Advertisement
E-Paper

ফোন-বন্ধুর সঙ্গে মুম্বই গিয়ে ভুল ভাঙল বধূর

ফোনে কথা বলে প্রেমের ফাঁদে পড়েছিলেন ওন্দার এক বধূ। প্রেমিকের হাত ধরে বছর পাঁচেকের মেয়েকে নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বই। কিন্তু ক্ষণিকেই প্রেম ভাঙল সেখানেই। শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে কোনওক্রমে মেয়েকে নিয়ে তিনি বাঁকুড়ায় ফিরলেন। রবিবার মুম্বই থেকে ওই বধূকে ওন্দায় ফিরিয়ে আনা হয়। পুলিশ ও ওই বধূর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মাস ধরে মুম্বইয়ের একটি ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হত ওই বধূর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০১:৩৪

ফোনে কথা বলে প্রেমের ফাঁদে পড়েছিলেন ওন্দার এক বধূ। প্রেমিকের হাত ধরে বছর পাঁচেকের মেয়েকে নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বই। কিন্তু ক্ষণিকেই প্রেম ভাঙল সেখানেই। শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে কোনওক্রমে মেয়েকে নিয়ে তিনি বাঁকুড়ায় ফিরলেন।

রবিবার মুম্বই থেকে ওই বধূকে ওন্দায় ফিরিয়ে আনা হয়। পুলিশ ও ওই বধূর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মাস ধরে মুম্বইয়ের একটি ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হত ওই বধূর। গত ২৩ জানুয়ারি নিজের মেয়েকে নিয়ে হঠাৎই তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে যান। দুই পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েন। শেষে ২৯ জানুয়ারি ফোন আসে ওই বধূর। তিনি ভাইকে ফোনে জানান, মুম্বইয়ের তুর্বে এমআইডিসি থানায় তিনি রয়েছেন। তিনি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাইকে জানান। খবর পেয়ে ওই বধূকে ফিরিয়ে আনতে নড়েচড়ে বসে ওন্দা থানার পুলিশ। যোগাযোগ করা হয় তুর্বে এমআইডিসি থানার সঙ্গে। ওই বধূকে আনতে ওন্দা থেকে একটি দল যায় মুম্বই। ততদিন মুম্বইয়ের একটি হোমে ওই বধূ ও তাঁর মেয়েকে রাখা হয়।

বধূটিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওন্দার থানা এলাকার ওই বধূকে ‘ভুলবশত’ মুম্বইয়ের রাজা নামের এক যুবক ফোন করেছিলেন। তারপর ওদের মধ্যে ফোনের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। পুলিশের দাবি, বধূটি তাদের জানিয়েছেন, রাজা রাজমিস্ত্রির কাজ করে। সে বধূটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে তার আগে বধূটিকে নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করাতে চায় বলে ওই যুবক জানিয়েছিল। তারপরেই বিয়ের ব্যাপার চূড়ান্ত করার কথা ছিল। রাজা মুম্বই থেকে ওদের নিতে ওন্দায় আসে। ওর সঙ্গেই মেয়েকে নিয়ে ঘর ছাড়েন ওই বধূ।

কিন্তু মুম্বইয়ে পৌঁছনোর পরেই তাঁর ভুল ভাঙে। ওই বধূর দাবি, মুম্বইয়ে একটি ঘরে তাঁকে আটকে রেখেছিল রাজা। কেন তাঁদের এ ভাবে বন্দি করে রাখা হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে রাজা তাঁকে স্পষ্ট ভাবে কিছু বলত না। এমনকী তার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করায়নি। কবে তাদের সঙ্গে দেখা করাবে বধূটি তা জানতে চাইলেও রাজা স্পষ্ট ভাবে কিছু জানাত না। রাজা কাজে বের হওয়ার সময় দরজা বাইরে থেকে তালা মেরে যেত। সারা দিন মেয়েকে নিয়ে ওই বন্ধ ঘরের ভিতরে কার্যত বন্দি হয়ে থাকতেন ওই বধূ।

একদিন বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করতে ভুলে যায় রাজা। সেই ফাঁকেই মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বধূটি। লোকজনের কাছে খোঁজ করে তিনি তুর্বে এমআইডিসি থানায় গিয়ে হাজির হন। সেখান থেকে তিনি ফোনে ভাইকে পুরো ঘটনাটি জানান। কিছু দিন পরে ওন্দা থানার পুলিশের একটি দল গিয়ে ট্রানজিট রিমান্ডে ওই বধূ ও তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। যদিও রাজার কোনও হদিস করতে পারেনি পুলিশ। বধূটিকে বাঁকুড়া থানায় রাখা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে আরও তথ্য আদায়ের চেষ্টা করছে পুলিশ। ওই মহিলা এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত অবশ্য ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আজ সোমবার, ওই বধূকে বাঁকুড়া আদালতে পেশ করার কথা।

জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “একটা বিশ্বাসের উপর ভর করেই ওই বধূ গিয়েছিলেন। কিন্তু ওখানে গিয়ে তাঁকে অন্যরকম পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। তাই তিনি পুলিশের কাছে যান। তবে ঠিক কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তদন্ত চলছে।”

উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে একই ভাবে ফোনে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বাঁকুড়া জেলারই কোতুলপুর থানা এলাকার এক বধূ। ছেলের ওষুধ কিনতে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান তিনি। ওই প্রেমিক তাঁকে ভিন্ রাজ্যে অর্থের বিনিময়ে পাচার করেছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করতে গিয়ে একটি নম্বরে একাধিক বার ফোন হয়েছে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। সেই নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ ওই চক্রের হদিস পায়। পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাচারকারীদের একটি দলকে গ্রেফতারও করে। ওন্দার বধূটিকেও কি পাচারের উদ্দেশ্যেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল?

জেলা পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “ঘটনার পিছনে কোনও পাচারচক্র জড়িত আছে কি না তা এখনই বলা যাবে না। কারণ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় একজন ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাকে ধরাও যায়নি। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

phone friend mumbai bankura onda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy