর্থ হয় পুলিশ। এ দিন বিকেলে রঘুনাথপুরে এসডপিও-র অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “ধৃতেরা আন্তঃরাজ্য দুস্কৃতী,তাদের বাড়ি জামশেদপুরে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কেজি তামার তার, তার কাটার যন্ত্র এবং কিছু অস্ত্র। আটক করা হয়েছে একটি গাড়ি। ওই দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতেরা হল হাবিব আনসারি, মহম্মদ ইজারায়েল, শেখ মহম্মদ ইকবাল, মহম্মদ হায়দার ও পারভেজ আলম। এদের মধ্যে হাবিব দলটির পান্ডা। এই চক্র মূলত মোবাইল টাওয়ারের অপিটক্যাল কেব্ল চুরি করে।
রবিবার রাত আড়াইটে নাগাদ পুলিশের কাছে খবর আসে, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের পাশে রঘুনাথপুরের ঝাড়ুখামার মোড়ের কাছে একটি বেসরকারি মোবাইল পরিষেবা সংস্থার টাওয়ারের নিরাপত্তা রক্ষীকে বেঁধে অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল (তার) লুঠ করছে দুষ্কৃৃতীরা। তবে, অন্য একটি সূত্রের খবর, ওই বেসরকাররি সংস্থার তরফেই পুলিশকে ঘটনার কথা জানানো হয়েছিল। ঝাড়ুখামারের টাওয়ার থেকে সিগন্যাল ক্রমশ কমে আসছে, সংস্থার সার্ভারের নজরদারিতে বিষয়টি ধরা পড়ার পরেই কেব্ল কাটা হচ্ছে আশঙ্কা করে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। ফাঁকা এলাকায় থাকা এই ধরনের টাওয়ারগুলির ওই কেবলের মধ্যে থাকে দামি তামার তার। এই তামার জন্যই রঘুনাথপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় কেব্ল চুরির ঘটনা ক্রমে বাড়ছে।
রবিবার রাতে খবর পেয়েই রঘুনাথপুরের ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল থানা থেকে ঝাড়ুখামারের দিকে রওনা দেয়। অন্য দিক থেকে ঝাড়ুখামারে আসতে বলা হয় রাতে পুলিশের টহলদারি গাড়িকে। দুই দিক থেকে দুষ্কৃতীদের ঘিরে ধরলেও ঘটনাস্থলে দু’জনকে ধরতে সমর্থ হয় পুলিশ। তখনই পড়ে গিয়ে এক কনস্টেবলের হাত ভাঙে। সঙ্গে থাকা গাড়ি নিয়ে বাকি তিন দুষ্কৃতী তখনকার মতো পালালেও সোমবার ভোররাতে ফের ঝাড়ুখামারের দিক ফিরে আসছিল তারা। অভিযানে থাকা এক পুলিশকর্মীর কথায়, “গাড়িটাকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় সেটাকে থামানোর চেষ্টা করলেও গতি বাড়িয়ে চলে যায়। গাড়িটিকে কয়েক ঘণ্টা ধাওয়া করি আমরা। মুলডি গ্রামের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ওদের গাড়ি। তবে কেউ আহত হয়নি।”
পুলিশ সুপারের দাবি, জেরার মুখে চক্রের পান্ডা হাবিব কবুল করেছে, সে আগে ওড়িশায় মোবাইলের টাওয়ার থেকে তার লুঠ করেছে। সম্প্রতি আসানসোলে আত্মীয়ের বাড়ি আসার পথে রঘুনাথপুরের ঝাড়ুখামার মোড়ের কাছের ওই টাওয়ার থেকে তার লুঠের পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশ সুপার বলেন “ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার রাস্তা পুলিশ আটকে দিয়েছিল। পুলিশ ধাওয়া করার সময় দুষ্কৃতীদের গাড়ি রাস্তা আটকানোর ব্যারিকেড পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে উল্টে যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy