ভাঙচুরের পরে। বাঁকুড়ার খাতড়ায়। ছবি: দেবব্রত দাস।
বিষ্ণুপুরের পরে খাতড়া। বাঁকুড়ায় ফের আক্রান্ত বিজেপি। অভিযোগের তির আবারও তৃণমূলের দিকে।
রবিবার বিকেলে বিষ্ণুপুর থানার উলিয়াড়া অঞ্চলের গুমুট গ্রামে বিজেপি-র সাংগঠনিক সভা ছিল। ওই সভায় যাওয়ার পথে তিন বিজেপি কর্মীকে তৃণমূলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। আর সোমবার সকালে খাতড়া শহরে বিজেপি-র মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে।
বিজেপি-র অভিযোগ, তৃণমূলের জেলা নেতা তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল সরকারের নেতৃত্বেই এই হামলা হয়। তাতে বিজেপি-র জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দাস-সহ অন্তত ২০ জন দলীয় কর্মী জখম হন। আহতদের খাতড়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। পরে অভিজিৎবাবু-সহ দু’জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। উত্তেজনা থাকায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। দু’দলের তরফেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ কাউকে ধরেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন খাতড়া ব্লক অফিসে কয়েক দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল বিজেপি-র। একই সঙ্গে খাতড়ার দাসের মোড়ে একটি সভার জন্য দলের তরফে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। ওই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এ দিন সকাল থেকেই আশপাশের অনেক গ্রাম থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ভিড় করেছিলেন। সাড়ে ৯টা নাগাদ খাতড়ার রাজাপাড়া দুর্গামন্দির থেকে অভিজিৎবাবুর নেতৃত্বে মিছিল শুরু করেন কয়েকশো বিজেপি কর্মী।
এ দিনই খাতড়ায় রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতে মিছিল ও পথসভার আয়োজন করেছিল তৃণমূলও। খাতড়ার সিআই অফিসের সামনে জেলা তৃণমূল নেতা শ্যামল সরকারের নেতৃত্বে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হন। বিজেপি-র অভিযোগ, সকাল ১০টা নাগাদ সিআই অফিসের সামনে তাদের মিছিল পৌঁছতেই তৃণমূলের লোকেরা লাঠি, বাঁশ হাতে হামলা চায়। অভিজিৎ দাস-সহ কয়েক জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারের হাত থেকে অভিজিৎবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে মার খান আরও অনেকে। এর পর দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। কিন্তু, তৃণমূলের কর্মীরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় বেশিক্ষণ যুঝতে পারেনি বিজেপি। মুহূর্তের মধ্যে বিজেপি-র মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে এসডিপিও (খাতড়া) খাতড়ার এসডিপিও কল্যাণ সিংহরায় বড় পুলিশ বিশালবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ইতিমধ্যে তাঁদের উপরে হামলা হয়েছে অভিযোগ তুলে দাসের মোড়ে পথসভা করে তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। ওই সভা চলাকালীন বিজেপি-র সভামঞ্চে ফের একদল তৃণমূল কর্মী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মঞ্চ তো বটেই, মঞ্চের সামনের সাউন্ডবক্স, মাইক, চেয়ার, টেবিল ভেঙে দেওয়া হয়। বিজেপি নেতা অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, “পুলিশের অনুমতি নিয়েই খাতড়া শহরে মিছিল করা হচ্ছিল। সেই সময় শ্যামল সরকারের নেতৃত্বে তৃণমূল অতর্কিতে হামলা চালায়। আমার একটা চোখে আঘাত লেগেছে, এক কর্মীর হাত ভেঙেছে॥
তৃণমূল নেতা শ্যামলবাবু অবশ্য দাবি করেন, “আমরা কাউকে মারিনি। বিজেপি-র লোকেরাই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালায়। তাতে আমাদের কয়েক জন কর্মী জখম হয়েছেন।” এসডিপিও বলেন, “দু’দলের মধ্যে মারপিট হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy