Advertisement
E-Paper

বিজেপি সমর্থককে ধান ঝাড়তে বাধা দেওয়ায় ইন্দাসে অভিযুক্ত তৃণমূল

রাজ্যে বিরোধী থাকাকালীন শাসকদল সিপিএমের বিরুদ্ধে আগে তৃণমূল হামেশাই যে অভিযোগ তুলত, এ বার শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধেই সেই অভিযোগ তুলল বিজেপি। ইন্দাসের বাথানিয়া গ্রামে এক বিজেপি সমর্থককে তাঁর জমির ধান ঝাড়তে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মৈনুদ্দিন কাজী নামে ওই বিজেপি সমর্থক সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৪ ০১:০৩

রাজ্যে বিরোধী থাকাকালীন শাসকদল সিপিএমের বিরুদ্ধে আগে তৃণমূল হামেশাই যে অভিযোগ তুলত, এ বার শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধেই সেই অভিযোগ তুলল বিজেপি। ইন্দাসের বাথানিয়া গ্রামে এক বিজেপি সমর্থককে তাঁর জমির ধান ঝাড়তে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

মৈনুদ্দিন কাজী নামে ওই বিজেপি সমর্থক সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তারপরেও খামারে রাখা ধান স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বাধায় তিনি ঝাড়তে পারেননি বলে অভিযোগ। তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রচারের স্বার্থেই বিজেপি এই মিথ্যা অভিযোগ করছে।

ইন্দাসের বিডিও পুষ্পেন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্থানীয় কয়েকজন জমির ধান ঝাড়তে বাধা দিচ্ছেন বলে মৈনুদ্দিন কাজী গত শুক্রবার অভিযোগ করেছিলেন। বিষয়টি তিনি পুলিশকে দেখার জন্য বলেছিলেন। বিডিও-র দাবি, “পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তি ধান ঝাড়েননি বলে খবর পেয়েছি।”

শাসপুর পঞ্চায়েতের বাথানিয়া গ্রামের মৈনুদ্দিনের নিজস্ব জমি দেড় বিঘা। মা, স্ত্রী, চার মেয়ে ও তিন ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার। জমির আয় থেকে সংসার চলে না, তাই পরের জমিতে খেতমজুরের কাজ করতে হয় তাঁকে। মৈনুদ্দিন জানিয়েছেন, এ বার নিজের জমির সঙ্গে গ্রামের কয়েকজনের প্রায় সাত বিঘা জমি ভাগে নিয়ে তিনি বোরো ধান চাষ করেছিলেন। আগে তিনি সিপিএম করলেও লোকসভা ভোটের পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আমাকে ক্রমাগত শাসানি দিচ্ছিল তৃণমূল কর্মী-সহ কয়েকজন। প্রথমে তারা আমাকে জমির ধান কাটতে বাধা দিয়েছিল। কোনওরকমে ধান কেটে বাড়ির পাশে খামারে মজুত করে রাখি। এতে ওদের রাগ বেড়ে যায়। এখন তারা ধান ঝাড়তে গেলে বাধা দিচ্ছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোনওরকমে বিঘা দেড়েক জমির ধান ঝাড়তে পারলেও বাকি ধান ঝাড়তে পারিনি।”

তাঁর আক্ষেপ, দীর্ঘদিন ধরে ধান খামারে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লোকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে তিনি চাষ করেছিলেন। ধান তুলতে না পারলে তাঁর পক্ষে ঋণশোধ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বিজেপি-র বিষ্ণুপুর মহকুমার সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক শিবদাস ঘোষের অভিযোগ, “মৈনুদ্দিন কাজী আমাদের দলের সমর্থক হওয়ার অপরাধেই তৃণমূলের লোকেরা তাঁকে প্রথমে ধান কাটতে বাধা দিয়েছে, এখন ধান ঝাড়তে বাধা দিচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। বর্তমানে চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁর পরিবার।”

অভিযোগ মানতে চাননি স্থানীয় তৃণমূল কর্মী শেখ সাবেদ আলি, শেখ কালোবাবু, শেখ সিরাজ, আবুসাদ মল্লিক, সাদ্দাম মল্লিকেরা। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, “লোকসভা ভোটের আগে এলাকায় সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতী দলে ছিলেন মৈনুদ্দিন। অনেকের উপরে জোর জুলুম করেছেন তিনি। জমির একাংশের ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি নিজেই প্রথমে কাটতে চাননি। পরে কাটেন। কিন্তু ঝাড়াইয়ের পরে ধান পাওয়া যাবে না বুঝে এখন গড়িমসি করেছেন। বিজেপিতে নাম লিখিয়ে উল্টে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তাঁকে ধান ঝাড়তে কেউ বাধা দেয়নি।”

ইন্দাস থানার পুলিশের দাবি, অভিযোগ পেয়েই ওই গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবারও পুলিশ বাহিনী গিয়ে মৈনুদ্দিনকে ধান ঝাড়তে বলেছিল, তারপরেও তিনি ধান ঝাড়েননি। ইন্দাস ব্লক তৃণমূল নেতা রবিউল হোসেনের বক্তব্য, “আমাদের কর্মী সমর্থকদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করে এলাকায় নতুন করে অশান্তি তৈরি করতে চাইছেন ওই ব্যক্তি।”

bjp supporter tmc indus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy