Advertisement
E-Paper

নৈরাজ্য রুখতে পঞ্চদুর্গার আরাধনা

পুরাকালে স্বর্গরাজ্য উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার আবাহন করেছিলেন দেবতারা। অসুরকুলকে বিনাশ করতে দেবীকে নিতে হয়েছিল বিভিন্ন রূপ। আর বর্তমান সমাজে বাসা বেধে থাকা নৈরাজ্য দূর করতে পঞ্চদুর্গা পুজোর আয়োজন করেছে লাভপুরের ষষ্ঠীনগর ইয়ং সোসাইটি। অভিনব থিমের ওই পুজো ঘিরে তাই সাড়া পড়ে গিয়েছে এবার।

অর্ঘ্য ঘোষ

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৩৩
ষষ্ঠীনগর ইয়ং সোসাইটির প্রতিমা।  ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

ষষ্ঠীনগর ইয়ং সোসাইটির প্রতিমা। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

পুরাকালে স্বর্গরাজ্য উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার আবাহন করেছিলেন দেবতারা। অসুরকুলকে বিনাশ করতে দেবীকে নিতে হয়েছিল বিভিন্ন রূপ। আর বর্তমান সমাজে বাসা বেধে থাকা নৈরাজ্য দূর করতে পঞ্চদুর্গা পুজোর আয়োজন করেছে লাভপুরের ষষ্ঠীনগর ইয়ং সোসাইটি। অভিনব থিমের ওই পুজো ঘিরে তাই সাড়া পড়ে গিয়েছে এবার। নিত্য নতুন থিমের পুজো করাই এই কমিটির রীতি। এর আগে বর্ণপরিচয়, সিপাহি বিদ্রোহের থিম করে এলাকায় নজর কেড়েছিল তারা। এ বার তাদের থিম পঞ্চদুর্গা। কার্তিক-গণেশ, সরস্বতী-লক্ষ্মী সহ মহিষাসুরমর্দ্দিনী দুর্গার সঙ্গে রয়েছে আরও ৪ দুর্গা। মূল দুর্গার বাঁ পাশে ১০ হাতের চন্দ্রঘণ্টা এবং সিদ্ধিদাত্রী মুর্তি। ডান দিকে ৮ হাত বিশিষ্ট কুষ্মাণ্ডা এবং ২ হাত বিশিষ্ট শৈলপুত্রী। চন্দ্রঘণ্টা এবং কুষ্মাণ্ডার বাহন চিতাবাঘ। সিদ্ধিদাত্রী পদ্মাসনা, শৈলপুত্রীর বাহন ষাঁড়। চন্দ্রঘণ্টার হাতে অন্যান্য অস্ত্রের সঙ্গে বিশেষত্ব হিসাবে একহাতে রয়েছে কমুণ্ডল। কুষ্মাণ্ডর এক হাতে কলস, অন্য হাতে রুদ্রাক্ষ। সিদ্ধিদাত্রীর ৪ হাতে শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম। শৈলপুত্রীর হাতে ত্রিশুল এবং পদ্ম।

এই পুজো নিয়েই এলাকার মানুষের কৌতুহলের অন্ত নেই। স্থানীয় শাহআলমপুরের পীযূস মণ্ডল, গোপীনাথপুরের উজ্জ্বল মণ্ডলরা বলেন, “ইয়াং সোসাইটির বৈশিষ্টই হল নিত্য নতুন থিম। তাই আমাদের প্রতি বছর ওই মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে যাই।” কি বলছেন কর্মকর্তারা? সম্পাদক চঞ্চল রায়, সভাপতি লক্ষ্মন সাও বলেন, “অসুরকুলকে বিনাশ করতে মাকে বিভিন্ন রূপে অবতীর্ন হতে হয়েছিল। বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্র থেকে সারদা, সর্বত্রই অসুররাজ কায়েম হয়েছে। মা এককরূপে তাদের সংহার করতে পারবেন না। এজন্যই তাকে ৫টি রূপে আরাধনার আয়োজন করা হয়েছে।” উল্লাস কর, মিহির ঘোষরা বলেন, “যুগে যুগে দুষ্টের দমনে দেবতারা বিভিন্ন রূপে অবতীর্ন হয়েছেন। আমরা মনে করি পঞ্চরূপে অবতীর্ন হয়ে মা’ও বর্তমান অসুরদের নিধন করবেন।”

কচিকাঁচারা অবশ্য অত বিশ্লেষণ নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়। পঞ্চম শ্রেণির পৌলমী ঘোষ, অরিত্র আচার্যদের কথায়, “স্কুলের বন্ধুদের কাছে আমাদের ‘প্রেস্টিজ’ বেড়ে যাবে। স্কুল খোলার পর সবাই ১টা ঠাকুরের গল্প শোনাবে। আমরা ৫টা ঠাকুরের গল্প শুনিয়ে সবাইকে টেক্কা দিয়ে দেব।” একই অভিব্যক্তি এলাকার গৃহবধূ চন্দ্রা রায়, মহুয়া চট্টোপাধ্যায়দের। “পুজোর আগেই আত্মীয় - স্বজনদের পঞ্চদুর্গার কথা জানিয়েছিলাম, অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ আসবেনও।” তাঁদের সংযোজন, “মায়ের কাছে নারী লোলুপ অসুরদের মোকাবিলার শক্তি চাইব। মা যদি পারেন, তাহলে তারই সন্তান হয়ে আমরাই বা কেন দু’একটা অসুরকে জব্দ করতে পারব না।” ষষ্ঠীনগর ইয়ং সোসাইটির ব্যাখ্যা যাই হোক, যে এলাকায় মোড়লের নির্দেশে গণধর্ষিত হতে হয় আদিবাসী মহিলাকে, সে এলাকার মহিলাদের মুখে এ উচ্চারণই বা কম কিসে!

labhpur arghya ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy